সাধারণ লোকে বলেন, নাকের মাংস বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, নাকের এমন মাংস বৃদ্ধির নাম ‘হাইপারট্রফিড ইনফেরিয়র টারবিনেট’। টারবিনেট হাইপারট্রফি, ইনফিরিয়র টারবিনেট হাইপারট্রফি ও নাসাল টারবিনেট হলো একই অবস্থার ভিন্ন নামকরণ, যেখানে নাকের পার্শ্বদেয়ালের টিস্যু খুব বড় হয়। ফলে শ্বাস নিতে বাধা সৃষ্টি হয়।
ইনফেরিয়র টারবিনেট টিস্যু অনেক রক্তনালির সমন্বয়ে গঠিত। এটি অ্যালার্জি, সর্দি এবং ওপরের শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, প্রদাহ, নির্দিষ্ট ওষুধের সংস্পর্শে থাকা, গর্ভাবস্থা বা অজানা কারণসহ বিভিন্ন কারণে ফুলে যেতে পারে। অনেকে একে নাকের পলিপ বলেন। কিন্তু নাকের পলিপ আলাদা রোগ।
টারবিনেট হাইপারট্রফির উপসর্গ
নাকের অ্যালার্জি-সর্দি সারা বছর লেগে থাকে।
নাক দিয়ে শ্বাস নিতে অসুবিধা হতে পারে।
নাক বন্ধ থাকায় নাক ডাকা, ঘুমাতে অসুবিধা হয়।
নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।
নাকের আস্তরণের মিউকাস মেমব্রেন শুকিয়ে যেতে পারে।
গন্ধের অনুভূতিও প্রভাবিত হতে পারে।
জটিলতা
নাক ডাকা, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, শ্বাসকষ্ট, ঘুমের ব্যাঘাত।
বারবার সাইনোসাইটিস।
নাক অতিরিক্ত শুষ্ক হওয়া।
জীবনযাত্রার মান ও কর্মক্ষমতা কমা।
অবসাদ ও অলসতা বেড়ে যাওয়া।
কীভাবে নির্ণয়
যদি আপনার সন্তানের এসব উপসর্গ থাকে, তবে এর ইতিহাস জানতে হবে। নাকের সতর্কতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে সম্ভাব্য বাধার উৎসগুলো প্রকাশ করতে হবে।
চিকিৎসকের চেম্বারে বা একটি পৃথক সেটিংয়ে অতিরিক্ত পরীক্ষাগুলো করা যেতে পারে। পরীক্ষাগুলোর একটি ফাইবার অপটিক ক্যামেরা পরীক্ষা। নাক ও অনুনাসিক গহ্বরের যেসব অংশ সাধারণ পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা যায় না, সে ক্ষেত্রে এ পরীক্ষা করা যেতে পারে। এ পরীক্ষা বাংলাদেশে করা যায়।
চিকিৎসা
টারবিনেট হাইপারট্রফির অন্তর্নিহিত কারণ নির্ণয় করে সমাধানমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এ জন্য ওষুধের ব্যবহার, অ্যালার্জি পরীক্ষা ও অস্ত্রোপচার ইত্যাদির সংমিশ্রণ–পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়। অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলে এটি অন্যান্য পদ্ধতির সঙ্গে একযোগে করা যেতে পারে।
অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী, বিভাগীয় প্রধান, ইএনটি, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ধানমন্ডি, ঢাকা