রাতের যেসব অভ্যাসে দূর হবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা
রাতে খেয়েদেয়ে শোয়ার পর অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। তাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে, ফলে ক্লান্তি থেকে যায়। আবার এই সমস্যা মেটাতে গ্যাসের ওষুধ খাওয়ার প্রবণতাও বাড়ে। দীর্ঘদিন ধরে গ্যাসের ওষুধ খেলে দেখা দেয় নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। অথচ রাতের জীবনধারায় খুব সাধারণ কিছু বিষয় অভ্যাস করলেই অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমে বা দূর হয়। গ্যাসের ওষুধ সেবনের প্রয়োজনীয়তাও খুব একটা থাকে না। এমন কিছু ভালো অভ্যাস সম্পর্কে জানালেন ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. সাইফ হোসেন খান।
রাতের খাবার খান শোয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা আগে
খাওয়ার পরপরই শোবেন না। এতে অ্যাসিডিটির প্রবণতা বাড়ে। এমনভাবে খাওয়ার সময়টা নির্ধারণ করুন, যাতে শোয়ার আগে অন্তত দুই ঘণ্টা সময় থাকে হাতে। অর্থাৎ সব কাজ করে এরপর খাওয়াদাওয়ার পর্ব সারবেন, এমন ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
ভরপেট খাবেন না
রাতে হালকা খাবার খান। কম তেলে রান্না করা, সহজপাচ্য খাবার খেতে হবে রাতে। রাতে নেমন্তন্ন থাকলেও চেষ্টা করুন হালকা খাবার বেছে নিতে। ভাজাপোড়া এবং অতিরিক্ত তেল–মসলা দেওয়া খাবার এড়িয়ে চলুন। রাতে পেটের খানিকটা অংশ খালি রেখে খাওয়ার অভ্যাস করাই ভালো।
খাওয়ার অন্তত ২০ মিনিট পর পানি খান
খাওয়ার পরপরই পানি খাবেন না। অন্তত ২০ মিনিট পর পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন। খাওয়ার আগে পানি খেতে চাইলে সেটিও খাওয়া শুরু করার অন্তত ২০ মিনিট আগে খেয়ে নিন। খাওয়ার মাঝখানে পানি খাবেন না, প্রয়োজন হলে কেবল সামান্য পানি খাবেন খাওয়ার মাঝখানে।
খাওয়ার পর হাঁটুন
রাতে খাওয়ার পর হাঁটার অভ্যাস করুন। তাতে আপনার হজমপ্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে। সার্বিকভাবেই শরীরটা সুস্থ থাকবে। বাইরে হাঁটতে যেতে পারেন, যেতে পারেন বাড়ির ছাদ, লন কিংবা বারান্দায়। তেমন সুযোগও যদি না থাকে, তাহলে ঘরেই হাঁটুন। মাত্র ১০ মিনিটের এই হাঁটাহাঁটির অভ্যাসই হতে পারে সুস্থতার চর্চা।
টক দই বা মৌরি খান
খাওয়ার সময় কিংবা খাওয়া শেষে টক দই খেতে পারেন। কিংবা খাওয়ার পর সামান্য মৌরি চিবোতে পারেন। এ দুটি উপাদান হজম–সহায়ক। তবে দীর্ঘমেয়াদি কিডনির রোগ থাকলে মৌরি খাওয়া যাবে না। কেউ কেউ অবশ্য খাওয়ার পর মিষ্টান্ন খান। তাতে হজমে খানিকটা সহায়তা হলেও মনে রাখতে হবে, রোজ মিষ্টান্ন খাওয়া সবার জন্য ভালো অভ্যাস নয়।
সন্ধ্যায় পানি খান
হজমপ্রক্রিয়া ঠিক রাখার জন্য সারা দিনে পর্যাপ্ত পানি খাওয়া প্রয়োজন। সকাল, দুপুর কিংবা রাতের খাবারের মিনিট বিশেক পর তো বটেই, এসব খাবারের মাঝের লম্বা বিরতিতেও কিন্তু সঠিকভাবে পানি খেতে হবে। ধরুন, আপনি বিকেলে বা সন্ধ্যায় অবসর সময় কাটাচ্ছেন। সেই সময়ও খানিকটা পানি খেয়ে নিন। হজমে সাহায্য হবে। একইভাবে বেলা ১১টার দিকেও খানিকটা পানি খেতে পারেন। সারা দিনে এবং সারা রাতেই সুবিধাজনক সময়ে অল্প করে পানি খেতে পারেন।
রাতে যোগব্যায়ামের চর্চা করুন
যোগব্যায়ামের এমন কিছু পদ্ধতি আছে, যেসব হজমে সহায়তা করে। একজন দক্ষ প্রশিক্ষকের সহায়তা নিয়ে নিয়ম মেনে এসব ব্যায়াম চর্চা করতে পারেন রোজ রাতে। তাতেও উপকার মিলবে।
এ ধরনের অভ্যাসের পরও সমস্যা না মিটলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিজে থেকে দিনের পর দিন গ্যাসের ওষুধ খেয়ে বিপদ ডেকে আনবেন না।