ডেঙ্গু জ্বরের খাবার ব্যবস্থাপনার মূল উদ্দেশ্য থাকবে শরীরের ইমিউনিটি আরও শক্তিশালী করা, যেন শরীর ভাইরাসের বিরুদ্ধে দ্রুত অ্যান্টিবডি তৈরি করে ভাইরাসকে ধ্বংস করতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বরে বাড়ির স্বাভাবিক খাবারই খেতে পারবেন। তবে তরল খাবারে বেশি জোর দিতে হবে।
ডেঙ্গুতে যেহেতু অস্থিমজ্জা আক্রান্ত হয়, তাই অস্থিমজ্জার স্বাভাবিক কাজ ত্বরান্বিত করে এমন খাবার উপকারী। যথেষ্ট প্রোটিন, ভিটামিন বি১২, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন সি, আয়রন, ভিটামিন ডি, জিংক, ফসফরাস ইত্যাদি থাকলে ভালো। ডিম, সামুদ্রিক মাছ, ব্রকলি, ফুলকপি, ক্যাপসিকাম, পালংশাক, বাদাম, বিট, মটরশুঁটি, কলা, তরমুজ, পেঁপে, লেবু, মাল্টা ইত্যাদি এসব খাদ্য উপাদানের ভালো উৎস।
ফলিক অ্যাসিড ও ভিটামিন বি১২ প্লাটিলেট তৈরি করতে সহায়তা করে।
যেসব খাবার খাবেন
● ডেঙ্গু জ্বরের রোগীর জন্য শক্তির উৎস হিসেবে চিকেন ভেজিটেবল স্যুপ খুব ভালো। সবজি হিসেবে ব্রকলি, মটরশুঁটি, ক্যাপসিকাম ও বিট যোগ করলে ভালো। এ স্যুপ শরীরে তরল পদার্থের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি, অ্যান্টিবডি তৈরিতে সহায়তা করবে। শরীরে শক্তি জোগাবে।
● টক দই এক দিকে তরলের উৎস, অন্যদিকে এটি প্রোবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। পরিপাকতন্ত্রের ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে শরীর ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা পায়।
● অনেকের ধারণা, পেঁপের জুস অণুচক্রিকার সংখ্যা বাড়ায়। এ নিয়ে বিতর্ক আছে, বড় গবেষণা এখনো নেই। তবে এটি ভিটামিন বি১২ ও ফলিক অ্যাসিডের খুব ভালো উৎস।
● ভিটামিন বির উৎস হিসেবে ভাতের মাড় খুবই উপযোগী খাবার। এর সঙ্গে কিছু সেদ্ধ সবজি ও একটু লেবুর রস যোগ করলে গুণাগুণ আরও বেড়ে যায়।
● জাম্বুরা ভিটামিন সি এবং পটাশিয়ামের ভালো উৎস। শরীরে প্লাজমার সঙ্গে পটাশিয়াম বেরিয়ে যায়। পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণে জাম্বুরার জুস অত্যন্ত কার্যকর। সঙ্গে ভিটামিন এ, বি এবং সি পাওয়া যায়।
● অস্থিমজ্জার কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে আয়রন, ভিটামিন বি এবং ফসফরাসের প্রয়োজন। সব কটি উপাদান আনারের জুসে আছে। আনারের জুস অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি হিসেবে কাজ করে।
● কচি ডাবের পানি সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও অন্যান্য ইলেকট্রোলাইটসের ভালো উৎস। এটি ইলেকট্রোলাইটসের ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি তরলের ভারসাম্য রক্ষা করে। তবে অতিরিক্ত পান করা যাবে না।
কী খাবেন না
অতিরিক্ত মসলাদার খাবার, ভাজাপোড়া খাবার খাবেন না। কারণ, এসব খাবার হজমে অনেক পানির প্রয়োজন। এ সময়ে শরীরে এমনিতেই পানির ঘাটতি থাকে।
মো. ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল