ফ্রোজেন শোল্ডারে ফিজিওথেরাপি

শোল্ডার জয়েন্ট বা কাঁধের জোড়ের একটি পরিচিত সমস্যা হলো অ্যাডহেসিভ ক্যাপসুলাইটিস বা পেরি-আর্থ্রাইটিস বা ফ্রোজেন শোল্ডার। কাঁধের জোড়ে ক্যাপসুল নামক একটি পদার্থ থাকে, যার কাজ হচ্ছে নড়াচড়ায় সাহায্য করা।

কোনো কারণে এই ক্যাপসুলে প্রদাহ হলে তখন একে অ্যাডহেসিভ ক্যাপসুলাইটিস বলা হয়। এ প্রদাহের কারণে যদি কাঁধের জোড়ের চারপাশে আর্থ্রাইটিস হয় বা প্রদাহ জয়েন্ট বা জোড় পর্যন্ত ছড়ায়, তবে এর স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে নষ্ট করতে থাকে। তখন একে বলা হয় পেরি–আর্থ্রাইটিস।

এরই পরবর্তী পর্যায়ে কাঁধের জোড়ের ভেতরকার তরল বা সাইনোভিয়াল ফ্লুয়িড ধীরে ধীরে শুকিয়ে গিয়ে কাঁধ শক্ত হয়ে যায়। এ অবস্থাকে বলা হয় ফ্রোজেন শোল্ডার।

কারণ

  • সাধারণত ৪০-৬০ বছর বয়সের মানুষ এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। নারীদের আক্রান্ত হওয়ার হার পুরুষদের তুলনায় বেশি। মেনোপজের পর ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন নামক হরমোনের ঘাটতির কারণে নারীরা এ সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হন।

  • আরও নানা কারণে ফ্রোজেন শোল্ডার হতে পারে। যেমন অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, স্ট্রোক–পরবর্তী সমস্যা, আঘাতজনিত সমস্যা, ভারী বস্তু বহন করা, কাঁধের অস্ত্রোপচার-পরবর্তী পর্যায়ে, ওপেন হার্ট সার্জারির পর, থাইরয়েডের সমস্যায়, কাঁধের জোড় সরে গেলে ইত্যাদি।

কীভাবে বুঝবেন

ফ্রোজেন শোল্ডার হলে হাত নড়াচড়া করতে কষ্ট হয়। হাত ওপরে ও নিচে নামাতে কাঁধে ব্যথা হয়। ব্যথা ক্রমে কনুই, ঘাড় ও পিঠে যেতে পারে। আক্রান্ত কাঁধে পাশ ফিরে শুতে কষ্ট হয়। আক্রান্ত হাতে জামা পরতে, হাত পেছনে নিয়ে পিঠ চুলকাতে বা চুল আঁচড়াতে কষ্ট হয়। এমনকি মুখ ধুতে ও দাঁত মাজতেও সমস্যা হতে পারে।

চিকিৎসা

  • ব্যথা কমাতে ব্যথানাশক বা এনএসএআইডি গোত্রের ওষুধ, সঙ্গে পেশি শিথিলায়নের জন্য মাসল রিলাক্স্যান্ট দরকার হয়। এর সঙ্গে কার্টিলেজ রিজেনারেটিভ ওষুধ, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি দেওয়া যায়। কখনো ইন্ট্রা আর্টিকুলার ইনজেকশন দিতে হতে পারে।

  • তবে এ সমস্যার মূল চিকিৎসা হলো ফিজিওথেরাপি। মেকানিক্যাল ও ম্যানুয়াল—দুই ধরনের থেরাপি রয়েছে। একজন অভিজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্ট আপনার সমস্যা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।

অধ্যাপক মো. আবু সালেহ আলমগীর, কনসালট্যান্ট ও বিভাগীয় প্রধান, ডিপার্টমেন্ট অব ফিজিওথেরাপি মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন, আমেরিকা-বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল, ঢাকা