গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ

গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ এবং এর কারণে সৃষ্ট জটিলতা হলো মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর একটি অন্যতম কারণ। ৫-১৫ শতাংশ মা গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন। তীব্রতা ও জটিলতা অনুযায়ী এটি কয়েক রকমের হতে পারে:
গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত, কিন্তু প্রস্রাবের সঙ্গে আমিষ যাওয়া বা অন্য কোনো জটিলতা নেই।
উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে প্রস্রাবে আমিষ গেলে পরিস্থিতি একটু জটিল হয়ে পড়ে। এটি প্রি-একলাম্পশিয়া।
উচ্চ রক্তচাপ ও প্রস্রাবে আমিষ বেরোনোর সঙ্গে যখন খিঁচুনি শুরু হয়, রোগী জ্ঞান হারায়, ফুসফুসে পানি জমে, কিডনি কার্যকারিতা হারায় এমনকি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ইত্যাদি মারাত্মক জটিলতাও দেখা দিতে পারে। এটি একলাম্পশিয়া।
স্থূলতা ও পরিবারে উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস এই সমস্যার একটি অন্যতম ঝুঁকি। সাধারণত প্রথম সন্তানের সময় এটি দেখা দেয়। গর্ভধারণের পর স্বাভাবিকভাবে প্লাসেন্টা বা ফুলের রক্তনালি প্রসারিত হয়ে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দেয়। কোনো কারণে এই প্রসারণ বা রক্ত চলাচল ব্যাহত হলে রক্তচাপ বেড়ে যায়।
সতর্কতা জরুরি
গর্ভাবস্থায় প্রতিবার চিকিৎসকের কাছে বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চেকআপের জন্য গেলে অবশ্যই নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ করা জরুরি। ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া, হাতে-পায়ে পানি আসা, মাথা ও ঘাড়ে ব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন ও রক্তচাপ মাপুন। খাবারে অতিরিক্ত লবণ ও পাতে কাঁচা লবণ এড়িয়ে চলুন। গর্ভাবস্থায় সব ধরনের ওষুধ খাওয়া যায় না, তাই উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খেতে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়েছে, তাঁরা নিয়মিত রক্তচাপ মাপুন এবং প্রস্রাবে আমিষ যাচ্ছে কি না, পরীক্ষা করুন। উচ্চ রক্তচাপ থাকলে গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, কম ওজনের শিশু হয়, কখনো নির্ধারিত সময়ের আগেই জন্ম নেয়। তাই এই সন্তান প্রসব হাসপাতালেই করা উচিত।  স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল|