ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার ২০ মিনিট পর থেকে আপনার শরীরে যা যা ঘটতে থাকে

ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার এক বছর পর হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমে যায়ছবি: পেক্সেলস

কথায় বলে, ধূমপান ছাড়া এতটাই ‘সহজ’ যে একটা মানুষ জীবনে বহুবার ধূমপান ছাড়েন!

প্রতিবার ধূমপানের ফলে প্রায় সাত হাজার রাসায়নিক পদার্থ মানবদেহে প্রবেশ করে। ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পর থেকে একজন ধূমপায়ীর শরীরে কী কী পরিবর্তন আসতে পারে, চলুন জেনে নিই।

প্রথম ২০ মিনিট পর

ধূমপানের সময় দেহে প্রবেশ করা নিকোটিন শরীরে এপিনেফ্রিন ও নরএপিনেফ্রিন তৈরি করে। যার ফলে রক্তনালি সরু হয়ে আসে এবং হৃদ্‌যন্ত্রের স্পন্দন বাড়িয়ে দেয়। হাত ও পা বেশ ঠান্ডা হয়ে আসে। ধূমপান ত্যাগের ২০ মিনিটের মাথায় আমাদের শরীরের রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিক হয়ে আসে। হাত ও পায়ের তাপমাত্রাও স্বাভাবিক হয়ে যায়।

২ ঘণ্টা পর

ধূমপান ছেড়ে দেয়ার ২ ঘন্টা পর দেহে শরীরে নিকোটিনের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়। নিকোটিন অনেক বেশি ডোপামিন ক্ষরণ ত্বরান্বিত করে। ধূমপান ছেড়ে দিলে ডোপামিন ক্ষরণ আগের চেয়ে কমে গিয়ে কিছু শারীরিক পরিবর্তন ঘটায়। ফলে মুড সুইং, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।

৮ ঘণ্টা পর

ধূমপানের ফলে দেহে প্রবেশ করে ক্ষতিকর কার্বন মনোক্সাইড। ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার আট ঘণ্টা পর শরীর থেকে কার্বন মনোক্সাইড বের হয়ে যায়, রক্তে অক্সিজেন প্রবেশ করে কার্বনের মাত্রা স্বাভাবিক করে তোলে।

২৪ ঘণ্টা পর

২৪ ঘণ্টা পর বেশি বেশি কাশি হওয়া শুরু হয়। মূলত কাশির ফলে ফুসফুসে থাকা বিষাক্ত পদার্থ দূর হয়। এ ছাড়া করোনারি রক্তনালির রোগের ঝুঁকি কমে যায়।

৪৮ ঘণ্টা পর

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শরীর থেকে নিকোটিনসহ সব ক্ষতিকর রাসায়নিক দূর হয়। ক্ষতিগ্রস্ত স্নায়ু সুস্থ হতে শুরু করে। ক্ষতিগ্রস্ত জিহ্বার স্বাদকুঁড়িগুলো নতুন করে প্রাণ ফিরে পায়।

৭২ ঘণ্টা পর

৭২ ঘণ্টা পর শরীরে নিকোটিনের চাহিদা সর্বোচ্চ হয়। ফলে মাথাব্যথা, বমিভাব, বিষণ্নতা আর অস্থিরতা দেখা দেয়।

১ মাস পর

১ মাসের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিস, ক্যানসার ও কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমে যায়।

৩ থেকে ৯ মাস

৩ থেকে ৯ মাস পর ফুসফুসের ক্ষতিগ্রস্ত সিলিয়া অনেকটাই সেরে ওঠে। ফলে কাশি, পুরো শ্বাস নিতে না পারার সমস্যা কমে যায়, সেরেও যায়।

১ বছর

এক বছর পর হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমে যায়। এ সময় ধমনির ভেতরে চর্বি বা অ্যাথেরোমা অর্ধেকের বেশি কমে যায়।

১০ বছর

ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার ১০ বছর পর ফুসফুস ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা ৫০%–এর বেশি কমে যায়।

১৫ বছর

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও দূর হয়ে যায় এ সময়। অনেকটা একজন অধূমপায়ীর মতোই ঝুঁকিমুক্ত হয়ে ওঠেন ধূমপান ছেড়ে দেওয়া ব্যক্তি।

সূত্র: অ্যাসাপসায়েন্স–এর ইউটিউব চ্যানেল