প্রস্রাব আটকে গেলে করণীয়
আকস্মিকভাবে প্রস্রাব আটকে যাওয়ার সমস্যা খুব অপরিচিত নয়। বয়স্কদের তো হয়েই থাকে, কমবয়সীদেরও হতে পারে। এটি বেশ যন্ত্রণাদায়ক ও নাজুক একটি পরিস্থিতি। এক সময় এতে প্রচণ্ড অস্বস্তির সৃষ্টি হয়। এমন সমস্যা হঠাৎ কেন হয়, আর হলে তা থেকে পরিত্রাণের উপায়ই বা কী, জেনে নেওয়া যাক।
কেন হয়
বয়সভেদে প্রস্রাব আটকে যাওয়ার কারণ ভিন্ন। ০-২ বছর বয়স পর্যন্ত সাধারণত জন্মগত ত্রুটির কারণে এমন সমস্যা হয়ে থাকে। ৩ বছর বয়স থেকে বয়োসন্ধিকাল পর্যন্ত মূত্রতন্ত্রে জীবাণুর সংক্রমণ, কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা মূত্রথলি বা প্রস্রাবের রাস্তায় পাথর হওয়ার কারণে এ রকম হতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ক্ষেত্রে প্রস্রাবের রাস্তার স্ট্রিকচার (কোনো কারণে প্রস্রাবের রাস্তা সরু হয়ে আসা বা বাধা) কিংবা মূত্রথলির ভালবের মাংসপেশির অকার্যকারিতা এমন সমস্যার কারণ। প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের প্রস্রাবে সংক্রমণ, মূত্রথলি বা প্রস্রাবের রাস্তায় পাথর, টিউমার, স্ট্রিকচার বা বাধা, স্নায়ুজনিত সমস্যা ইত্যাদি কারণে এমন হতে পারে।
কী করবেন
● প্রাথমিকভাবে বাড়িতে ব্যথানাশক বড়ি খেয়ে পানির ট্যাপ ছেড়ে শৌচাগারে বসে থাকা, তলপেটে ও ঊরুতে পানি ঢালা ইত্যাদি করে দেখতে পারেন।
● এই উপায়ে প্রস্রাব না হলে, অতিসত্বর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
চিকিৎসা না নিলে কী হতে পারে
● এটি একটি জরুরি অবস্থা। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা না নেওয়া হলে রোগীর অস্বস্তি ও ব্যথা বাড়তে থাকে, যা এক সময় অসহনীয় পর্যায়ে চলে যায়।
● যাদের কিছুক্ষণ পর বাড়িতেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়, তাদের ক্ষেত্রেও এই প্রস্রাব আটকে যাওয়ার কারণটি শনাক্ত করা প্রয়োজন। নয়তো এমন ঘটনা আবার ঘটতে পারে।
প্রতিরোধ
সব কারণ প্রতিরোধযোগ্য নয়, এটা ঠিক। তবে প্রস্রাবের বিষয়ে সঠিক নিয়মকানুন আর হাইজিন বজায় রাখা জরুরি। পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। নিয়মিত বিরতিতে প্রস্রাবও করতে হবে। নারীদের মধ্যে পারিপার্শ্বিক কারণে প্রস্রাব আটকে রাখার প্রবণতা দেখা যায়, আবার বাইরে গেলে অনেক নারী পানি খাওয়া কমিয়েও দিয়ে থাকেন।
বয়স্ক পুরুষদের প্রস্টেট সমস্যা খুবই পরিচিত সমস্যা। এর উপসর্গ হলো, প্রস্রাব করতে গিয়ে আটকে আসা, প্রস্রাব লাগলে সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে আসার প্রবণতা, একবার প্রস্রাব করার পর একটু পরই আবার প্রস্রাব লাগা ইত্যাদি। উপসর্গ দেখা দিলে ইউরোলজি বিশেষজ্ঞের পরামর্শে চিকিৎসা নিন। নয়তো হঠাৎ একদিন একবারে প্রস্রাব আটকে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ডা. হাসিনা সাদিয়া খান, সহকারী অধ্যাপক, ইউরোলজি বিভাগ, পপুলার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।