ঘামাচি হলে কী করবেন

কখনো একপশলা বৃষ্টি, কখনো ভ্যাপসা গরম। এই গরমে ঘামাচিতে কষ্ট পান অনেকেই। ঘরোয়া কিছু নিয়মে ত্বকের এই সমস্যা দূর হবে।

ঘামাচি হলে ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে
ছবি: প্রথম আলো

ঘামাচি কেন হয়

ত্বকের লোমকূপ দিয়ে ঘাম বের হয়। ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায়। ঘামে থাকা লবণের জন্য লোমকূপ যদি বন্ধ হয়ে যায়, ঘাম শরীর থেকে বের হতে না পেরে ত্বকে ঘামাচি তৈরি করে, জানালেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ফারজানা রহমান। তিনি জানান, অতিরিক্ত গরমে বড়–ছোট সবারই ঘামাচি হতে পারে। তাই ঘামাচি হওয়ার আগেই সচেতন থাকতে হবে।

ঘরোয়া উপায়

  • পরিচ্ছন্নতা ঘামাচি কমানোর সবচেয়ে ভালো উপায়। আক্রান্ত স্থান সব সময় পরিষ্কার রাখুন। দিনে দুইবার পোশাক পরিবর্তন করুন। পরিষ্কার পোশাক পরুন।

  • ঘামাচির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে গরমে ঢিলেঢালা সুতির পোশাক বেছে নিন।

  • লেবুপানি, ডাবের পানির মতো পানীয় বেশি করে পানের অভ্যাস করুন।

  • এসির ঠান্ডা পরিবেশে বা ফ্যানের নিচে থাকতে হবে।

ঠান্ডা পরিবেশে থাকার চেষ্টা করুন
ছবি: প্রথম আলো
  • বেশি গরম পড়লে দিনে দুই থেকে তিনবার গোসল করা যেতে পারে। ব্যায়াম করার পরপরই গোসল করে নিন।

  • ট্যালকম পাউডার বা প্রিকলি হিট সাবান ব্যবহার করা যেতে পারে। শিশুদের পাউডার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধান থাকতে হবে, যাতে নাকে-চোখে না যায়।

  • অতিরিক্ত চুলকানি থেকে আরাম পেতে ব্যবহার করা যেতে পারে ক্যালামাইন লোশন।

  • এরপরও যদি অতিরিক্ত ঘামাচি দেখা যায়, তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

ঘামাচির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে গরমে ঢিলেঢালা সুতির পোশাক বেছে নিন
ছবি: প্রথম আলো

ঘরোয়া কিছু উপায়েও আরাম পাওয়া যাবে। অ্যালোভেরা জেল ঘামাচির জায়গায় লাগালে আরাম পাবেন। কয়েক দিন শরীরে নিয়মিত অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করলে ঘামাচি কমে যাবে অনেকটাই। জেল শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

অনেকেরই মুখে ঘামাচি হয়। সে ক্ষেত্রে তুলসীপাতা পেস্ট, কচি লাউ পেস্ট ও আতপ চালের গুঁড়া মিশিয়ে প্যাক বানাতে পারেন। এই তিন উপকরণ একই অনুপাতে নিয়ে, মিশিয়ে, ব্যবহার করলে মুখের ঘামাচি কমে যাবে।

নিমপাতায় আছে ছত্রাক প্রতিরোধক উপকরণ, যা ঘামাচি নিরাময়ে সহায়তা করে। নিমপাতার পেস্ট শরীরে লাগিয়ে সম্পূর্ণ শুকাতে হবে। এভাবে চার থেকে পাঁচবার দিনে ব্যবহার করতে পারেন।

এ ছাড়া এক মুঠ নিমপাতা নিয়ে ২ কাপ পানিতে ২০ মিনিট সেদ্ধ করতে হবে। এরপর সেই পানি ঠান্ডা করে একটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ঘামাচির জায়গায় ৫ থেকে ১০ মিনিট ধরে লাগাতে হবে। এভাবে দিনে চার থেকে পাঁচবার করতে পারলে ভালো।

পরিচ্ছন্নতা ঘামাচি কমানোর সবচেয়ে ভালো উপায়, গোসল করুন নিয়মিত
ছবি: প্রথম আলো

আরও কিছু

  • অতিরিক্ত খারাপ অবস্থা হলে কোনো রকম প্রসাধনী ব্যবহার করা যাবে না। তবে স্টেরয়েড মলম বা ক্যালামাইন লোশন ব্যবহার করতে পারেন।

  • ঘামাচি হলে নাইলনের কাপড় পরা থেকে বিরত থাকুন।

  • চেষ্টা করুন ঘর যেন স্যাঁতসেঁতে না থাকে।

  • ভুল করেও নখ দিয়ে ঘামাচি চুলকাবেন না।