যে ৭ কারণে সকালে খাবেন চিয়াসিড ও বিটরুটের পানি

বিটরুটের রস ও চিয়াসিড দিয়ে তৈরি পানীয় সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারীছবি: সংগৃহীত

সকালে আপনি কী খেয়ে দিন শুরু করছেন, সেটার ওপর নির্ভর করে সারা দিনের স্বাস্থ্য। অন্ত্রের স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে ওজন নিয়ন্ত্রণ, অনেক কিছুই নির্ভর করে দিনের প্রথম পানীয় বা খাবারের ওপর। এ রকমই একটি পানীয় বিটরুট ও চিয়াসিড ভেজানো পানি। বিটরুটের রস ও চিয়াসিড দিয়ে তৈরি এই পানীয় সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারী। দুটি উপকরণে মেশানো এই মিশ্রণ পানিশূন্যতা রোধ করবে। পুষ্টিতেও ভরপুর। এতে বি৯ (ফোলেট), ভিটামিন সি, আয়রন ও পটাশিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় আরও কিছু খনিজ উপাদান আছে। এ ছাড়া এই পানীয় রক্তপ্রবাহ উন্নত করে, রক্তচাপ কমায় ও কর্মশক্তি বাড়ায়। এত সব গুণের বাইরে শুধু চিয়াসিডেই আছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, আঁশ, আমিষ ও অন্যান্য খনিজ উপাদান।

সকালে খালি পেটে চিয়া সিড ভেজানো পানীয় খান
ছবি: পেক্সেলস

২ টেবিল চামচ চিয়াসিডে যা থাকে

সাধারণত সকালে ২ টেবিল চামচ চিয়াসিড খেতে বলা হয়। এতে পাবেন ১৩৮ ক্যালরি, ৪ দশমিক ৭ গ্রাম আমিষ, ১২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও ১০ গ্রাম আঁশ।

বিটরুটের পানি ভালো স্বাস্থ্যের জন্য
ছবি: পেক্সেলস

বিটরুটের রসে যা পাবেন

১ কাপ বিটরুটের রসে পাবেন ৫৮ ক্যালরি, ২ দশমিক ২ গ্রাম আমিষ, শূন্য দশমিক ২ গ্রাম চর্বি, ১৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৩ দশমিক ৮ গ্রাম আঁশ ও ৯ দশমিক ২ গ্রাম শর্করা। বিটরুটে আছে ফোলেট, পটাশিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ। বিটরুট রক্ত​​প্রবাহ উন্নত করে হৃৎপিণ্ড ভালো রাখে, শক্তি বাড়ায় ও রক্তচাপ কমায়। ফলে সব মিলিয়ে বিটরুটকে বলা হয় ‘সুপার ফুড’।

আরও পড়ুন

বিটরুট ও চিয়াসিডের পানি খাওয়ার ৭টি উপকার

চিয়াসিডে প্রচুর আঁশ থাকায় খাবার দ্রুত হজম হয়
ছবি: প্রথম আলো

খাবার হজমে সহায়তা করে

চিয়াসিডে প্রচুর আঁশ থাকায় খাবার দ্রুত হজম হয়, পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। বিটরুটের প্রি-বায়োটিক ফাইবার অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে।

হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে

বিটরুটে আছে নাইট্রেট, রক্তনালি ভালো রেখে রক্তচাপ কমায় ও রক্তপ্রবাহ ঠিক রাখে। চিয়াসিডে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, প্রদাহ কমায় ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমিয়ে আনে।

আরও পড়ুন

কর্মশক্তি বাড়ায়

বিটরুটে প্রচুর নাইট্রেট থাকে, যা শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ উন্নত করে। ফলে স্ট্যামিনা বা কর্মশক্তি বাড়ে এবং ক্লান্তি দূর হয়। অন্যদিকে চিয়াসিডে থাকা আমিষ ও স্বাস্থ্যকর চর্বি শক্তির জোগান দেয়। এই মিশ্রণ সামগ্রিকভাবে শারীরিক শক্তির মাত্রা বাড়ায়।

ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
ছবি: প্রথম আলো

ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে

চিয়াসিড পেট ভরা রাখে অনেকক্ষণ। তাই ক্যালরি গ্রহণ কমিয়ে আনতেও সহায়তা করে। এ ছাড়া বিটরুট বিপাক ও লিভারের কার্যকারিতা ভালো রাখে।

লিভারকে ডিটক্সিফাই করে

বিটরুট লিভার থেকে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সহায়তা করে। এতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও বিটাইনের মতো যৌগ আছে, যা লিভার রক্ষা করে।

আরও পড়ুন

ত্বকের জন্য ভালো

অক্সিডেটিভ স্ট্রেস মোকাবিলা করতে ও ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে বিটরুটে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও বিটালেইন। ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে। অন্যদিকে ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ চিয়াসিড ত্বকের আর্দ্রতা ও স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

এই পানীয় ত্বক ভালো রাখবে
ছবি : সুমন ইউসুফ

জ্ঞানীয় কার্যকলাপের উন্নতি

বিটরুটে প্রচুর নাইট্রেট থাকায় মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ ভালো হয় এবং জ্ঞানীয় কার্যকলাপের উন্নতি ঘটে। এ ছাড়া বিটরুটের রসে থাকা নাইট্রেট অক্সিজেনের প্রবাহ ত্বরান্বিত করে এবং কর্মশক্তি বাড়ায়। এ কারণে ক্রীড়াবিদদের কাছে বিটরুটের রস জনপ্রিয়। এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও বিটেইন লিভারের কার্যকারিতা ও বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সহায়তা করে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ চিয়াসিড স্নায়ুর বিকাশ ও প্রদাহ কমিয়ে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

আরও পড়ুন

কীভাবে বানাবেন চিয়াসিড ও বিটরুটের রস

উপকরণ: বিটরুট ১টি মাঝারি আকারের, চিয়াসিড ১ টেবিল চামচ, পানি ২ কাপ, লেবু বা মধু ১ চা-চামচ।

প্রণালি: বিটরুট ধুয়ে, ছিলে ও কেটে নিন। ব্লেন্ডারে ১ কাপ পানি দিয়ে ব্লেন্ড করুন। ছেঁকে নিন। আরেকটি গ্লাসে চিয়াসিড ভেজান ১ কাপ পানিতে। ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দিন। মাঝেমধ্যে নাড়ুন, যেন জমাট না বাঁধে। মধু বা লেবুর রস দিন। খাওয়ার আগে অবশ্যই নেড়ে নেবেন। এই পানীয় খালি পেটে খেতে হবে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়

আরও পড়ুন