খেলাধুলা বা জিমে দক্ষতা বাড়াতে শারীরিক পরিশ্রম ও প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। তাই খেলাধুলা বা জিমের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের অবশ্যই সঠিক খাদ্য ও পুষ্টি উপাদান বেছে নিতে হবে।
● সাধারণ মানুষের তুলনায় খেলোয়াড়দের মেটাবলিক রেট বেশি, শক্তির প্রয়োজন হয় বেশি। কার্বোহাইড্রেট শক্তির প্রধান উৎস, যা গ্লাইকোজেন হিসেবে মাংসপেশিতে সঞ্চিত হয়ে দিনভর শক্তি দেয়। এ ক্ষেত্রে ওটস, কলা, কুইনোয়া, ডালিয়া, বার্লি, লাল চিড়া ভালো কাজ করে। এ ছাড়া বাদাম, পালংশাক, মিষ্টি আলু, ডিম, টক দই, চর্বিহীন মাংস ইত্যাদিকে শক্তিদায়ক খাবার হিসেবে প্রাধান্য দিতে হবে।
● যে কোন খেলায়াড়ের আগে দরকার শরীরে প্রয়োজনীয় পেশি তৈরি করা। চর্বিহীন মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, বাদাম, সিডস, সয়াবিন থেকে তৈরি সব খাবার থেকেও ব্রাঞ্চ চেইন অ্যামিনো অ্যাসিড পাওয়া যায়।
● পানির ঘাটতি থাকলে শরীর ও মস্তিষ্কের দক্ষতা কমে যেতে পারে। ইলেকট্রোলাইট ঘাটতি হয়ে মাংসপেশির কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। খেলার দুই ঘণ্টা আগে আধা লিটার, ওয়ার্মআপের সময় ২৫০ মিলিলিটার ও খেলার সময় প্রতি ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর ১৫০ থেকে ২০০ মিলি পানি খাওয়া ভালো। পানির পাশাপাশি শসা, তরমুজ, কমলা, লেবু, লেটুস, আনারস ও টমেটো খেতে হবে।
● যাঁরা খেলাধুলা করেন, তাঁদের ওজন বেড়ে যেতে পারে—এমন খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। যেমন ফাস্ট ফুড, তেলে ভাজা খাবার, চিনিযুক্ত তরল পানীয়, অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাবার, অ্যালকোহল ইত্যাদি।
● হাড়ের উপাদানসমৃদ্ধ খাবার অবশ্যই খাদ্যতালিকায় থাকতে হবে। যেমন দিনে দুইবার দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার রাখা। এ ছাড়া গাঢ় সবুজ শাক, সামুদ্রিক ও ছোট মাছ, সয়া মিট, তফু, পনির, কাঠবাদাম, চিয়াসিডস ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস।
● মানসিক দক্ষতা বাড়ায়, এমন খাবারও তালিকায় থাকতে হবে। যেমন সামুদ্রিক মাছ, ডার্ক চকলেট, বাদাম, হলুদ, দুধ, ব্রকলি, অ্যাভাকেডো, সম্পূর্ণ শস্যজাতীয় খাবার, স্ট্রবেরি, কাঠবাদাম, সয়া মিল্ক ইত্যাদি।
● খাবারে ভিটামিন, মিনারেলের ঘাটতি থাকা যাবে না। পর্যাপ্ত পরিমাণে রঙিন ফলমূল ও শাকসবজি খেতে হবে।
অনেক সময় তাৎক্ষণিক শক্তির জন্য বিভিন্ন সাপ্লিমেন্ট খাওয়া যেতে পারে। যেমন গ্লুকোজের পানি, ইলেকট্রোলাইটস ড্রিঙ্ক, প্রোটিন শেক, বাদাম-খেজুর দিয়ে মিল্ক শেক, ব্ল্যাক কফি ইত্যাদি। এ ছাড়া ভিটামিন ডি ক্লান্তি কমায়, ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মনোযোগ বাড়ায় ও আয়রন দেহের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন সরবরাহ করে।
প্রতিটি খেলায় প্রত্যেক খেলোয়াড়ের দরকার আলাদা ডায়েট। কী ধরনের খেলার সঙ্গে যুক্ত, তার ওপর নির্ভর করবে দৈনন্দিন খাবারের তালিকা। তাই এ বিষয়ে সব সময় পুষ্টিবিদের পরামর্শ মেনে চলা উচিত।