ডেঙ্গু হলেই স্যালাইন নিচ্ছেন না তো

শিরাপথে কতটুকু স্যালাইন দেওয়া হবে, তা রোগীর রক্তচাপ, পানিশূন্যতার লক্ষণ ও রক্তের হেমাটোক্রিট দেখে নির্ধারণ করা হয়।
ছবি: প্রথম আলো

হাসপাতালগুলোয় ডেঙ্গু জ্বর ও এর উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়ছেই। তাঁদের অনেকে ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে বলে ভয় পেয়ে ভর্তি হচ্ছেন, আবার অনেকে ভর্তি আছেন অনেক জটিলতা নিয়ে। অনেকে ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে জেনে শিরাপথে স্যালাইন নিতে চান। আবার অনেকে শিরাপথে স্যালাইন নেওয়া দরকার হলেও হাসপাতালে ভর্তি হতে চান না। আজ আমরা জানব ডেঙ্গুতে কখন শিরাপথে স্যালাইন দিতে হবে।

ডেঙ্গুর উপসর্গ ও জটিলতা বিবেচনা করে আমরা একে তিনটি ধরন বা ক্যাটাগরিতে ভাগ করি। ‘এ’ ক্যাটাগরির রোগীদের শুধু জ্বর ও মাথাব্যথা থাকে, অন্য কোনো জটিলতা থাকে না। এ রকম রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি বা শিরাপথে স্যালাইন নেওয়ার প্রয়োজন নেই। বাসায় পরিপূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে এবং পর্যাপ্ত তরল খাবার খেতে হবে। অপ্রয়োজনে শিরাপথে স্যালাইন নিলে তা হিতে বিপরীত হতে পারে। তখন ফুসফুসে পানি জমে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

ক্যাটাগরি ‘বি’ ও ‘সি’ রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে এবং শিরাপথে স্যালাইন দিতে হবে। এর লক্ষণগুলো হলো—

  • পেটে ব্যথা হলে

  • দিনে তিনবারের বেশি বমি বা ডায়রিয়া হলে

  • ফুসফুস বা পেটে পানি এলে

  • রক্তক্ষরণ হলে

  • অস্থির হয়ে গেলে বা অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে গেলে

  • রক্তচাপ কমে গেলে এবং নাড়ির চাপ ২০ মিমির কম হলে

  • প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গেলে

  • ল্যাব রিপোর্টে রক্তের ঘনত্ব বা হেমাটোক্রিট বেড়ে গেলে

শিরাপথে ঘণ্টায় কতটুকু স্যালাইন দেওয়া হবে, তা রোগীর রক্তচাপ, পানিশূন্যতার লক্ষণ ও রক্তের হেমাটোক্রিট দেখে নির্ধারণ করা হয়। অতিরিক্ত স্যালাইন দিলে তা ফ্লুইড ওভারলোড হয়ে ফুসফুস ও পেটে জমে, যা ক্ষতিকর। সুতরাং ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্যালাইন দিতে হবে।

ডা. আফলাতুন আকতার জাহান, মেডিসিন স্পেশালিস্ট, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা