চুইং জিনজার খেলে কী লাভ
দুই দশক আগে লঞ্চে বা বাসে যাঁরা নিয়মিত যাতায়াত করতেন, তাঁদের কাছে এটি পরিচিত বেশি। ছোট্ট হলুদ কৌটার মধ্যে একটুখানি শুকনা আদার কুচি, নাম চুইং জিনজার। বিটনুন মেশানো সেই চুইং জিনজার চলতি পথে অনেকেই চিবাতেন। না বুঝে খেলেও পরিচ্ছন্নভাবে বানানো হলে তাতে কিন্তু স্বাস্থ্যের উপকারই মেলে। চুইং আদা জনপ্রিয় একটি রিফ্রেশিং খাবার। সাধারণত আদা ঝিরিঝিরি কেটে রোদে শুকিয়ে প্রাকৃতিকভাবে এটি তৈরি করা হয়। কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে তৈরির সময় দেখা যায় যে বেশ কিছু এসেন্স এতে ব্যবহার করা হয়। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় এই শুকনো আদা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। আয়ুর্বেদশাস্ত্র ও বৈজ্ঞানিকভাবেও আদার বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা সম্পর্কে জানা যায়। নিয়মিত এই চুইং আদা বা শুকনা আদা গ্রহণে স্বাস্থ্যগত উপকারিতাও আছে।
প্রদাহজনিত বিভিন্ন রোগ যেমন রিউমটয়েড আর্থ্রাইটিস, অস্টিওআর্থ্রাইটিস ইত্যাদি সমস্যা যাঁদের রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে এটি ভালো। কাঁচা ও শুকনো আদায় জিঞ্জেরল নামক উপাদান থাকায় সমস্যাগুলো প্রশমন করতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করতে শুকনা আদা খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। আদায় থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপকরণ ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গালের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
ঠান্ডা আবহাওয়া বা ঠান্ডা–কাশিতে স্বস্তি মেলাতে প্রাকৃতিক একটি আইটেম শুকনা আদা। শুকনা আদায় থাকা জিঞ্জেরল নামক উপাদান শ্বাসতন্ত্রের সুরক্ষা দিতে খুব কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
নিয়মিত শুকনা আদা গ্রহণ রক্তের খারাপ চর্বি কমিয়ে ভালো চর্বি বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
হজমের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য, আইবিএস, ব্লটিং, সঠিকভাবে খাবার হজম না হওয়াজনিত সমস্যা যাঁদের রয়েছে, তাঁরা নিয়মিত আদা গ্রহণ করে উপকার পেয়েছেন।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে পরোক্ষভাবে আদা আমাদের ত্বক ভালো রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মাসিকের সময় নারীদের যে লক্ষণগুলো (মাসল ক্র্যাম্পিং, বমি বমি ভাব, পেটে ব্যথা, মেজাজ খিটমিটে হওয়া ইত্যাদি) দেখা যায়, সেগুলো প্রশমনেও ভূমিকা রাখে চুইং জিনজার।
দীর্ঘ ভ্রমণে অনেকেরই বমি বমি ভাব বা মোশন সিকনেস–জাতীয় সমস্যা হয়। যাত্রাপথে তাঁরা যদি শুকনো আদা চিবাতে থাকেন, তাহলে বমির সমস্যা কমে আসে। আর এই কারণেই যাত্রাপথে এটি বেশি বিক্রি হতে দেখা যায়।
যাঁদের মুখে দুর্গন্ধজনিত সমস্যা রয়েছে, তাঁরাও নিয়মিত শুকনা আদা চিবাতে পারেন। দুর্গন্ধ কেটে গিয়ে মুখে রিফ্রেশিং ভাব আসবে।