ডেঙ্গু হলে জ্বর, মাথার ব্যথা, গা-হাত-পা ব্যথা, অস্থি সন্ধিতে ব্যথা, চোখের পেছন দিকে ব্যথা, পিঠে ব্যথা হতে পারে।
ব্যথা এতটাই তীব্র হয় যাকে বলে হাড় মুড়মুড়ে ব্যথা। পাশাপাশি ক্ষুধামান্দ্য, অরুচি, বমি ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। সর্দি, কাশি, গলার ব্যথা, চোখ থেকে পানি ঝরা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া এ রোগের উপসর্গ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। তবে জ্বর, মাথারব্যথা ও লাল ছোপ ছোপ দাগ ডেঙ্গু রোগের তিনটি প্রধান লক্ষণ।
জ্বর সেরে গেলেই শুরু হয় বিপর্যয়। একে বলা হয় সংকটপূর্ণ সময়। এ পর্যায়ে হতে পারে ডেঙ্গুজনিত রক্তক্ষরণ ও ডেঙ্গু শক সিনড্রোম।
বাড়িতে কী করবেন
ডেঙ্গুর মৌসুমে জ্বর ও অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিলে প্রথম বা দ্বিতীয় দিনেই ডেঙ্গু এনএসওয়ান টেস্ট করে ফেলুন।
রোগীকে শারীরিক ও মানসিক বিশ্রামে রাখতে হবে। জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল–জাতীয় ওষুধ সেবন করতে পারবে। ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ চারবার।
বারবার গা মুছতে হবে ফ্যানের নিচে রেখে। কপালে জলপট্টি দিতে হবে।
পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। এ ছাড়া ডাবের পানি, খাওয়ার স্যালাইন, স্যুপ, দুধ, শরবত, ফলের রস ইত্যাদি পান করতে হবে।
ব্যথানাশক বড়ি বা এসপিরিন–জাতীয় ওষুধ সেবন করা যাবে না।
অনেক শিশুর তাপমাত্রা বেড়ে গেলে খিঁচুনি দেখা দেয়। এমনটি হলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ডেঙ্গু জ্বর যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর শরীর আরও খারাপ হতে থাকলে অবশ্যই সতর্ক হোন। রক্ত পরীক্ষা করে অনুচক্রিকা ও হেমাটোক্রেটের পরিমাণ জেনে নিতে হবে। রক্তের অনুচক্রিকা কমতে থাকলে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে। অনুচক্রিকা ১০ হাজারের নিচে নেমে গেলে কিংবা রক্তক্ষরণ শুরু হলে রক্ত দিতে হতে পারে।
জেনে রাখুন বিপদ চিহ্ন
তীব্র ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। তাই ডেঙ্গুর বিপদ চিহ্ন অবশ্যই খেয়াল করতে হবে।
এগুলো হলো তীব্র মাত্রায় পেটের ব্যথা, ২৪ ঘণ্টায় তিনবারের বেশি বমি, কিছু খেতে না পারা, দাঁতের গোড়া অথবা নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ, বমি কিংবা পায়খানার সঙ্গে রক্তক্ষরণ, শ্বাসকষ্ট, প্রচণ্ড দুর্বলতা, খিটখিটে মেজাজ ও অস্থিরতা, অসংলগ্ন কথাবার্তা, জ্বর থেকে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নিচে নেমে যাওয়া, রক্তে অনুচক্রিকার পরিমাণ খুব দ্রুত হ্রাস পাওয়া কিংবা রক্তে হেমাটোক্রিট বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি।
লে. কর্নেল ডা. নাসির উদ্দিন আহমদ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সিএমএইচ