পিঠে ব্যথা খুবই সাধারণ এক স্বাস্থ্য সমস্যা। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন পেশার মানুষ প্রায়ই এ সমস্যায় ভোগেন। বিশেষত যাঁরা বসে কাজ (ডেস্ক ওয়ার্ক) করেন, তাঁদের কাজের প্রকৃতি, ফিটনেস-সম্পর্কিত সমস্যা ও জীবনযাত্রা সঠিক না হওয়ায় পিঠের ব্যথায় ভুগতে হয় সবচেয়ে বেশি।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পিঠে ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। আমাদের পিঠে বা মেরুদণ্ডে হাড়, পেশি, ডিস্ক, টেন্ডন ও লিগামেন্টের একটি জটিল কাঠামো রয়েছে, যা শরীরের ওজনকে সমর্থন করে এবং চলাফেরায় সক্ষম করে।
পিঠে ব্যথা মূলত ডিস্ক সার্জারি, ভারী ওজনের কিছু বহন করা, স্ট্রেন বা আঘাতের কারণে হয়ে থাকে। স্ট্রেস ও ভুল দেহভঙ্গিও পিঠের ব্যথার অন্যতম কারণ। নানা ধরনের বাত বা আর্থ্রাইটিসের কারণেও পিঠে ব্যথা হতে পারে।
পিঠ ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে করণীয়
ব্যথা হলে ঠান্ডা-গরম সেঁক প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। দিনে ২-৩ বার ২০ মিনিট করে ঠান্ডা সেঁক (আইস প্যাক) দিতে পারলে নিশ্চিতভাবে আরাম মিলবে। ধীরে ধীরে ব্যথা কমে এলে দিতে হবে গরম সেঁক।
স্ট্রেচিং করলে পেশিতে রক্ত চলাচল বাড়ে। যোগব্যায়ামে খুব ভালো স্ট্রেচিং হয়। বাড়িতে থেকেই সাধারণ কিছু স্ট্রেচ করে দেখতে পারেন। ঘুম থেকে ওঠার পর বিছানা ছাড়ার আগেই হাত দুটি টানটান করে মাথার ওপর তুলে দিন। পায়ের পাতা ঠেলে যত দূরে নিতে পারেন, নিয়ে যান। যতক্ষণ সম্ভব ধরে রাখুন। সোজা দাঁড়িয়ে হাত তুলে দিন মাথার ওপর, এরপর ধীরে ধীরে নামিয়ে এনে পায়ের পাতা ছুঁয়ে দিন। সর্বাঙ্গাসন, উষ্ট্রাসনও করতে পারেন।
একেবারে পিঠ টানটান করে চেয়ারে সোজা হয়ে বসুন। সামনের দিকে ঝুঁকে বা কুঁজো হয়ে বসলে পিঠের ওপর বেশি চাপ পড়ে। তাতে ব্যথা হয়। সোজা হয়ে বসলে ব্যথা হওয়ার সুযোগ থাকে না।
স্ট্রেস কমান। যথেষ্ট ঘুম দরকার।
বিছানা ও বালিশের কারণে ঘাড়ে-পিঠে ব্যথার অনুভূতি হতে পারে। বিছানা হতে হবে না নরম, না শক্ত। বালিশ অনেক উঁচু হবে না, যাতে মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে থাকে।
সোজা হয়ে ঘুমালে পিঠে কোনো সমস্যা হয় না। যাঁরা পাশ ফিরে শুতে অভ্যস্ত, তাঁরা কোলবালিশ ব্যবহার করুন।
দীর্ঘসময় ধরে ডেস্কে বা কম্পিউটারে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা কাজের মধ্যে বিরতি নিন। সামান্য স্ট্রেচিং করবেন। একটু ঘুরে হেঁটে আসবেন।
পুষ্টিকর সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ঢাকা