সাধারণ কফি না ইনস্ট্যান্ট, কোনটি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো
সকালে কফির কাপে চুমুক না দিলে অনেকের দিনই যেন শুরু হয় না; কিন্তু কর্মব্যস্ত এই জীবনে কফি বিন থেকে কফি তৈরি করার সুযোগ কোথায়? তাই কফিপ্রিয় মানুষ বেছে নিয়েছেন ইনস্ট্যান্ট কফি। কফি খেতে মন চাইছে? এক গ্লাস গরম পানির সঙ্গে ইনস্ট্যান্ট কফিই যথেষ্ট; কিন্তু সাধারণ কফির সঙ্গে ইনস্ট্যান্ট কফির পার্থক্য কী? এই কফির জনপ্রিয়তার পেছনে কি শুধুই কর্মব্যস্ততা?
ইনস্ট্যান্ট কফি কী?
এক বাক্যে কফির শুকনা রূপ হলো ইনস্ট্যান্ট কফি। ইনস্ট্যান্ট কফি তৈরির জন্য কফিবীজ প্রথমে ভাঙা হয়। এরপর তা শুকিয়ে বীজ থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে নেওয়া হয়। ফলে পরে গরম পানি ঢেলে দিলেই তা সহজে পানিতে গলে যায়। নিমেষেই তৈরি হয়ে যায় ইনস্ট্যান্ট কফি।
ইনস্ট্যান্ট কফি মূলত দুইভাবে তৈরি করা হয়, ‘স্প্রে ডায়িং’ ও ‘ফ্রিজ ডায়িং’।
স্প্রে ডায়িং–পদ্ধতিতে কফি গরম বাতাসের সাহায্যে মিহি পাউডারে রূপান্তরিত করা হয়। এরপর পানি আর কফি আলাদা করা হয় মেশিনের সাহায্যে। ইনস্ট্যান্ট কফি তৈরি করার জন্য ‘স্প্রে ডায়িং’ যেমন সহজলভ্য, তেমনই সময়সাশ্রয়ী। তবে অতিরিক্ত গরমে অনেক সময়ই কফি তার প্রাকৃতিক গন্ধ হারিয়ে ফেলে। ‘স্প্রে ডায়িং’ ইনস্ট্যান্ট কফিতে গন্ধ ও স্বাদের কিছু তারতম্য হয়ে থাকে।
ফ্রিজ ডায়িং–পদ্ধতি সে তুলনায় বেশ সময়সাধ্য ও ব্যয়বহুল। এই পদ্ধতিতে ঠান্ডা বাতাসের সাহায্যে কফি শুকিয়ে মিহি দানায় পরিণত করা হয়। এরপর কম তাপমাত্রায় তা শুকানো হয়। তবে এই পদ্ধতিতে কফির গন্ধ ও স্বাদ পুরোটাই অক্ষত থাকে। যে কারণে বাজারে এর দামও তুলনামূলক বেশি।
সাধারণ কফি বনাম ইনস্ট্যান্ট কফি
ইনস্ট্যান্ট কফি আর সাধারণ কফির মধ্যে যে খুব বড় পার্থক্য আছে, ব্যাপারটা তেমন নয়; বরং মূল পার্থক্য দুটি তৈরির প্রসেসে। সাধারণ কফি তৈরি করতে যে সময় ও শ্রমের দরকার হয়, ইনস্ট্যান্ট কফিতে তার তিলমাত্রও লাগে না। শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তির জন্য কফির বিকল্প নেই; কিন্তু সেই কফি বানাতেই যদি শরীরের সব শক্তি ক্ষয় হয়ে যায়, তবে তা নিশ্চয় খুব একটা সুখকর হবে না।
গন্ধ ও স্বাদে পার্থক্য থেকে যায়। সাধারণ কফি থেকে তৈরি হওয়া প্রাকৃতিক নির্যাস ও তেল ইনস্ট্যান্ট কফিতে পাওয়া যায় না। এ ছাড়া স্বাস্থ্যগত দিকেও কিছু পার্থক্য রয়েছে।
ইনস্ট্যান্ট কফির উপকারিতা
সাধারণ কফিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইনস্ট্যান্ট কফিতে আলাদা করে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট যোগ করা হয়, এতে ইনস্ট্যান্ট কফির গুণগত মান বৃদ্ধি পায়।
অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ওজন নিয়ন্ত্রণ ও মানসিক চাপ সামলাতে বেশ সহায়তা করে। এ ছাড়া আলঝেইমার কিংবা পার্কিনসনসের মতো স্নায়ু রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে কফি।
ইনস্ট্যান্ট কফিতে ক্যাফেইনের পরিমাণও তুলনামূলক কম থাকে। এক গ্লাস কফিতে প্রায় ৯২ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে। সেখানে ইনস্ট্যান্ট কফিতে থাকে ৬২ গ্রাম। যদিও ভিন্ন ভিন্ন ব্র্যান্ডের কফিতে পরিমাণ একটু ওঠানামা করে; কিন্তু সাধারণত ইনস্ট্যান্ট কফিতে ক্যাফেইনের পরিমাণ বেশ কম থাকে।
ক্যাফেইনের পরিমাণ তুলনামূলক কম বলে যে কফির কাজ করতে পারে না; তা কিন্তু নয়। শরীরকে চাঙা করতে বা ইনস্ট্যান্ট এনার্জির জন্য ইনস্ট্যান্ট কফিই যথেষ্ট।
তথ্যসূত্র: হেলথ ডট কম