বিশেষ স্থানে চুলকানি হলে কী করবেন
পুরুষের নিম্নাঙ্গের নানা স্থানে বিভিন্ন সময় তীব্র চুলকানি দেখা দেয়। কর্মক্ষেত্রে, সামাজিক অনুষ্ঠানের মধ্যে, এমনকি পরিবারের সবার সামনে এমনটা যখন ঘটে, তখন অত্যন্ত বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। এ রকম চুলকানির কিছু কারণ রয়েছে। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ছাড়া আরও যেসব কারণ এ জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়, তা হলো ছত্রাকের আক্রমণ ও ট্রাইকোমোনিয়াসিস–জাতীয় পরজীবী বা প্যারাসাইটের আক্রমণ। এ ছাড়া যৌনাঙ্গে উকুন, খোসপাঁচড়া ও মাইকোপ্লাজমা জেনেটালিয়ামের সংক্রমণ হলে চুলকানি হতে পারে। কিছু যৌনরোগ, যেমন সিফিলিস, গনোরিয়া, এইডস ইত্যাদির কারণে যৌনাঙ্গে চুলকানি হতে পারে।
বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ, যেমন কোনো কোনো ডিটারজেন্ট, কেমিক্যাল, সুগন্ধিযুক্ত সাবান, রংওয়ালা টিস্যু পেপার, ফেমিনিন হাইজেনিক স্প্রে, ডুশ ইত্যাদি ব্যবহারে অ্যালার্জি হওয়ার কারণেও চুলকানি হতে পারে। ডায়াবেটিস, কিডনিরোগ, একজিমা ও রক্তের অন্যান্য রোগ থাকলেও যৌনাঙ্গে চুলকানি হয়। আঁটো পোশাক পরলে অথবা ওই স্থান যদি সব সময় আর্দ্র থাকে, তবে এসব সমস্যা বেশি হয়। পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতার অভাবও এ জন্য দায়ী।
প্রতিকার
ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টিফাঙ্গাল বা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ লাগানো বা খাওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে। কারণ নির্ণয় করে সে অনুযায়ী সমাধান করতে হবে।
প্রতিরোধের উপায়
সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। রঙিন ও বেশি সুগন্ধিযুক্ত টয়লেট টিস্যু ও সাবান ব্যবহার করবেন না। প্রয়োজন ছাড়া ফেমিনিন হাইজিন স্প্রে ও ডুশ ব্যবহার করবেন না। ভেজা কাপড় পরে বেশিক্ষণ থাকবেন না। ঘেমে গেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভেজা অন্তর্বাস পাল্টে নেবেন। সুইমিংপুলে সাঁতার কাটলে ক্লোরিনের কারণেও চুলকানি হতে পারে। তাই পুল থেকে উঠে ভালো করে গোসল করতে হবে। সব সময় সুতির কাপড় দিয়ে তৈরি অন্তর্বাস পরুন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ওজন কমান। নিয়মিত গোসল করুন। অন্তর্বাস নিয়মিত রোদে শুকাতে হবে, যাতে ব্যাকটেরিয়ামুক্ত হয়। যাঁরা এ সমস্যায় প্রতিনিয়ত ভোগেন, তাঁদের অবশ্যই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ দেখাতে হবে।
লেখক: ডা. দিদারুল আহসান, চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ, সিনিয়র কনসালট্যান্ট, আল-রাজী হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা।