শিশুদের প্লাটিলেট কমে যাওয়ার রোগ ‘আইটিপি’ কি সেরে যায়

সাধারণত ২-৪ বছর বয়সী শিশুরা আইটিপিতে বেশি আক্রান্ত হয়
ছবি: সংগৃহীত

শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থায় পরিবর্তনের কারণে নানা রোগ হয়ে থাকে। এমনই এক রোগ আইটিপি, যার পূর্ণরূপ ইমিউনো থ্রম্বোসাইটোপেনিক পারপুরা। নামটি খটোমটো হলেও শিশুদের মধ্যে অনেকেই এই রক্তরোগে ভোগে। সাধারণত ২-৪ বছর বয়সী শিশুরা আইটিপিতে বেশি আক্রান্ত হয়, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাসের মধ্যে পুরোপুরি সেরে যায়।

কেন হয়

এই রোগে আক্রান্ত হলে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা ঠিকভাবে কাজ করে না। নিজের রক্তের প্লাটিলেটকেই ‘চিনতে’ না পারার কারণে সেগুলোকে ধ্বংস করে ফেলে। প্লাটিলেটের কাজ হলো দেহের অভ্যন্তরে রক্ত জমাট বাঁধায় সহায়তা করা। কাজেই এর অভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তপাত শুরু হয়।

উপসর্গ

  • হঠাৎ শরীরের নানা অংশে লাল লাল দানা দেখা দেয়, কখনো তা বড় হয়ে ছড়িয়ে কালচে নীল বর্ণ ধারণ করে।

  • নাক ও দাঁতের গোড়া থেকে রক্তপাত হয়।

  • প্রস্রাব বা মলের সঙ্গে রক্ত যায়।

  • সামান্য কিছু ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এর ফলে মাথাব্যথা ও বমি হতে পারে। এমনকি শিশু জ্ঞানও হারিয়ে ফেলতে পারে।

খেয়াল রাখতে হবে, শিশুদের এই রোগে সাধারণত জ্বর হয় না কিংবা শিশু খুব ফ্যাকাসে বা দুর্বলও হয়ে পড়ে না। তবে রোগ শুরু হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে শিশুদের ঠান্ডা-কাশি অর্থাৎ শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের ইতিহাস থাকতে পারে।

করণীয়

এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। তবে অবশ্যই শিশুরোগ–বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। অন্যান্য কিছু রোগেও কাছাকাছি ধরনের উপসর্গ থাকে। কিছু প্রয়োজনীয় রক্ত পরীক্ষাও করাতে হবে। প্লাটিলেটের মাত্রা বেশি কমে গেলে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হবে।

সতর্কতা

এ অবস্থায় শিশুকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ দেবেন না। এ সময় শিশু যাতে কোনোভাবে আঘাত না পায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। কোনোভাবেই যাতে রক্তক্ষরণ না হয়, তার জন্য বেশি ছোটাছুটি, ঝুঁকিপূর্ণ খেলাধুলা থেকে বিরত রাখতে হবে।

ডা. লাজিনা শারমিন: সহযোগী অধ্যাপক, ডা. এম আর খান শিশু হাসপাতাল ও শিশু স্বাস্থ্য ফাউন্ডেশন, ঢাকা