গ্রীষ্মেও এভাবে হাতের চামড়া উঠছে?
শীতকালে ত্বকের চামড়া উঠে আসার মতো সমস্যায় ভোগেন অনেকে। নিষ্প্রাণ শীতে এমন সমস্যাকে অনেকটা স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু গরমের সময়েও কারও কারও এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। কী কারণে এমন হয়? সমাধানই–বা কী?
চামড়া ওঠার ব্যাপারটা স্বাভাবিক নাকি অস্বাভাবিক, সেটি প্রথমে জেনে নেওয়া যাক। ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সিনথিয়া আলম বলেন, ‘আমাদের ত্বকের বাইরের দিককার সূক্ষ্ম স্তর প্রতি ২৮ দিন পরপরই বদলে যায়। সহজভাবে বললে, আমাদের সবারই চামড়া ওঠে ২৮ দিন অন্তর। তবে তা এতটাই সূক্ষ্মভাবে যে আমরা বুঝতে পারি না। তবে নানা কারণে কখনো চামড়া ওঠার হার স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। আর তখনই আমরা তা দেখতে পাই।’
গরমের বিশেষ দিক
গরমে রোদের তীব্রতা ও পানিশূন্যতার প্রভাবে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়তে পারে। চামড়াও উঠে আসতে পারে। তা ছাড়া অতিরিক্ত ঘামের কারণে রোমকূপ বন্ধ হয়ে ত্বকের স্বাভাবিকতা ব্যাহত হতে পারে। এ কারণেও চামড়া ওঠার হার বেড়ে যেতে পারে। জুতা–মোজার ভেতরে অনেকেরই পায়ের তালু ঘামে। কারও কারও আবার হাতের তালু খুব ঘামে। গরমের সময় হাত–পায়ের তালুর চামড়াও উঠতে পারে অতিরিক্ত। শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের হাওয়ায়ও ত্বক শুষ্ক হয়ে বেশি বেশি চামড়া উঠতে পারে। তা ছাড়া শীতের রুক্ষ দিন পেরিয়ে গেলে ময়েশ্চাইরাইজার ব্যবহার করেন না অনেকেই। তাই ত্বকের শুষ্কতা ও চামড়া উঠে আসার সমস্যা হতেই পারে।
অতিরিক্ত চামড়া ওঠার আরও যত কারণ
বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া হলে কিংবা স্যানিটাইজার ব্যবহার করা হলে চামড়া উঠতে পারে বেশি। পারফিউম বা বডি স্প্রে ব্যবহারের পরোক্ষ প্রভাবেও এমনটা হতে পারে। গোসলের পানিতে জীবাণুরোধী রাসায়নিক দ্রব্য যোগ করা হলেও এ ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সোরিয়াসিস, কন্ট্যাক্ট ডারমাটাইটিস ও একজিমা আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও চামড়া ওঠার সমস্যা দেখা দেয়।
প্রতিকারে যা করবেন
গরমের সময় সবারই যেসব বিষয় মেনে চলা উচিত—
পর্যাপ্ত পানি খাবেন। ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই–সমৃদ্ধ খাবার প্রয়োজন। সবুজ শাকসবজি, তাজা ফলমূল, নানা ধরনের বাদাম, বীজ প্রভৃতি পুষ্টিকর খাবার খাবেন।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন অবশ্যই। এমন ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন, যা প্রয়োগের পর চিটচিটে ভাব হয় না। সেরামাইডযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ভালো। ভিটামিন ই–সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার বেছে নিতে পারেন।
প্রতিবার হাত পরিষ্কার করার পর হ্যান্ড ক্রিম লাগিয়ে নেওয়া আবশ্যক।
ঘাম হলে মুছে ফেলুন। ত্বক পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখুন।
এসব বিষয় মেনে চলার পরেও সমস্যা না মিটলে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।