প্রতিদিন চিয়া সিড খাওয়া কি ঠিক
স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের কাছে চিয়া সিড এখন বেশ জনপ্রিয় খাবার।
চিয়া হচ্ছে সালভিয়া হিসপনিকা নামের মিন্ট বা পুদিনা প্রজাতির উদ্ভিদের বীজ। এটি মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোর মরুভূমি অঞ্চলে জন্মায় বেশি। চিয়ার নানা রকম পুষ্টিগুণ রয়েছে। চিয়া সিডে প্রচুর ফাইবার রয়েছে। তাই পানিতে ভেজানো চিয়া সিড খেলে অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভর্তি থাকে এবং বারবার খাওয়ার প্রবণতা কমে। তাই ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে মেদ কমাতে চিয়া সিডের সরাসরি কোনো ভূমিকা আছে কি না, তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
চিয়া সিডে ফাইবার, প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান আছে। এতে থাকা ওমেগা-৩ হৃদ্রোগের ঝুঁকি ও ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। শরীরে শক্তি ও কর্মদক্ষতা বাড়ায়। প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। হজমে সাহায্য করে, ক্যানসার রোধ করে। শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ (টক্সিন) বের করতে সাহায্য করে।
তবে কিছু কিছু গবেষণা বলছে, অতিরিক্ত চিয়া সিড প্রস্টেট ক্যানসার ও স্তন ক্যানসারের প্রবণতাকে প্রভাবিত করে। অনেকেই প্রতিদিন ব্রেকফাস্টে চিয়া সিড খেয়ে থাকেন। চিয়া সিড প্রতিদিন খাওয়াও ঠিক না। এক বা দুই দিন বিরতি দিয়ে খাওয়া ভালো। এই বীজ অতিরিক্ত খেলে হজমের সমস্যা হয়।
টানা দুই সপ্তাহের বেশি চিয়া সিড খাওয়া ঠিক হবে না। অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আঁশজাতীয় খাবার খাওয়া ভালো। কিন্তু উপকার হবে ভেবে যদি অতিরিক্ত আঁশ খেয়ে ফেলেন, সে ক্ষেত্রে পেটব্যথা, গ্যাস, হজমের সমস্যা, ডায়রিয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। চিয়াবীজ বেশি খেলে শরীরে পানির ঘাটতি হতে পারে। তাই চিয়াবীজ খেলে পানি খাওয়ার পরিমাণ যেন ঠিক থাকে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। এটি অতিরিক্ত রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, তাই বেশি খেলে অনেক সময় প্রেশার লো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
যাঁরা ব্লাডপ্রেশারের ওষুধ খান, তাঁরা চিয়া সিড খেলে অনেক সময় ওষুধের সঙ্গে এটা প্রতিক্রিয়া করে। যেহেতু রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়, তাই ডায়াবেটিক রোগী বেশি খেলে সমস্যায় পড়তে পারেন। আবার যাঁদের কিডনির সমস্যা আছে, তাঁদের চিয়া সিড প্রতিদিন খাওয়া ঠিক হবে না। যেহেতু এটি বীজ, তাই কিডনি রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ১ বা ২ চামচ করে সপ্তাহে ২ বা ৩ দিন খেতে পারেন।
যেহেতু প্রতি ১০০ গ্রামে ৪৮৬ ক্যালরি পাওয়া যায়, তাই হিসাব করে চিয়া সিড আপনার ডায়েটে যোগ করতে হবে। না হলে ক্যালরির পরিমাণও বেড়ে যাবে।
সাজিয়া মাহমুদ, কনসালট্যান্ট পুষ্টিবিদ, প্যান কেয়ার হাসপাতাল