ফিটকিরির ব্যবহারে বাঁচবে আপনার ডিওডোরেন্টের খরচ

মুখে ঘা হলে ফিটকিরি লাগাতে পারেন।
ছবি : সুমন ইউসুফ

অ্যালুমিনিয়াম সালফেট ও পটাশিয়াম সালফেট দিয়ে তৈরি প্রাকৃতিক লবণ ফিটকিরি। এর রাসায়নিক নাম পটাশ অ্যালাম। রং শুভ্র সাদা। ফিটকিরি কিন্তু বহু গুণে গুণান্বিত। বহু শতাব্দী ধরে এটি আয়ুর্বেদশাস্ত্রে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে, পানি জীবাণুমুক্ত করতে, বগলের দুর্গন্ধ দূর করতে ফিটকিরি বেশ কাজে দেয়।

ফিটকিরি প্রাকৃতিক টোনার হিসেবেও কাজ করে।
ছবি : সুমন ইউসুফ

ফিটকিরির এমনই আরও সাতটি উপকারিতার কথা জেনে নিন:

বগলের দুর্গন্ধ দূর করে

অতিরিক্ত ঘাম থেকে শরীরে দুর্গন্ধ হয়, বিশেষ করে বগলের দুর্গন্ধের জন্য দায়ী হলো অতিরিক্ত ঘাম। বগলের দুর্গন্ধ নিয়ে অনেক সময় বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়। ফিটকিরিতে ঘাম কমানোর আশ্চর্য ক্ষমতা আছে। গোসলের পর ফিটকিরি বগলে ঘষে নিন, দেখবেন দুর্গন্ধ দূর হবে। আর কৃত্রিম ক্ষতিকর ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করা লাগবে না।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করে

মুখে দুর্গন্ধের কারণে অনেক সময় কর্মস্থলে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়। তাঁরা ফিটকিরি-মিশ্রিত পানি দিয়ে কুলকুচি করতে পারেন। এক গ্লাস গরম পানিতে এক গ্রাম ফিটকিরি ও এক চিমটি শিলা লবণ (রক সল্ট) যোগ করে ভালোভাবে গুলিয়ে নিন।এখানে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ভুলে আবার পানি গিলে ফেলবেন না যেন। এতে আপনার বমির উদ্রেক হতে পারে।

দাঁতের রক্তপাত বন্ধ করে

খাবার খাওয়ার পর দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে জমে তা থেকে ব্যাকটেরিয়া জন্মে। এই ব্যাকটেরিয়ার কারণে মাড়ি ফুলে গিয়ে দাঁত দিয়ে রক্ত পড়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফিটকিরি এই সমস্যা দূর করতে পারে। এক গ্রাম ফিটকিরি, এক চিমটি দারুচিনি ও কিছু শিলা লবণ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। মাড়িতে আলতোভাবে ম্যাসাজ করুন এবং কুলকুচি করে পানিটা ফেলে দিন। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে আর ঘুমাতে যাওয়ার আগে এভাবে কুলকুচি করলে ভালো ফল পেতে পারেন।

ফিটকিরিতে ঘাম কমানোর আশ্চর্য ক্ষমতা আছে।
ছবি : সুমন ইউসুফ

নাক দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধ করে

বরফপানিতে একটি তুলার বল ভিজিয়ে তাতে এক গ্রাম ফিটকিরি ছিটিয়ে দিন এবং কয়েক সেকেন্ডের জন্য তুলার বলটি নাকের ছিদ্রে চেপে ধরুন, দেখবেন রক্ত পড়া বন্ধ হবে। কিন্তু এ সময়ে নাকের উভয় ছিদ্র বন্ধ করবেন না।

পানি জীবাণুমুক্ত করে

এখন তো পানি জীবাণুমুক্ত করার বিভিন্ন উপায় আছে। কয়েক যুগ আগেও পানি জীবাণুমুক্ত করতে ফিটকিরি ব্যবহার করা হতো। ফোটানো পানিতে এক চিমটি ফিটকিরি ছেড়ে দিন, পানি জীবাণুমুক্ত হয়ে যাবে। এবার নিশ্চিন্তে পানি পান করুন।

ফোটানো পানিতে এক চিমটি ফিটকিরি ছেড়ে দিলে পানি জীবাণুমুক্ত হয়ে যাবে।
ছবি : সুমন ইউসুফ

মুখের ঘা দূর করে

মুখে ঘা হলে ফিটকিরি লাগাতে পারেন। জ্বালাপোড়া হতে পারে, কিন্তু মুখের ঘা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে।

আফটার শেভ লোশনের কাজ করে

ঘরে শেভ করতে গিয়ে গাল কাটেনি, এ রকম ঘটনা খুব কমই শোনা যায়। শেভ করতে গিয়ে গাল বা ত্বক কেটে গেলে ফিটকিরি লাগিয়ে নিন, দেখবেন সঙ্গে সঙ্গে রক্তপাত বন্ধ হয়ে যাবে। কুঁচকে যাওয়া ত্বকে লাগালে ত্বক টান টান হবে। পাশাপাশি ত্বকে প্রাকৃতিক আভা ফিরে আসবে। এটা প্রাকৃতিক টোনার হিসেবেও কাজ করে। বিশেষ করে যাঁদের বয়স পঞ্চাশের আশপাশে, তাঁরা এটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন ও মেডিকেল নিউজ টুডে