সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর যে ৭টি কাজ করবেন না
সকালে ঘুম থেকে উঠেই কী করেন? অনেকেই বলবেন, ঘড়ির অ্যালার্ম অফ করি। তারপর? ঘুম থেকে উঠেই যদি মুঠোফোনে চোখ রাখেন, তাহলে শুনে রাখুন, এতে নিজের বড় ক্ষতি ডেকে আনছেন! অনেকে আবার অ্যালার্ম অফ করে বিছানায় আরেকটু গড়িয়ে নেন। এটাও বদভ্যাস। এমন আরও কিছু কাজ আছে, যেসব সকালে ঘুম থেকে উঠেই করা উচিত নয়।
১. সূর্যের আলো গায়ে না মাখা
সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেকে বেশ খানিকটা সময় অন্ধকারে থাকেন। তাঁরা হয়তো ভাবেন, হুট করে সূর্যের আলো চোখে পড়লে তা খারাপ। কিন্তু ঘুম থেকে ওঠার পর সূর্যের আলো গায়ে মাখা খুব দরকার। কারণ, এই সূর্য আমাদের শরীরের প্রাকৃতিক ঘড়ির সময় নির্ধারণ করে দেয়। এতে আপনার ঘুম সঠিক সময়ে এবং হজমক্রিয়া ভালোমতো হবে। এ ছাড়া সূর্যের আলো মানেই ভিটামিন ডি-র দারুণ উৎস।
২. তাড়াহুড়া করে বিছানা ছাড়া
কেউ কেউ তাড়াহুড়া করে ঘুম থেকে ওঠেন। দুম করে উঠে বসে আবার হাঁটাচলাও শুরু করে দেন। শোয়া থেকে উঠে বসার কারণে পায়ে রক্ত যেতে দেরি হয়। এতে রক্তচাপ হুট করে আশঙ্কাজনকভাবে কমে যেতে পারে। এতে কিছুক্ষণের জন্য মাথা ঘোরানো বা বিহ্বল ভাব হতে পারে। রক্তচাপ বেশি কমে গেলে তা মৃত্যুর কারণও হতে পারে। তাই ধীরে-সুস্থে ঘুম থেকে উঠতে হবে। এতে বড় ধরনের শারীরিক সমস্যা এড়ানো যাবে।
৩. হঠাৎ করে চা–কফি বাদ দেওয়া
ঘুম থেকে ওঠার পর কফি বা চা খাওয়ার অভ্যাস থাকে অনেকেরই। কেউ কেউ আবার স্বাস্থ্যগত কারণে কফি বা চা বাদ দেন। কিন্তু হুট করে এসব বাদ দেওয়া উচিত নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্যাফেইনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে মানুষের শরীর। হঠাৎ করে কফি বা চা বাদ দিলে প্রচণ্ড মাথাব্যথা, জ্বর, বমির ভাব হতে পারে। এ ছাড়া মনোযোগের ঘাটতিও দেখা দিতে পারে। যদি একেবারেই ছাড়তে চান, তবে ধীরে ধীরে মাত্রা কমিয়ে দেওয়া ভালো।
৪. দাঁতের কথা ভুলে যাওয়া
ঘুম থেকে উঠে কেউ কেউ দাঁত না মেজেই প্রাত্যহিক কাজ করা শুরু করে দেন। কারও আবার ঘুম থেকে উঠেই কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকে। কিন্তু সকালে উঠেই না মাজলে দাঁতে টারটার নামের প্লাক জমতে শুরু করে। এসব থেকে মুখের দুর্গন্ধ, ক্যাভিটি ও দাঁতের অন্যান্য রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তা ছাড়া কফি খাওয়ার পরপরই দাঁত ব্রাশ করা উচিত নয়। কারণ, কফিতে থাকা অ্যাসিড দাঁতের এনামেল দুর্বল করে দেয়। কফি খাওয়ার পর পরই ব্রাশ করলে এনামেল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই কফি বা লেবুর শরবত খাওয়ার অন্তত ৩০ থেকে ৬০ মিনিট পর দাঁত মাজা উচিত।
৫. ঘুমচোখেই মুঠোফোন
স্মার্ট ডিভাইস এখন আমাদের জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে। ই-মেইল দেখা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চোখ বোলানো—সব সময় এসব করতে করতে বেড়ে যায় মানসিক চাপ ও উদ্বেগ। এই চাপ ও উদ্বেগ আরও বেড়ে যায় যদি ঘুম চোখেই এসব দেখতে শুরু করেন। এতে সকাল সকালই বাড়তি চাপে পড়ে যেতে হয়। আর তা অব্যাহত থাকে সারা দিন। তাই অন্তত সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার পর কয়েক ঘণ্টা ই-মেইল বা ফেসবুক না দেখাই ভালো। এতে মন প্রশান্ত থাকবে। কর্মব্যস্ত দিনের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করুন ধীরে ধীরে।
৬. পরিকল্পনা ছাড়া দিন শুরু
কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই দিন শুরু করলে তা মোটেই ভালো ফল দেয় না। এতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজও শেষে আর করা হয়ে ওঠে না। তাই প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠার পরপরই দিনের কাজের একটি তালিকা বানিয়ে ফেলুন। আর সে অনুযায়ী একেকটি কাজ শেষ করুন। তাহলেই দেখবেন, দিন শেষে সাফল্যের হাসি ফুটেছে আপনার মুখে।
৭. না খেয়েই সকাল পার
অফিসের তাড়াহুড়ায় অনেকে না খেয়েই বেরিয়ে পড়েন বাসা থেকে। কারও আবার সকালে কম খেয়ে দুপুরে বেশি খাওয়ার অভ্যাস। কিন্তু এ দুয়ের কোনোটাই ভালো নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা সকালে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর নাশতা খান, তাদের শরীরে চর্বি জমে কম। তা ছাড়া ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কম থাকে। কাজেই সকাল শুরু করুন একটি স্বাস্থ্যকর নাশতা দিয়ে। সারা দিন থাকুন ফুরফুরে।
সূত্র: ওয়েবএমডি