পিত্তথলিতে পাথর একটি সাধারণ ও পরিচিত সার্জিক্যাল সমস্যা। পিত্তথলিতে পাথর হলে অনেকেই দ্বিধায় পড়ে যান, অস্ত্রোপচার করাবেন নাকি করাবেন না। আবার অস্ত্রোপচার করালে কীভাবে করাবেন—ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে নাকি পেট কেটে। অন্যদিকে ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা চালাবেন কি না, তা নিয়েও দ্বিধায় পড়ে যান।
পেট কেটে অস্ত্রোপচার?
পিত্তথলির পাথর হলে এখন আর পেট কেটে অস্ত্রোপচার করার তেমন প্রয়োজন হয় না। তবে কারও যদি পিত্তথলি ও পিত্তনালিতে অনেকগুলো পাথর হয়ে থাকে কিংবা বিভিন্ন রকম জটিলতা থাকে, তবে সে ক্ষেত্রে পেট কেটে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। পিত্তনালিতে পাথর থাকলেও কাটাছেঁড়ার প্রয়োজন হয় না। মুখ দিয়ে যন্ত্র প্রবেশ করিয়ে পিত্তনালি থেকে পাথর বের করে নিয়ে আসা যায়।
তাহলে ল্যাপারোস্কপি?
পিত্তথলির পাথর সাধারণত ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে বের করে আনা হয়। এতে পেট কাটতে হয় না; পেটে চারটি ছোট ছোট ছিদ্র করে ল্যাপারোস্কপি যন্ত্রের মাধ্যমে পাথর বের করে আনা হয়। অস্ত্রোপচারের পরদিনই রোগী বাড়ি যেতে পারেন। অস্ত্রোপচার–পরবর্তী সময় ল্যাপারোস্কপি সাইট বা ছিদ্রে কোনো ধরনের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কাও অনেক কম থাকে।
পাথর ওষুধে যায়?
পিত্তথলির পাথর অপসারণ ওষুধের মাধ্যমে সম্ভব নয়। দীর্ঘদিন পাথর থাকলে কারও কারও তেমন কোনো সমস্যা হয় না, কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে তা জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। পিত্তথলির পাথর কখনো পিত্তনালিতে চলে যেতে পারে। এতে জন্ডিস হতে পারে। পিত্তথলির বিভিন্ন রকম সংক্রমণ বা প্রদাহ হতে পারে। দীর্ঘদিন পাথর থাকলে পিত্তথলির ক্যানসারও হতে পারে। কাজেই পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার কারণে যদি ব্যথা হয়, তাহলে এটি নিয়ে বসে না থাকাই ভালো।
কিছু বিভ্রান্তি
কেউ কেউ বলে থাকেন, ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে অস্ত্রোপচার করলে কিছু ভেতরে পাথর থেকে যায়। এ কথা সঠিক নয়। ল্যাপারোস্কপি অত্যন্ত আধুনিক চিকিৎসা। তাই এটা নিয়ে বিভ্রান্তিতে না থেকে পিত্তথলিতে পাথর হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যান। তিনিই সঠিক পরামর্শ দেবেন।
ডা. মো. নাজমুল হক, জেনারেল ও কোলোরেকটাল সার্জন, সহযোগী অধ্যাপক, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল