সকালে খান রাজার মতো, দুপুরে প্রজার মতো আর রাতে ভিখারির মতো। কোন বেলায় কেমন খাওয়া উচিত, এ সম্পর্কে প্রবাদটি বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু সকালে রাজার মতো তো দূরে থাক, সকালে খাওয়া থেকেই দূরে থাকেন অনেকে।
ফলে তৈরি হয় নানান জটিলতা। এর মধ্যে একটি হলো বুদ্ধি কমে যাওয়া। হ্যাঁ, সকালে না খেলে আইকিউ কমে যাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। আর বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই প্রবণতা অনেক বেশি দেখা যায়। কেননা, তখনই শারীরিক ও বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে বেড়ে ওঠার সেরা সময়।
সকালে না খেলে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় না। তাই অনেকেই সকালের খাবার এড়িয়ে যান। দেরি করে ওঠেন। দেরি করে ঘুমাতে যান। তাই দিনের পুরো চক্রটাই শুরু হয় দেরি করে। কিন্তু সূর্য ওঠা ও ডোবার সঙ্গে শরীরের বিপাকক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।
দিন যত গড়ায়, শরীরের পরিপাক হারও তত বেড়ে যায়। সূর্য ডুবে যাওয়ার পর পরিপাক হারও কমতে থাকে। ফলে দুপুর বা রাতের চেয়ে সকালে খাবারদাবার অনেক বেশি প্রয়োজনীয়। সকালে নাশতা কখনোই বাদ দেওয়া উচিত নয়। সকালের খাবার, যেমন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে বিরত রাখে, তেমনি সারা দিন কাজ করার শক্তি প্রদান করে। ছোট বয়স থেকেই সঠিক সময়ে খাবার খেলে ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঠিকমতো হয়।
সারা রাত অভুক্ত থেকে সকালে না খেলে শরীরের গ্লুকোজ লেভেল কমতে থাকে। সকালের খাবার সুষম হওয়া জরুরি। শতকরা ৭০ ভাগ শর্করা, ২০ ভাগ প্রোটিন আর ১০ ভাগ তেল/ চর্বি থাকতে হবে। সকালে না খেলে দিনের শর্করার অংশ শূন্য হয়ে যায়। সেই সঙ্গে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যায়। ফলে ব্রেনে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয়। আর মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যায়।
এদিকে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় বলা হচ্ছে যে কিন্ডারগার্ডেনপড়ুয়া শিশুদের আইকিউর সঙ্গে সকালের নাশতা সরাসরি জড়িত। এই গবেষণার জন্য পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, যারা সকালে নিয়মিত নাশতা খায়, তাদের তুলনায় যারা খায় না, তাদের আইকিউ ফুল স্কেল, ভারবাল আর পারফরম্যান্স—সব ক্ষেত্রেই কম।