প্রচণ্ড গরমেও তেমন ঘাম না হওয়াটা হিটস্ট্রোকের উপসর্গ, সুস্থ থাকতে কী করবেন
বাইরে প্রচণ্ড দাবদাহ। এই গরমে হতে পারে হিটস্ট্রোক। গরমজনিত এই স্ট্রোক কিন্তু ভীষণ মারাত্মক। দ্রুত চিকিৎসা না নিলে জীবননাশের ঝুঁকিও থাকে। হিটস্ট্রোকে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেড়ে যায়। ত্বক উত্তপ্ত এবং লালচে হয়ে যেতে পারে। প্রচণ্ড গরম সত্ত্বেও তেমন ঘাম না হওয়াটা হিটস্ট্রোকের উপসর্গ।
হিটস্ট্রোক হলে রোগী হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। অজ্ঞান হওয়ার আগে মাথা দপদপ, মাথা ঘোরা, মাথা হালকা অনুভব করা, পেশির দুর্বলতা কিংবা পেশির ব্যথার মতো কিছু উপসর্গও দেখা দিতে পারে। কেউ কেউ অনুভব করেন, হৃৎপিণ্ডের গতি বেড়ে যাচ্ছে। খিঁচুনি, ঘন ঘন শ্বাসপ্রশ্বাস, বমিভাব কিংবা বমিও হতে পারে। রোগী অসংলগ্ন আচরণও করতে পারেন।
প্রাথমিক চিকিৎসা
গরমে এমন উপসর্গ দেখা দিলে পর্যাপ্ত বাতাসের ব্যবস্থা রয়েছে, এমন ছায়াময়, ঠান্ডা স্থানে বিশ্রাম নিতে হবে।
ঠান্ডা পানিতে ডুবে থাকতে পারলে সবচেয়ে ভালো। তবে তেমন সুযোগ অনেক ক্ষেত্রেই থাকে না। এমন ক্ষেত্রে ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে পারেন। সেটিও সম্ভব না হলে অন্তত শরীর ভেজান কিংবা ত্বকে ঠান্ডা বা ভেজা কাপড় ধরে রাখুন বেশ খানিকক্ষণ। পানি ছিটিয়ে বা স্প্রে করে নেওয়ার সুযোগ থাকলে সেটিও করতে পারেন। যেকোনো উপায়েই হোক, মাথা, ঘাড়, বগল ও কুঁচকি ভেজানো জরুরি। এসব স্থানে বরফ ধরতে পারলে খুবই ভালো হয়।
গা থেকে অতিরিক্ত কাপড়চোপড় সরিয়ে দিন। যে কাপড়টা পরনে থাকছে, সেটি ভিজিয়ে নিতে পারেন।
ধীরে ধীরে মৃদু ঠান্ডা পানি খান।
রোগী নিজে এসব না পারলে আশপাশের মানুষদেরই এগিয়ে আসতে হবে। তবে রোগীর আচরণ অসংলগ্ন হলে, জ্ঞান না থাকলে, খিঁচুনি হলে কিংবা শ্বাসপ্রশ্বাস অস্বাভাবিক হলে তিনি স্বাভাবিক অবস্থায় না ফেরা পর্যন্ত পানি বা খাবার খাওয়াবেন না; বরং এমন ক্ষেত্রে দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েই তাঁকে নিকটস্থ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।
কারা রয়েছেন ঝুঁকিতে?
প্রচণ্ড গরমে শারীরিক পরিশ্রম করতে হয় বা বাইরে কাজ করতে হয়, এমন মানুষদেরই হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে বেশি। গরমে পানি কম পান করলেও ঝুঁকি থাকে। মদ্যপানকারী ব্যক্তিরাও ঝুঁকিতে থাকেন। বয়স্ক ব্যক্তি, দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং চার বছরের কম বয়সীদেরও হিটস্ট্রোকের প্রবণতা বেশি।
প্রতিরোধ করবেন কীভাবে
পর্যাপ্ত পানি খান। এখন রমজান মাস। যাঁরা রোজা রাখছেন, তাঁরা ইফতার থেকে সাহ্রি পর্যন্ত সময়ে ধাপে ধাপে পানি খান সারা দিনের জন্য। হালকা রঙের পাতলা, আরামদায়ক পোশাক পরুন। বাইরে গেলে চওড়া প্রান্তের টুপি (হ্যাট) পরতে পারেন। মানসম্মত ছাতা নিন। সানস্ক্রিনসামগ্রী ব্যবহার করা ভালো। সম্ভব হলে প্রচণ্ড রোদ, গরম আর জ্যামের সময়ে বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।