পবিত্র ঈদুল আজহার আর এক দিন বাকি। এই ঈদে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা সামর্থ্যানুযায়ী কোরবানি দিয়ে থাকেন। এ সময় অনেকের বাসায় একটু বাড়িতে মাংস থাকে বলে খাওয়াও হয় একটু বেশি। তবে মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে একটু সাবধানতা অবলম্বন করা ভালো। বিশেষ করে বয়স্ক, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরল আছে এমন ব্যক্তিদের এবং হৃদ্রোগী বা কিডনি রোগীদের সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি। এসব শারীরিক জটিলতা থাকলে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে মাংস খেতে হবে।
মাংসের বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। এটি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়, পেশি, দাঁত ও হাড় গঠনে ভূমিকা রাখে। দেহের বৃদ্ধি ও বুদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করে, ক্ষত নিরাময় করে, দৃষ্টিশক্তি
ভালো রাখে, চুল ও নখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে এবং স্মৃতিশক্তি ও দেহ কর্মোদ্যম রাখে।
গরুর মাংসে আছে প্রচুর প্রোটিন। প্রোটিনের চাহিদা নির্ভর করে একজন মানুষের দেহের ওজনের ওপর। ধরা যাক, একজন মানুষের ওজন ৬৪ কেজি। তিনি যদি নিরোগ থাকেন তাহলে প্রতিদিন তাঁর ৬৪ গ্রামের মতো প্রোটিন প্রয়োজন। ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে প্রোটিন ২৬ গ্রাম। তার মানে নিরোগ ব্যক্তির খুব বেশি মাংস খাওয়ার প্রয়োজন নেই।
মেয়েদের মাসিক চলাকালে, গর্ভাবস্থায়, প্রসূতি অবস্থায় ও বর্ধনশীল বয়স অর্থাৎ ১৮ বছরের নিচে হলে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ পরিমাণ মাংস খেতে পারবেন। এ ছাড়া যাঁদের ওজন কম ও রক্তশূন্যতায় ভোগেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও এই পরামর্শ প্রযোজ্য।
মাংস খাওয়ার নিরাপদ উপায়
মাংস যত ছোট ছোট করে টুকরা করা হবে, ততই চর্বির পরিমাণ কমতে থাকবে। এ কারণে ছোট টুকরা অপেক্ষাকৃত নিরাপদ। শিক কাবাব, গ্রিল, শামি কাবাব, জালি কাবাব করে খেলে চর্বি কম খাওয়া হবে। এ ছাড়া গরুর মাংসের সঙ্গে যদি, লাউ, মুলা, মিষ্টিকুমড়া, বুটের ডাল, বাঁধাকপি, ফুলকপি, পেঁপে মিশিয়ে রান্না করা হয়, তবে খাওয়ার সময় মাংস কম খাওয়া হবে। শুধু মাংসের পদ নয়, ঈদেও রান্নায় সবজি, সালাদ রাখা যেতে পারে। এতে কোষ্ঠকাঠিন্যের আশঙ্কা কমে যায়।
গরু, ছাগল, মহিষের মাংসের সাদা চর্বি ফেলে দিয়ে রান্না করা স্বাস্থ্যসম্মত। এ ছাড়া মাংস রান্নার সময় অল্প সময় সেদ্ধ করে পানি ফেলে দেওয়া উচিত। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি কমে।
সব মসলা দিয়ে মাখিয়ে সামান্য টকদই, লেবুর রস অথবা ভিনেগার দিয়ে ১ ঘণ্টা মেরিনেট করে মাংস রান্না করুন, তেলে কষানো বা ভুনা এড়িয়ে চলুন। স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে রান্না করে মাংস খান, নিরাপদ থাকুন।
হাসিনা আকতার, ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট, ল্যাবএইড লিমিটেড (ডায়াগনস্টিক), চট্টগ্রাম