খাওয়ার পর ঘুম পায় কেন?
দুপুরের খাবার খেয়ে বিপুল উদ্যমে অফিসের ডেস্কে এসে বসেছেন, ভাবছেন ফেলে রাখা কাজগুলো একঝটকায় করে ফেলবেন। কথায় আছে, পেট শান্তি তো শরীর শান্তি। কিন্তু কাজ করবেন কি, দুই চোখের পাতা খোলা রাখাটাই যে দায় হয়ে উঠেছে। কেন এমন হয়? খাওয়ার পরই কেন দুই চোখে হানা দেয় ঘুম?
কেন হয়?
বাসায় থাকলে অনেকেই দুপুরে খাবারের পর শরীরটা বিছানায় এলিয়ে দেন। বলতে গেলে শরীরকে ছোটখাটো একটি ব্রেক দেন। বাংলা ভাষায় একে বলে ‘ভাতঘুম’। খাওয়ার পর ঘুম পাওয়ার পেছনে নির্ভর করে কী খাচ্ছেন ও কখন খাচ্ছেন, তার ওপর। আমাদের শরীরে একটি নির্দিষ্ট স্লিপ সাইকেল রয়েছে। দুপুরবেলা আমাদের শরীরের তাপমাত্রা একটু কমে যায়, ফলে শরীরে ক্লান্তি ভর করে। সেই সঙ্গে যুক্ত হয় দুপুরের খাবার।
খাবার হজম করতে শরীরকে বেশ ভালো পরিমাণ শক্তি খরচ করতে হয়। কাজের মধ্যে থাকায় পাকস্থলী চায় দ্রুত খাদ্য হজম করতে, তখন শরীরের রক্তপ্রবাহের বেশির ভাগ পাকস্থলীর দিকে চালিত হয়। ঠিক সে সময়টায় শরীরে ঘুম ঘুম ভাব আসে। এ ছাড়া খাবার বাছাইও প্রভাব ফেলে ঘুমের ওপর। বিশেষ করে হাই কোলেস্টেরল ও কম প্রোটিনের খাবারে ক্লান্তি বেশি অনুভূত হয়। রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, যা শরীরকে ক্লান্ত করে তোলে।
কীভাবে ক্লান্তি দূর করবেন?
স্বাস্থ্যকর, সুষম খাদ্য বাছাই করুন
দুপুরের খাবারের জন্য সুষম খাবার বাছাই করুন। প্রোটিনযুক্ত স্বাস্থ্যকর খাবার শরীরে চিনির পরিমাণ স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করে। ফলে মধ্যাহ্নভোজের পরপর সহজে শরীরে ক্লান্তি ভর করে না। দুপুরে কাজের চাপ থাকলে ভারী চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। কারণ, খাবারগুলো শরীরকে আরও ক্লান্ত করে।
পর্যাপ্ত পানি খান
কাজের চাপে অনেকেই পর্যাপ্ত পানি খেতে ভুলে যান। ফলে পানির অভাবে শরীর ক্লান্ত বোধ করতে পারে। ক্লান্ত বোধ না করতে চাইলে সারা দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেতে ভুলবেন না। তবে ক্লান্তি দূর করতে ক্যাফেইন–জাতীয় পদার্থ গ্রহণ করবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। সাময়িকভাবে ক্লান্তি কাটলেও সামগ্রিক ঘুমের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
হাঁটাহাঁটি করুন
ব্যায়াম রক্ত চলাচল ও শরীরে শক্তির মাত্রা বাড়াতে বেশ সাহায্য করে। তাই দুপুরের খাবারের পর কিছুক্ষণ হাঁটলে তা ক্লান্তি দূর করে।
পর্যাপ্ত ঘুমান
দুপুরে খাবারের পর ঘুম আসার আরেকটি কারণ হতে পারে রাতে অপর্যাপ্ত ঘুম। রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে সারা দিন তার প্রভাব থাকে। ফলে খাওয়ার পর যখন শরীরের তাপমাত্রা সামান্য কমে যায়, তখন ঘুম পায়। রাতে পর্যাপ্ত ঘুম, দিনের ক্লান্তি অধিকাংশ দূর করে।