পেপটিক আলসারের রোগী যেসব নিয়ম মেনে চলবেন
পেপটিক আলসার হলো পাকস্থলী অথবা পাকস্থলীর পরবর্তী অঙ্গ তথা ক্ষুদ্রান্ত্রের প্রথম অংশ বা ডিওডেনামে ক্ষত সৃষ্টিকারী রোগ। সাধারণত দুই কারণে এই রোগ হতে পারে। প্রথম কারণ হলো জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া–ঘটিত কারণ। জীবাণুটির নাম হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি। অন্য কারণটি হলো অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেন বা অন্য যেকোনো এনএসএ আইডিজাতীয় ব্যথানাশক ওষুধের ব্যবহার।
এই রোগের উপসর্গ হলো পেটব্যথা, বুক জ্বলা, বমি বমি ভাব, ক্ষুধামান্দ্য, ওজন হ্রাস। সাধারণত নারীদের তুলনায় পুরুষদের এই রোগে আক্রান্তের হার বেশি। জীবাণুঘটিত কারণ দায়ী হলে জীবাণুনাশক ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে আর ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহারের কারণে হলে ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহার বন্ধ করে দিলে এবং ওমিপ্রাজলজাতীয় ওষুধ ব্যবহারে পেপটিক আলসার রোগ থেকে মুক্তি মেলে। সাধারণত খাদ্যের কারণে পেপটিক আলসার রোগ হয় না। তবে অনিয়ন্ত্রিত বা অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস পাকস্থলীর ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাকস্থলীর ক্ষতের কারণে সৃষ্ট উপসর্গের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
তাই পেপটিক আলসার রোগে আক্রান্ত রোগীদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
করণীয়
প্রতিদিন ৬-৮ গ্লাস পানি পান করবেন।
প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করবেন।
প্রতিদিন খাবারে শাকসবজি রাখবেন।
অল্প অল্প করে বারবার খাবেন। এভাবে প্রতিদিন ৫-৬ বার খাবেন।
মাছ খেতে পারবেন।
দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন যাপন করবেন।
রাতে হালকা খাবার খেতে হবে।
রাতে খাওয়ার কমপক্ষে ২ ঘণ্টা পর শুতে যাবেন বা ঘুমাতে যাবেন।
খাবার বসে খাবেন।
প্রতিদিন সময়মতো ও নিয়মিত খাবার খাবেন।
বর্জনীয়
ধূমপান করবেন না।
অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকবেন।
কফি, চকলেট, ঝালজাতীয় খাবার, তেল, চর্বি, ভাজাপোড়াজাতীয় খাবার না খেলেই ভালো।
ফাস্ট ফুড থেকে দূরে থাকবেন।
পেট ভরে খাবেন না।
অনিয়মিতভাবে খাবেন না।
খাবারের সঙ্গে না খেয়ে বরং খাবারের পরে পানি পান করুন।
কোমল পানীয় পরিহার করবেন।
কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন
রক্তবমি হলে
পেটে হঠাৎ তীব্র ব্যথা হলে
ওজন কমে গেলে
আলকাতরার মতো ঘন কালো পায়খানা হলে। উৎসব-আয়োজনে মাত্রাতিরিক্ত খাওয়া বর্জন করতে হবে। হালকা খাবার খেতে হবে। কোমল পানীয়, ধূমপান সম্পূর্ণ পরিহার করতে হবে।
ডা. মো. মুসআব খলিল, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিশেষজ্ঞ, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা