২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ওজন কমাতে কখন সকালের নাশতা করা সবচেয়ে ভালো?

স্থূলতা বা মোটা হওয়া একটি বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে শহুরে জীবনে। ওজন কমাতে আমরা কী না করি! না খেয়ে থাকা, ব্যায়ামাগারে যাওয়া, মেপে মেপে খাওয়া, সকাল-বিকেল হাঁটা, ট্রেডমিল ব্যবহার করা—কতশত চেষ্টা করার পরও ওজনের রাশ যেন টেনে ধরা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ওজন কমাতে বেশি নজর দিতে হবে সকালের নাশতার দিকে। বলা হয়, সকালের নাশতা দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। সকালের নাশতায় কী খাচ্ছেন, কখন খাচ্ছেন, তার ওপর নির্ভর করছে আপনার ওজন বাড়বে কি কমবে। লাখ টাকার প্রশ্ন হলো, এই সঠিক সময় কোনটি? সকালের নাশতা কখন খেলে সবচেয়ে ভালো উপকার পাবেন? জেনে নেওয়া যাক।

ওজন কমাতে বেশি নজর দিতে হবে সকালের নাশতার দিকে
ছবি: অগ্নিলা আহমেদ

পুষ্টিবিশেষজ্ঞ, কিংস কলেজ লন্ডনের জেনেটিক এপিডেমিওলজির অধ্যাপক টিম স্পেক্টর বলেন, বেলা ১১টার পর সকালের নাশতা খেতে হবে। কেন তিনি এ কথা বলেন? কারণ, গবেষণায় দেখা গেছে, টানা ১৪ ঘণ্টা না খেয়ে থাকা ওজন কমানোর জন্য সহায়ক। আর সে ক্ষেত্রে আপনার রাতের খাওয়া সারতে হবে অন্তত রাত ৯টার মধ্যে। রাত ৮টার মধ্যে রাতের খাওয়া সেরে ফেললে সকাল ১০টায় আয়েশ করে বসতে পারেন নাশতা নিয়ে।

অধ্যাপক স্পেক্টরের মতে, সন্ধ্যে ৬টার মধ্যে রাতের খাওয়া সেরে ফেলা সবচেয়ে ভালো। কেননা, সূর্য ডুবে যাওয়ার পর শর্করাজাতীয় খাবার পরিপাকের যে হরমোন, তার নিঃসরণের হার কমতে থাকে। সূর্য ডোবার আগে রাতের খাওয়া সেরে ফেলতে পারলে আপনি সকাল ৮টায় নাশতা সেরে ফেলতে পারেন। অধ্যাপক স্পেক্টর আরও বলেন, সুস্থ থাকতে ও অতিরিক্ত ওজন কমাতে হলে ঘুম থেকে ওঠার পর কিছু খাওয়ার আগে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করা ভালো।

বর্তমান জীবনযাপনের পদ্ধতির কারণে এখন শহুরে মানুষ দেরি করে রাতের খাবার খায়। আগের প্রজন্ম কিন্তু একটু আগেভাগেই রাতের খাবার খেত।

বলা হয়, সকালের নাশতা দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার
ছবি: কবির হোসেন

কেন ১৪ ঘণ্টা পর সকালের নাশতা?

আমাদের শরীরের স্বাভাবিক বিপাকক্রিয়ার জন্য ১৪ ঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, আমাদের পেটের অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াগুলোর একটি সার্কাডিয়ান ছন্দ রয়েছে। আর ব্যাকটেরিয়াগুলোরও বিশ্রাম প্রয়োজন। সার্কাডিয়ান ছন্দ একটা চক্র। ঘুম, ঘুম থেকে জেগে ওঠা, শরীরের তাপমাত্রা থেকে শুরু করে মনের অবস্থা, সব ধরনের ক্ষুধার ব্যাকরণ—সবই থাকে ঘড়ির কাঁটার এই চক্রে। ঘুমিয়ে পড়লে দেহের তাপমাত্রা কমে। জেগে থাকা অবস্থায় তা অপেক্ষাকৃত বেশি থাকে। এই নিয়মের ছন্দকে বৈজ্ঞানিক ভাষায় বলে সার্কাডিয়ান ছন্দ। এতে ব্যাকটেরিয়াগুলো খাবার ‘বার্ন’ করতে আরও দক্ষ হয়ে ওঠে।

কতটুক ওজন কমতে পারে?

গবেষণায় পাওয়া গেছে, ১৪ ঘণ্টা উপোস থেকে সকালের নাশতা করলে আর অন্যান্য নিয়ম মানলে মাসে ১ থেকে ৫ কেজি পর্যন্ত ওজন কমতে পারে। এই পদ্ধতিতে নাশতা করলে শুধু আপনার ওজনই কমবে না, আপনি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে উঠবেন।

আরও পড়ুন

৫: ২ ডায়েটের চেয়েও ভালো

১৪ ঘণ্টা উপোস থেকে সকালের নাশতা করাটা প্রচলিত ফ্যাশনেবল ‘৫: ২ ডায়েট’–এর চেয়ে ভালো। ৫: ২ ডায়েটের মূলকথা হলো, সপ্তাহে পাঁচ দিন স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং বাকি দুই দিন উপোস থাকা। কিন্তু এই ডায়েটের সমস্যা হলো, উপোস থাকার পর আপনি যখনই খাবেন, তখন প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলতে পারেন। এতে আপনার ওজন না কমে উল্টো বেড়ে যেতে পারে।

আপনি রাতের খাবার যখনই খান, তার ১৪ ঘণ্টা পর সকালের নাশতা করুন। তাহলে আপনি সুস্থ থাকবেন আর আপনার ওজনও কমে যাবে। তবে যাঁদের ডায়াবেটিস কিংবা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা আছে, তাঁরা অবশ্যই চিকিৎসকের দেওয়া সময়সূচি অনুযায়ী সকালের নাশতা খাবেন।

সূত্র: এডিনবরা লাইভ

আরও পড়ুন