অস্টিওপোরোসিসে বেশি ঝুঁকিতে নারীরা
অস্টিওপোরোসিস হলে হাড়ের ঘনত্ব কমে হাড় পলকা (অত্যন্ত দুর্বল), ছিদ্রযুক্ত ও ভঙ্গুর হয়ে যায় এবং হাড় ভাঙার ঝুঁকি বাড়ে। বয়স্ক, বিশেষ করে বয়স্ক নারীদের ফ্র্যাকচার বা হাড় ভাঙার সবচেয়ে সাধারণ কারণ এটি। অস্টিওপোরোসিস হলে তা সহজে টের পাওয়া যায় না। হাড় না ভাঙা পর্যন্ত সাধারণত কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না। কিন্তু এ রোগে হাড় এতই দুর্বল হয়ে যেতে পারে যে সামান্য আঘাতে বা অনেক সময় এমনিতেই ভেঙে যায়।
হাড়ের ঘনত্ব পরিমাপের পরীক্ষা হলো বোন ডেনসিটি টেস্ট বা বিএমডি। এ পরীক্ষায় প্রাপ্তবয়স্কদের হাড়ের ঘনত্ব ২.৫ মান বিচ্যুতির নিচে হলে অস্টিওপোরোসিস রোগ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। সঠিক খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম, কায়িক পরিশ্রম, জীবনধারায় পরিবর্তন, যেমন ধূমপান ত্যাগ, মদ্যপান না করা, ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের ঝুঁকি চিহ্নিত করে চিকিৎসা করানোই অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধের উপায়।
অস্টিওপোরোসিস হলে সাধারণত যেসব জায়গার হাড় ভাঙে, সেগুলো হলো কশেরুকা, কবজি ও কোমর।
প্রতিরোধ কীভাবে
অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে ঝুঁকি শনাক্ত করা ও তা রোধ করা প্রথম পদক্ষেপ। জীবনধারায় পরিবর্তন, কায়িক পরিশ্রম, নিয়মিত ব্যায়াম, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ সুষম খাবার খাওয়া জরুরি।
ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের প্রয়োজনে ঝুঁকি চিহ্নিত করে চিকিৎসা নেওয়া উচিত। কারণ, একবার হাড় ভেঙে গেলে যেসব জটিলতার সৃষ্টি হয়, তার ব্যাপকতা অনেক।
বয়স্কদের অচল, শয্যাশায়ী বা কর্মক্ষমতাহীন হয়ে পড়ার অন্যতম কারণ হাড় ভেঙে যাওয়া। এতে প্রবীণদের মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ে। কাজেই সতর্ক থাকা প্রয়োজন। যাঁদের স্টেরয়েড ওষুধ সেবনের ইতিহাস আছে, ধূমপায়ী, খর্বাকৃতি ও কম ওজনের ব্যক্তি, মেনোপজের পর নারীদের এবং যাঁদের নানা রকম বাতরোগ আছে, তাঁরা এ রোগের বিশেষ ঝুঁকিতে আছেন। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে সচেতনতা প্রয়োজন।
ডা. মো. নূর আলম, অর্থোপেডিক ট্রমা ও স্পাইন সার্জন ও সিনিয়র কনসালট্যান্ট, আলোক হাসপাতাল লিমিটেড, মিরপুর-১০, ঢাকা