আমরা চোখে কোনো সমস্যা হলে সাধারণত চশমা পরি। কিন্তু কানে যদি কম শুনি, সহজে চিকিৎসকের কাছে যাই না বা পরামর্শ নিই না। কিন্তু কানে কম শুনলে ওই ব্যক্তির অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগে সমস্যা হয় এবং অনেক কম শুনলে তাঁকে শ্রবণপ্রতিবন্ধী বলা হয়। স্বাভাবিক জীবনযাপন, কথা বলা, নিজের অভিমত ব্যক্ত করায় সমস্যা হওয়ার কারণে এমন ব্যক্তি যেন এক ভিন্ন জগতে বা অন্ধকারে বাস করেন।
কানে কম শুনলে একজন নাক–কান–গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে কানে হিয়ারিং এইড বা কানে শোনার যন্ত্র ব্যবহার করা উচিত। হিয়ারিং এইড সম্পর্কে রোগীদের একধরনের ভীতি বা দ্বিধা ও অস্বস্তি কাজ করে। তাই হিয়ারিং এইড সম্পর্কে আলোচনা করা যাক:
হিয়ারিং এইড বা কানে শোনার যন্ত্র হলো একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস, যা শ্রবণ সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের জন্য আওয়াজ বাড়াতে সাহায্য করে। এটি বাহ্যিক আওয়াজ সংগ্রহ করে সেগুলো প্রক্রিয়া করে এবং শ্রোতার কানে পাঠায়। ফলে তাঁরা পরিষ্কার শুনতে পান।
হিয়ারিং এইডের প্রধান অংশ
● মাইক্রোফোন: বাহ্যিক শব্দ গ্রহণ করে।
● অ্যামপ্লিফায়ার: আওয়াজ বাড়িয়ে তোলে।
● স্পিকার: প্রক্রিয়াজাত শব্দ শ্রোতাকে শুনতে সাহায্য করে।
প্রকারভেদ ও প্রক্রিয়া
● ইয়ার-মোন্ড: কানের পেছনে স্থাপন করা হয়।
● ইয়ার-ক্যানাল: কানের চ্যানেলের মধ্যে সজ্জিত হয়, যা কম দৃশ্যমান।
● কমপ্যাক্ট: কানের ভেতর সম্পূর্ণ লুকোনো থাকে।
● ডিজিটাল হিয়ারিং এইড: ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে শব্দকে বাড়িয়ে দেয়।
প্রক্রিয়া ও ব্যবহার
● শব্দ সংগ্রহ: মাইক্রোফোন বাইরের আওয়াজ সংগ্রহ করে।
● শব্দ প্রক্রিয়া: অ্যামপ্লিফায়ার শব্দকে শক্তিশালী করে।
● শব্দ প্রেরণ: প্রক্রিয়াজাত শব্দ স্পিকার দিয়ে শ্রোতার কানে পাঠানো হয়।
● ব্যবহারকারীর সামঞ্জস্য: অনেক হিয়ারিং এইড ব্যবহারকারী নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী শব্দের স্তর ও ধরন সামঞ্জস্য করতে পারেন।
ব্যবহারের সুবিধা
হিয়ারিং এইড একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, যা ব্যক্তির জীবনের মানোন্নয়ন করে। সঠিক হিয়ারিং এইড নির্বাচন ও ব্যবহার করে কর্মক্ষমতা ও স্বাতন্ত্র্য বাড়ানো যায়। তাই শ্রবণ সমস্যা সমাধানে হিয়ারিং এইডের গুরুত্ব অপরিসীম। অকারণ লজ্জা বা দ্বিধা এড়িয়ে প্রয়োজন হলে অবশ্যই এটি ব্যবহার করা উচিত।
অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী, এফআরসিএস, বিভাগীয় প্রধান, ইএনটি, আনোয়ার খান মডার্ন, মেডিকেল কলেজ, ধানমন্ডি, ঢাকা