মেছতা নিয়ে কিছু কথা

মেছতা বা মেলাসমা বেশ বিব্রতকর সমস্যা। মেছতা পড়লে মুখমণ্ডলের দুইপাশে উঁচু জায়গায়, চিবুকের পাশে বা কপালে ছোপ ছোপ বাদামি রঙের দাগ দেখা যায়। সাধারণত মধ্যবয়সী নারীদের এটি বেশি হয়। পুরুষদের যে একেবারে হয় না, তা নয়।

মেছতার প্রকৃত কারণ এখনো অজানা। তবে বিশেষ করে দুটি কারণে এটি বেশি হয় বলে শনাক্ত করা গেছে। একটি হলো, সান এক্সপোজার বা সূর্যের কিরণ ও অন্যটি হরমোনের প্রভাব। যাঁরা রোদে বেশি সময় থাকেন, তাঁদের আলট্রাভায়োলেট লাইট রেডিয়েশনের জন্য মেছতা হতে পারে। আবার যেসব নারী জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবন করেন বা হরমোন ইনজেকশন নেন, তাঁদের এবং অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ইস্ট্রোজেন হরমোনের আধিক্যে মেছতা হয়ে থাকে। এ ছাড়া কিছু হরমোনজনিত রোগ এবং ওষুধ, যেমন ফেনিটয়েন, ফিনেস্টেরাইডের কারণেও এটি হতে পারে।

চিকিৎসা

  • রোদে গেলে ঘর থেকে বের হওয়ার ৩০ থেকে ৪০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। আমাদের দেশের আবহাওয়া ও আমাদের চামড়ার ধরন অনুসারে কমপক্ষে এসপিএফ ৩০ প্লাসের ওপর এবং এসপিএফ ৫০ প্লাস হলে ভালো হয়।

  • দাগ দূর করতে হাইড্রোকুইনোলন ২ থেকে ৪ শতাংশ যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করা যায়। যেসব ক্রিমে হাইড্রোকুইনোলনের সঙ্গে স্টেরয়েড ও ট্রেটিনয়েন যুক্ত থাকে সেগুলোর ব্যবহারে সফলতা বেশি।

  • সার্জিক্যাল বা মেডিকেল পিলিং করা যায়।

  • বিশেষ ক্ষেত্রে লেজার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

পরিত্রাণের উপায়

  • রোদে কম যাওয়া বা রোদে বের হলে সানস্ক্রিনের যথাযথ ব্যবহার করা।

  • ঘরের বাইরে গেলে মুখমণ্ডল ঢাকবেন, ছাতা বা বড় হ্যাট ব্যবহার করবেন।

  • মেছতা পড়লে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি বা ইনজেকশনের পরিবর্তে বিকল্প পদ্ধতি গ্রহণ করবেন।

কোনো হরমোনজনিত সমস্যা আছে সন্দেহ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। শুরুতে চিকিৎসা নিলে স্থায়ী দাগ পড়া থেকে মুক্ত থাকা যায়।

  • ডা. মো. মোশাররফ হোসেন, চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ, সিনিয়র কনসালট্যান্ট, আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর, ঢাকা