নবজাতকের রক্তে গ্লুকোজ কমে যাওয়া

নবজাতকদের কারও কারও রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কম পাওয়া যায়। তবে কখনো কখনো এর কোনো উপসর্গ থাকে না, যদিও এর কারণে ব্রেইন বা মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়।

তাই নবজাতকের এ সমস্যা যথাসময়ে নির্ণয় করা, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া এবং তাৎক্ষণিক চিকিৎসা শুরু খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাতে করে পরবর্তী সময়ে শিশু স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশজনিত সমস্যায় না ভোগে।

জন্মের সময় ওজন যতটা বা গর্ভকাল যা–ই থাকুক না কেন, নবজাতকের রক্তে গ্লুকোজ মাত্রা ৪৫ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার (২.২ এমমোল/লিটার)–এর কম থাকলে তা গ্লুকোজের মাত্রা কম বলে গণ্য করা হয়।

যেসব নবজাতক ঝুঁকিতে

  • প্রি-টার্ম বা স্বল্প ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়া নবজাতক, বিশেষত নবজাতকের জন্মের সময়ের ওজন দুই হাজার গ্রামের কম হলে।

  • বিলম্বিত গর্ভকাল অর্থাৎ গর্ভকাল ৪২ সপ্তাহের বেশি হলে।

  • মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে।

  • যেকোনো অসুস্থ নবজাতক, যার চিকিৎসায় এনআইসিইউর প্রয়োজন পড়ে। যেমন জন্মকালীন শ্বাসরোধ, তীব্র শীতলতা, শিশুকে খাওয়ানোর সমস্যা, সেপসিস, শ্বাসকষ্ট প্রভৃতি।

  • মা বিটা-এড্রিনারজিক বা মুখে খাবার ডায়াবেটিস ওষুধ সেবন করে থাকলে। অথবা শিশু জন্মগত বেকউইথ–উয়েডম্যান সিনড্রোমে বা জন্মগত বিপাকপ্রক্রিয়ার অসুখে ভুগলে।

উপসর্গ

কোনো কোনো ক্ষেত্রে কোনো উপসর্গই থাকে না। শুধু রুটিন স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নির্ণয় করে এ রোগ ধরা পড়ে। এ জন্য জন্মের পরপরই পায়ের গোড়ালি থেকে এক ফোঁটা রক্ত নিয়ে গ্লুকোজ পরীক্ষা করা হয়।

এ ছাড়া যেসব উপসর্গ দেখা যায়—

  • শিশুর হাতে-পায়ে কাঁপুনি

  • নিস্তেজ ভাব

  • অনবরত কান্না

  • বুকের দুধ পান না করা

  • বমি, শ্বাসকষ্ট, নীল হয়ে যাওয়া

  • খিঁচুনি ও জ্ঞান লোপ (কোমা)

চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা

  • শিশু যদি বুকের দুধ খেতে সমর্থ থাকে, তবে শিশুকে তাৎক্ষণিকভাবে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করানো।

  • পরবর্তী সময়ে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের ব্যবস্থাপনায় যথাযথ নিয়মে গ্লুকোজের মাত্রা দেখা (মনিটরিং), শিরায় গ্লুকোজ প্রদান এবং সুনির্দিষ্ট কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা দিতে হবে।

অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল