সবজিতে রং মেশানো কি না বুঝবেন কী করে
সুস্থ থাকতে চিকিৎসকেরা সবুজ শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ দেন। বাজারে গিয়ে তাই আমরা তরতাজা বা ফ্রেশ শাকসবজি খুঁজি। এ কথা নিশ্চয়ই শুনেছেন, অনেক জায়গায় সবুজ সবজিতেও এখন রং মেশানো হয়। খাবারের ক্ষতিকর রং আমাদের শরীরকে বিষাক্ত করে তোলে। এগুলো আমাদের শরীরে নানা ধরনের রোগের সৃষ্টি করে।
এর ফলে তাৎক্ষণিক কিছু সমস্যাও দেখা দেয় শরীরে। যেমন অনেক সময় বুক জ্বালাপোড়া করে, বমি বমি লাগে, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, শরীর দুর্বল অনুভূত হয়, ভারী ভারী লাগে পেট। এমনকি মাথাব্যথাও হয়ে থাকে। দীর্ঘমেয়াদি সমস্যাও আছে। কৃত্রিম রং দেওয়া খাবার খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে কার্সিনোজেনিকের প্রভাব পড়ে। এর প্রভাবে কিডনি রোগের পাশাপাশি ক্যানসারও হতে পারে।
সবজির রং আরও রঙিন করতে ‘ম্যালাকাইট গ্রিন’ নামক বিষাক্ত রাসায়নিক রং ব্যবহার করা হয়। ফলে চকচকে ও ঝকঝকে দেখায় সবজি। এই রং শনাক্ত করার একটা উপায় বলে দিয়েছে ভারতের ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি (এফএসএসএ)। টুইটারে এ-বিষয়ক একটি ভিডিও পোস্ট করেছে তারা।
পরীক্ষা পদ্ধতি
তরল প্যারাফিনে একটি তুলার বল ডুবিয়ে সবুজ শাকসবজির বাইরের অংশে ঘষুন। প্যারাফিন হলো প্রসাধনী এবং ওষুধে ব্যবহৃত একটি অত্যন্ত পরিশোধিত খনিজ তেল। এটি হাইড্রোকার্বনের মিশ্রণ দিয়ে গঠিত। তুলার রং পরিবর্তন না হলে সবজি ভেজালমুক্ত। তুলাটি যদি সবুজ রং ধারণ করে, তবে তা ভেজাল অর্থাৎ ম্যালাকাইট গ্রিন রংমিশ্রিত।
ম্যালাকাইট গ্রিন কেন বিপজ্জনক?
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশনের (এনসিবিআই) তথ্য অনুসারে, ম্যালাকাইট গ্রিনের বিষাক্ততা ঘনত্ব, সময় ও তাপমাত্রার সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পায়। এটি কার্সিনোজেনেসিস ( ক্যানসার কোষের অস্বাভাবিক ও অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি করে), মিউটাজেনেসিস (মিউটাজেনেসিস হলো একটি প্রক্রিয়া, যাতে ডিএনএর মিউটেশন হয় এবং এর কারণে ক্যানসার হতে পারে), টেরাটোজেনিসিটি (টেরাটোজেনিসিটির কারণে ত্রুটিযুক্ত ভ্রূণ তৈরি হয়) এবং শ্বাসযন্ত্রের বিষাক্ততা ঘটায়। এর কারণে ‘মাল্টি অর্গান টিস্যু ইনজুরি’ হতে পারে।
রং বা বিষাক্ততা দূর করা উপায়
গরম পানিতে সবজি ধুয়ে নিলে রঙের ক্ষতিকারক উপাদান কেটে যাবে। এ ছাড়া লবণপানি বা তেঁতুলপানিতেও সবজি ধুয়ে নিতে পারেন। এরপর পরিষ্কার পানিতে সবজিগুলো ধুয়ে নিন। এবার আপনি বাজার থেকে কেনা সবজি নিশ্চিন্তে খেতে পারবেন।
সূত্র: টাইমস আব ইন্ডিয়া