আপনি মানসিকভাবে অবসন্ন কি না বুঝবেন যেভাবে

অবসন্নতার লক্ষণ দেখা দিলে তা কাটিয়ে ওঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। মডেল: জেবুন্নেসা বেগমছবি: সুমন ইউসুফ

কর্মব্যস্ত দিন পেরিয়ে ক্লান্তি সঙ্গী হতেই পারে। সেটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু মাঝেমধ্যে কি আপনি খুবই অবসন্ন হয়ে পড়েন? অবসন্নতা আপনার স্বাভাবিক কর্মদক্ষতার পথে এক মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা হয়ে উঠতে পারে। সাধারণ কিছু লক্ষণ দেখেই কিন্তু আপনি ধারণা করতে পারবেন আপনি অবসন্ন হয়ে পড়ছেন কি না। অবসন্নতার লক্ষণ দেখা দিলে তা কাটিয়ে ওঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। জেনে নিন এমন কিছু লক্ষণ।

তিরিক্ষি মেজাজ, অল্পতেই ধৈর্যচ্যুতি

অবসন্ন অবস্থায় আপনি মেজাজ হারাতে পারেন খুব সহজেই। অল্পতেই রেগে যাওয়ার অনেক কারণের ভেতর অবসন্নতাও একটি। সামান্য বিষয় নিয়ে মেজাজ হারানোটা কিন্তু সামান্য ব্যাপার নয়। চেনা-অচেনা মানুষের সঙ্গে নিজের আচরণ নিয়ে একটু ভাবুন। ছোটখাটো বিষয়ে ধৈর্য ধরতে না পারাটা অস্বাভাবিকতা।

খাদ্যাভ্যাসে অনিচ্ছাকৃত পরিবর্তন

আপনি নিজের অজান্তেই বারবার খাবার খাচ্ছেন কি? অবসন্ন অবস্থায় আপনি অতিরিক্ত চিনি, লবণ বা চর্বিযুক্ত সুস্বাদু খাবারের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করতে পারেন। আবার কেউ কেউ অবসন্ন অবস্থায় খাওয়ার রুচিও হারিয়ে ফেলেন।

প্রায়ই ভুল করা, মনোযোগ দিতে না পারা

কেউই ভুলের ঊর্ধ্বে নন। কাজের মধ্যে ভুল হতে পারে যে কারোরই। কিন্তু প্রায়ই নানান ভুল হওয়াটা অবসন্নতার লক্ষণ হতে পারে। অবসন্ন ব্যক্তি নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে মনোযোগ দিতে সমস্যায় পড়েন। এমনকি যে বিষয়ে তিনি দক্ষ, সেই কাজও সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে মুশকিলে পড়তে পারেন তিনি।

দুশ্চিন্তা বা বিষণ্নতায় ভোগা

সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করতে পারেন অবসন্ন ব্যক্তি। আবার তিনি মানসিকভাবে এতটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারেন, যাতে তিনি বিষণ্ন অনুভব করেন। সব মিলিয়ে মানসিকভাবে ভালো থাকেন না একজন অবসন্ন মানুষ।

ঘুমাতে না পারা

ক্লান্ত অবস্থায় আপনি সহজেই ঘুমিয়ে পড়তে পারেন। কিন্তু অবসন্ন হয়ে পড়লে আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। আর ভালোভাবে না ঘুমাতে পারার কারণে অবসন্ন ব্যক্তির সমস্যাগুলো আরও বাড়ে।

অস্বাভাবিক ব্যথা, শরীরচর্চায় বাধা

ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা সবার এক নয়। তবে একজন ব্যক্তি স্বাভাবিক অবস্থায় যতটা ব্যথা সহ্য করতে পারেন, অবসন্ন অবস্থায় তা পারেন না। প্রায়ই টুকটাক ব্যথার সমস্যায় ভুগতে পারেন অবসন্ন ব্যক্তি। শরীরচর্চার যে মাত্রায় তিনি অভ্যস্ত, সেটুকুও তাঁর কাছে খুব কঠিন মনে হতে পারে।

এমন কিছু গ্রহণ করা, যা স্বাস্থ্যহানিকর

অবসন্ন ব্যক্তির মধ্যে নেশাদ্রব্য গ্রহণ এবং অতিরিক্ত মাত্রায় কোনো ওষুধ সেবনের প্রবণতা তৈরি হতে পারে। এ ধরনের প্রবণতা থাকলে নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি আরও একটু বেশি যত্নশীল হতে হবে আপনার। এমনকি বিশেষজ্ঞের পরামর্শের প্রয়োজনও হতে পারে।

অবসন্নতার কোনো লক্ষণ দেখা দিলে রোজকার কাজ থেকে খানিক বিরতি নিন। নিজের ভালো লাগার কাজ করুন। পছন্দের অডিও ক্লিপ শুনুন। বই পড়ুন। প্রকৃতির মধ্যে সময় কাটাতে পারেন। আর অবশ্যই নিজের পুষ্টি, বিশ্রাম এবং কায়িক শ্রমের ভারসাম্যের প্রতি মনোযোগী হোন। কাজে মনোযোগ বাড়ানোর নানান পদ্ধতিও প্রয়োগ করতে পারেন।

সূত্র: ওয়েবএমডি

আরও পড়ুন