শীতে বাড়তে পারে একজিমা

প্রতীকী ছবি

একজিমা একধরনের চর্ম রোগ, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস বলে। একজিমার প্রধান কারণ বংশগত। তবে এটি সংক্রামক রোগ নয়। এ রোগে আক্রান্তদের এলার্জিজনিত রোগ যেমন হাঁপানি বা হে ফিভার হতে পারে।

 একজিমা বোঝার উপায়

এই রোগে ত্বকের কোনো কোনো স্থানে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। আক্রান্ত স্থান লালচে হয়। পুঁজবটি জন্মে, চুলকায়, রস ক্ষরণ হয় এবং মামড়ি পড়ে। এটি দীর্ঘসময় ধরে থাকলে অতি শুষ্ক ত্বক ফেটে যায়, পুরু হয়ে ওঠে, চুলকানি হয় এবং ফুসকুড়ি হতে পারে।

দীর্ঘমেয়দি চিকিৎসা নিলে একজিমা পুরোপুরি সেরে যায়। তাই, আক্রান্ত রোগী স্বাভাবিক জীবনযাপন ও রোগ প্রতিকারে নিয়মিত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

কেন হয় একজিমা

রাসায়নিক দ্রব্য, ডিটারজেন্ট, সাবান অথবা শ্যাম্পুর সংস্পর্শে একজিমা হতে পারে। অ্যালার্জি হয় এমন বস্তু যেমন—পরাগ রেণু, ঘরবাড়ির ধুলা, পশুপাখির পশম, উল ইত্যাদি থেকে, হরমোনজনিত ভারসাম্যহীনতা বিশেষ করে মাসিকের সময় ও গর্ভাবস্থায় একজিমা বাড়ে। অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা ও স্যাঁতসেঁতে ভেজা আবহাওয়ায় একজিমা হতে পারে।

একজিমা কয়েক ধরনের হয়—

অ্যাটোপিক একজিমা: শরীরের যেসব স্থানে ভাঁজ পড়ে যেমন-হাঁটুর পেছনে, কুনইয়ের সামনে, বুকে, মুখে এবং ঘাড়ে অ্যাটোপিক একজিমা হয়।

অ্যালার্জিক কনট্যাক্ট একজিমা: এ ধরনের একজিমা কোনো পদার্থ বা বস্তু থেকে দেখা দেয়। শুরুতে শরীরের যে অংশে অ্যালার্জি হয়, সেখানে লালচে দানা দেখা যায়। ধীরে ধীরে এটা শরীরের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পরে।

ইরিট্যান্ট কনট্যাক্ট একজিমা: এটা অ্যালার্জিক একজিমার মতোই এবং সাধারণত সাবান বা ডিটারজেন্ট বেশি ব্যবহারের কারণে এই একজিমা দেখা দেয়।

কারা ঝুঁকিতে

শিশুর বয়স যখন পাঁচ বছরের মধ্যে থাকে, তখন সাধারণত একজিমা দেখা দেয়। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এই হার খুবই কম।

চিকিৎসা কি

দীর্ঘমেয়দি চিকিৎসা নিলে একজিমা পুরোপুরি সেরে যায়। তাই, আক্রান্ত রোগী স্বাভাবিক জীবনযাপন ও রোগ প্রতিকারে নিয়মিত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। একজিমা প্রতিরোধের উপায়ের মধ্যে আছে—

  • ক্ষারযুক্ত সাবান, ডিটারজেন্ট, গ্যাসোলিন থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকুন।

  • সিনথেটিক ও উলের কাপড় এড়িয়ে চলা ।

  • কুসুমগরম পানি দিয়ে সারা বছরই গোসল করা ভালো।

  • গোসলের পরপরই শরীর ভেজা থাকা অবস্থায় ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করা।

  • সব সময় নরম সুতির জামাকাপড় পরা। পোশাক নিয়মিত পরিষ্কার করা। খসখসে, অমসৃণ টাইট ফিটিং পোশাক এড়িয়ে চলা।

  • সব সময়ে হাতের নখ যেন ছোট করে কাটা থাকে। হাতে নখ ছোট থাকলে সংক্রমণের ভয় কমবে।

  • নারকেল তেল, অ্যালোভেরা জেল অথবা অ্যাপল সাইডার ভিনেগার ব্যবহারেও উপকার হয়। এগুলো সারা ত্বকে, বিশেষ করে আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করা যেতে পারে।

  • মানসিক উদ্বেগ একজিমা বাড়ায়। তাই স্ট্রেস কমান।

  • ডা. জাহেদ পারভেজ, সহযোগী অধ্যাপক, চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগ, শহীদ সোহরোয়ার্দি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল