গরমের এ সময়ে পায়ের আঙুলের ফাঁকে ঘা হতে দেখা যায়। প্রচণ্ড চুলকায় ও জায়গাটি লাল হয়ে যায়। কখনো ত্বক ফেটে যায়, আবার কখনো ফুসকুড়ির মতো হয়, জ্বালাপোড়াও করে। এ সমস্যাকে ‘টিনিয়া পেডিস’ বা ‘অ্যাথলেটস ফুট’ বলে।
এটি সংক্রামক। সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে গেলে আঙুলের ফাঁকে ক্ষত তৈরি হয়ে থাকে।
সাধারণত ছত্রাক সংক্রমণ মারাত্মক কিছু নয়। কিন্তু কখনো কখনো এর নিরাময় কঠিন হতে পারে। ডায়াবেটিস থাকলে অথবা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল হলে এমন সংক্রমণের চিকিৎসা নিতে দেরি করা উচিত নয়। এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে।
কেন হয়
সাধারণত গরমকালে ও আর্দ্র স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় ছত্রাকের সংক্রমণ বেশি হয়।
পা সব সময় ভেজা থাকা, একই মোজা বারবার পরা, সারা দিন আঁটসাঁট জুতা পরার কারণে পা ঘেমে গেলে ছত্রাকের সংক্রমণ বেশি ঘটে।
সংক্রমিত ব্যক্তির কাপড়, মোজা, বিছানা ব্যবহারে অন্য ব্যক্তিও আক্রান্ত হতে পারেন।
খালি পায়ে হাঁটলে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
চিকিৎসা
সংক্রমণ সারাতে কিছু ছত্রাকনাশক ব্যবস্থাপত্র ছাড়া সরাসরি দোকান থেকে কিনে ব্যবহার করতে পারবেন।
আবারও সংক্রমণ ঠেকাতে উপসর্গ চলে যাওয়ার পরও কমপক্ষে আরও এক সপ্তাহ ওষুধ ব্যবহার করা উচিত। এরপরও না সারলে চিকিৎসকের পরামর্শে হাইড্রোজেন পার–অক্সাইড সরাসরি সংক্রমিত স্থানে ঢেলে দেওয়া যায়। তবে এতে জ্বালাপোড়া করতে পারে এবং বাবল দেখা যেতে পারে।
টি ট্রি অয়েলে (চা–পাতার তেল) ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়াবিনাশী উপাদান রয়েছে। টি ট্রি অয়েলে নারকেল তেলের মতো কোনো ক্যারিয়ার অয়েল মিশিয়ে ২৫-৫০ শতাংশের কনসেন্ট্রেশন তৈরি করুন। তারপর দিনে দুবার করে আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করতে হবে।
নিমপাতার নির্যাস ছত্রাক সংক্রমণ নিরাময়ে বেশ কার্যকর। নিমের তেল বা নির্যাস দিনে দুই-তিনবার সরাসরি সংক্রমিত স্থানে ব্যবহার করতে পারেন।
সামুদ্রিক লবণেও ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকবিনাশী ক্ষমতা রয়েছে। একটি গামলায় কুসুম গরম পানি নিন এবং এতে এককাপ লবণ মিশিয়ে পায়ের আঙুলকে ২০ মিনিটের মতো ডুবিয়ে রাখুন। এরপর ভালোভাবে মুছে ফেলুন।
প্রতিরোধ
পায়ের শুষ্কতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অপরিহার্য। আঙুলের ফাঁক শুকিয়ে নিন।
নিয়মিত মোজা পরিবর্তন করুন বা ধুয়ে ফেলুন।
পাবলিক প্লেসে খালি পায়ে হাঁটবেন না।
সহজেই বাতাস চলাচল করতে পারে, এমন জুতা পরুন।
ডা. জাহেদ পারভেজ, সহকারী অধ্যাপক, চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ