ক্রিম ব্যবহার করলে কি আসলেই ত্বক ফরসা হয়?
অনেকেই নিজেদের গায়ের রং নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগেন। ত্বকের রং বদলাতে তাঁরা বাজার চলতি নানা ক্রিম বা হারবাল ব্যবহার করে থাকেন। এসব ক্রিম ব্যবহারে গায়ের রঙে সামান্যই হেরফের হয়। যে কারণে আশানুরূপ ফল না পেয়ে হতাশা আরও বাড়ে, বাড়ে ব্যয়ও। অনেক সময় এই ক্রিম ব্যবহার বন্ধ করে দিলে ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দেয়। ত্বকের কোনো অংশ সাদা, আবার কোনো অংশ কালো হয়ে যায়। ক্রিম ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করে দিলে পরবর্তী সময় গায়ের রং আরও কালো হয়ে যেতে পারে। মেছতা বা কালো দাগ দূর করণে নামে–বেনামে যেসব ক্রিম ব্যবহৃত হয়, তার ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য।
কেন ক্ষতিকর
এসব ক্রিমে মার্কারি, লেড, স্টেরয়েড, নানা প্রিজারভেটিভসহ অজস্র রাসায়ানিক থাকে, যা আমাদের ত্বকের জন্য যথেষ্ট ক্ষতিকর। অতি বা দীর্ঘ ব্যবহারে ত্বকে ফুসকুড়ি, স্থানে স্থানে রং বদলে যাওয়া, কালশিটে পড়া, ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাল সংক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমে যাওয়াসহ উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, বিষণ্ণতা ও মানসিক অস্থিরতা থেকে স্নায়ুবৈকল্যজনিত সমস্যা হতে পারে। এই ধরনের স্টেরয়েড মেশানো ক্রিম অকারণে মুখে মাখার জন্য ত্বক পাতলা হয়ে যেতে পারে, হয়ে উঠতে পারে অতিরিক্ত সূর্য-সংবেদী। মুখে মেছতা পড়তে পারে। পাশাপাশি মুখে, গলায় ও হাতে বিভিন্ন রকমের অ্যালার্জি ও র্যাশ হয়। ত্বক শুকিয়ে নিষ্প্রাণ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। যাঁরা নিয়মিত এসব ক্রিম মাখেন, তাঁদের চোখে জ্বালা থেকে শুরু করে নানা রকম অসুবিধা হতে পারে। মার্কারি থেকে ত্বকের ক্ষতির পাশাপাশি সফট টিস্যুরও সমস্যা হয়। এমনকি ত্বকের ক্যানসারের শঙ্কাও হয়।
কী করবেন
ত্বকের রং একটি প্রকৃতি প্রদত্ত বিষয়। ত্বকে অবস্থিত মেলানিন ত্বকের রং নির্দিষ্ট করে। এর ওপর জিনগত, পারিবারিক ও পরিবেশগত প্রভাব রয়েছে। অকারণে এই স্বাভাবিক রং পরিবর্তনের জন্য কোনো মলম, ক্রিম বা ওষুধ ব্যবহার বাঞ্চনীয় নয়। আর মুখে মেছতা বা ঘাড়ে কালো দাগ, কিংবা ত্বকের কোনো পিগমেন্টেশন বা দাগ দূর করতে চাইলে তারও বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা আছে। এ জন্য আগে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। সতেজ ও সজীব ত্বক পেতে বরং ত্বকের নিয়মিত যত্ন নিন, সুস্থ জীবনাচরণ করুন ও সুষম খাবার খান।
*ডা. এস এম রাসেল ফারুক: চর্ম ও যৌন রোগবিশেষজ্ঞ