চোখের নিচের কালো দাগ দূর করবেন কী করে

বিভিন্ন কারণেই চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল বা কালো দাগ পড়ে। ক্লান্তি বা অনিদ্রা যেমন দায়ী, তেমনি ভগ্নস্বাস্থ্য ও বয়স বৃদ্ধির নির্দেশকও এই দাগ।

কিছু কারণ

  • অতিরিক্ত ক্লান্তি, রাত জাগা, অবসাদ এবং অত্যধিক ঘুম চোখের নিচে কালি বা ডার্ক সার্কেল সৃষ্টি করে। ঘুমের অভাব ত্বককে ফ্যাকাশে এবং নিস্তেজ করে, চোখের নিচে ফোলা ভাব তৈরি করে, যা চোখের নিচে গাঢ় ছায়া ফেলে।

  • অ্যালার্জি বা চোখের শুষ্কতার কারণেও ডার্ক সার্কেল হতে পারে। অ্যালার্জির কারণে ত্বকে লালচে ভাব, চুলকানি এবং ফোলা চোখ হয়। অ্যালার্জি হলে রক্তে নিঃসৃত ভিটামিন রক্তনালিগুলোকে প্রসারিত করে বলে ত্বকের নিচ গাঢ় দেখায়।

  • বার্ধক্যে ডার্ক সার্কেল হওয়া স্বাভাবিক। সময়ের সঙ্গে পাতলা হয়ে যায় মানুষের ত্বক, হারায় কোলাজেন ও চর্বি। কোলাজেন ও চর্বি ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা রক্ষার জন্য দায়ী। এর প্রতিক্রিয়ায় রক্তনালিগুলো দৃশ্যমান হয় এবং চোখের নিচের অংশটি কালো দেখায়।

বিভিন্ন কারণেই চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল বা কালো দাগ পড়ে
ছবি: সংগৃহীত
  • পানিশূন্যতা বা পর্যাপ্ত পানি পান না করাও এ জন্য দায়ী। ডিহাইড্রেশন হলে চোখ অক্ষিকোটরে বসে যায় এবং কালো দেখায়।

  • চোখের স্ট্রেন আরেকটি সাধারণ কারণ। বেশি স্ক্রিনে বেশি সময় কাটালে ডার্ক সার্কেল দেখা দেয়। চোখের স্ট্রেন রক্তনালিগুলোকে বড় করে এবং তাদের চারপাশের ত্বককে কালো করে।

  • বেশি বেশি থাকলে শরীরে মেলানিনের উৎপাদন বেশি হয়। একই সঙ্গে চোখের চারপাশে পিগমেন্টেশন বা ত্বকের রং বদল বেড়ে যায়।

  • অনেকের মধ্যে এটা আবার পারিবারিক বা বংশগতভাবেই আছে।

যেভাবে কালো দাগ দূর করবেন

চোখের নিচে কালো দাগ কোনো মেডিকেল ইমার্জেন্সি নয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে, যদি সঙ্গে আরও কিছু অস্বাভাবিক উপসর্গ থাকে, যেমন চোখের নিচে ফোলা ভাব, শরীরে পানি আসা বা অতিরিক্ত ক্লান্তি, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন কালো দাগ কমাতে সাহায্য করবে। যেমন স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত পানি পান, যথেষ্ট ঘুম, ফিটনেস বজায় রাখা এবং শরীরচর্চা। স্ক্রিন টাইম (যেমন মুঠোফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার) সীমিত করুন। ঘুমাতে যাওয়ার আগে চোখের প্রসাধনী ভালো করে ওঠাবেন। ভিটামিন ই ক্যাপসুল, তেল বা ক্রিম ব্যবহার করা যায়।

কোল্ড থেরাপিও কার্যকর। একটি ঠান্ডা কম্প্রেস চোখের নিচের ফোলাভাব কমাতে এবং প্রসারিত রক্তনালিকে সংকুচিত করতে পারে। দিন শেষে ঠান্ডা টি ব্যাগ, শসা, হিমায়িত মটর বা বরফ একটি ওয়াশ ক্লথে মুড়ে চোখের পাতার ওপর কিছুক্ষণ রাখলে ফোলা ও কালি দূর হবে। একটি পাতলা অতিরিক্ত বালিশ ব্যবহার করে মাথা উঁচু করে শোয়া চোখের নিচে ফোলাভাব প্রতিরোধ করে। এটি চোখের নিচের কালো দাগ কমাতেও সাহায্য করতে পারে।

এ ছাড়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নানাভাবে সাহায্য করতে পারেন। যেমন লেজার সার্জারি ত্বকের টান টান ভাব বাড়াতে সাহায্য করে।