ভুঁড়ি কীভাবে কমাতে পারি?

ডায়েট, ব্যায়াম ও ওজন কমানো–বাড়ানো নিয়ে পাঠকদের নির্বাচিত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ও বিভাগীয় প্রধান শামছুন্নাহার নাহিদ

ভুঁড়িটাই ভোগাচ্ছে বেশি
ছবি: পেক্সেলস ডটকম

প্রশ্ন: আমি একজন পুরুষ। বয়স ৪৭ বছর ৪ মাস। উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি। ওজন ৮০ কেজি। আমি প্রতিদিন এক ঘণ্টা হাঁটি। তবে আমার একটা বড় ভুঁড়ি আছে। কোনো পোশাক সহজে পরতে পারি না, ভুঁড়িতে আটকে যায়। শরীরের অন্য জায়গার তুলনায় এই পেটই বেশি ভোগাচ্ছে। আমি তিনবেলাই ভাত খাই। তবে খুব যে বেশি খাই, তেমন নয়। আমার কি খাবারের কারণে ভুঁড়ি বেড়ে গেছে বলে মনে হয়? কীভাবে কমাতে পারি?

ইমতিয়াজ রেজা বুলবুল

মানিকগঞ্জ সদর।

পরামর্শ: আপনার শরীরের ওজন ৯ কেজি বেশি আছে। পাশাপাশি ভুঁড়িও আছে। অনেক কারণে পেটে মেদ জমে, যাকে বলে ‘বেলি ফ্যাট’ বা ভুঁড়ি বা অ্যাবডোমিনাল ফ্যাট। যার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে।

১. সুষম খাবারের অভাব: যখন কোনো ব্যক্তি শরীরের প্রয়োজনের তুলনায় বেশি উচ্চ ক্যালরি ও হাই জিআই গ্রুপের খাবার (ডুবোতেলে ভাজা, চর্বিজাতীয়, মিষ্টি, ড্রিংকস ইত্যাদি) খেতে থাকেন; পাশাপাশি কম ক্যালরি ও আঁশজাতীয় খাবার কম খেয়ে থাকেন, তখন ধীরে ধীরে শরীরের ওজনের সঙ্গে সঙ্গে পেটের ভুঁড়ি বাড়তে থাকে।

২. শারীরিক পরিশ্রম না করলে: দিনের অধিকাংশ সময় ও খাবার খাওয়ার পরপরই শুয়ে-বসে থাকলে, ব্যায়াম না করলে পেটে মেদ জমে।

৩. রাত জাগলে: কম ঘুমালে শরীরের ভিসেরাল ফ্যাটসহ অ্যাবডোমিনাল ফ্যাট বাড়তে থাকে।

তাই পেটের মেদ কমাতে প্রথমেই দরকার ইতিবাচক মনোভাব। একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ আপনার জন্য খুব জরুরি। তারপরও কিছু সাধারণ বিষয়, যা শরীর ও পেটের মেদ কমাতে আপনাদের সাহায্য করবে, তা জেনে নিন।

১. উচ্চমানের আমিষ ও আঁশসমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে। শর্করাজাতীয় খাবার শরীরের চাহিদা বুঝে খাবেন। ওমেগা-৩–সমৃদ্ধ মাছ বা খাবার বেশি খেতে হবে।

২. যে যে খাবার বাদ দিতে হবে: মিষ্টিজাতীয় খাবার, পরিশোধিত শর্করা, ড্রিংকস, প্রক্রিয়াজাত খাবার, উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার, ফাস্ট ফুড, চর্বিযুক্ত খাবার ইত্যাদি।

৩. ফলের জুস না খেয়ে আস্ত ফল খাওয়া অভ্যাস করুন, যাতে আঁশসহ পুষ্টি আসে।

৪. খাওয়ার পর প্রোবায়োটিক (টক দই) খেলে পাকস্থলী ভালো থাকে।

৫. খাবারের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করবেন, তবে তা খাওয়ার মধ্যে বা খাওয়ার পরপরই নয়। কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর খেতে হবে।

৬. মানসিক চাপ কমাতে হবে। স্ট্রেস কর্টিসল হরমোনের নিঃসরণ বাড়িয়ে, আমাদের ক্ষুধা বাড়ায়, যা পেটে মেদ জমার আশঙ্কা বাড়ায়।

৭. প্রতিদিন ব্যায়াম, বিশেষ করে পেটের ব্যায়াম করলে ধীরে ধীরে আপনার পেটের মেদ ঝরিয়ে ফেলা সম্ভব।