আপনার নিজের একটা স্টাইল ছিল। রুচির সঙ্গে মিলিয়ে নিজের ভালো লাগার জন্যই সাজতেন, সুন্দর পোশাক পরতেন। মা হওয়ার কারণে সব বাদ দিতে হবে, এমনটি নয়। একটু দম নিয়ে আবার নিজেকে সাজিয়ে তুলুন। আবার মা হওয়ার যাত্রাপথে অস্বস্তি ও কষ্টকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখিও হতে হয়। পোশাক নিয়ে সব সময় বিড়ম্বনা, এ সময়ের একটি সাধারণ ব্যাপার। সাধারণ সময়ের চেয়ে পোশাক হওয়া দরকার বেশি আরামদায়ক। সঙ্গে যোগ করে নিতে পারেন আধুনিক কাটছাঁট।
হবু মায়েদের শরীরের অবয়ব বদলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু অস্বস্তিও তৈরি হয়। গরমে আরাম মিলবে সুতি কাপড়ে। এতে ঘাম বসবে না। এর বাইরে লিনেন, ক্রেপ জর্জেট, হালকা সিল্ক বেছে নিতে পারেন। হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যাতে কাপড়ের মধ্য দিয়ে বাতাস চলাচল করতে পারে। ভারী পোশাকের কারণে অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে। এটি অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। কোমরে খুব আঁটোসাঁটো বা ঢিলাভাবে সালোয়ার, পেটিকোট না পরে স্বাভাবিকভাবেই পরুন। প্রতিদিন ধোয়া কাপড় পরুন, যাতে জীবাণুর সংক্রমণ না হয়।
পেটের ওপরই সালোয়ার অথবা পেটিকোট পরার কারণে একধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়। এ ক্ষেত্রে স্মক বা চওড়া ইলাস্টিক আরাম দেবে। এটাতে কোনো রকম চাপ বোধ হয় না। পেটের ওপর অনেকটুকু জায়গায় ছড়িয়ে থাকে। চুড়িদার, সালোয়ার, পালাজ্জো—সবকিছুতেই এই ইলাস্টিকটি ব্যবহার করতে পারেন। আরামের কথা চিন্তা করে একটু ছড়ানো গলার পোশাক বানাতে পারেন। হাতের সংযোগের কাছের অংশ ঢিলা রাখুন। কামিজ বানানোর সময় কোমরের কাছে কোনোভাবেই চাপা রাখবেন না। বরং আনারকলি কাটের টপস, কামিজে আরাম পাবেন।
ক্লাব হাউসের জ্যেষ্ঠ ডিজাইনার ফারজানা খানম সামিয়া জানালেন, এ সময় আরামের বিষয়টি মুখ্য। এ কারণে ক্লাব হাউস হবু মায়েদের জন্য ডেনিমের আরামদায়ক প্যান্ট নিয়ে এসেছে। উপরিভাগে নিট কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে। প্যান্টের নিচের অংশটুকু ডেনিমেরই থাকবে। এ ছাড়া কোমরের অনেক উঁচু থেকে পরার জন্য লেগিংসও পাওয়া যাচ্ছে সেখানে।
মা হওয়ার পর পোশাক
মা হলেই যে সারা দিন ম্যাক্সি পরে বসে থাকতে হবে, এমনটি নয়। এ সময়টায় একজন নারীর জীবনে সবচেয়ে আরামদায়ক পোশাক দরকার বলে মনে করেন ডিজাইনার তাহ্সিনা শাহীন। সুতি বা লিনেনের পোশাক বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন তিনি। বারবার বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর প্রয়োজন হয়। সামনের দিকে দুই পাশে চেইন লাগিয়ে নিলে বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর সময় আরাম পাবেন। পোশাকের সামনে পেটের কাছটায় একটু কুঁচি দেওয়া পোশাকগুলোতে স্বস্তি পাবেন। বাড়ির ভেতর ম্যাক্সি গাউন কাটের লম্বা পোশাক পরতে পারেন। মেহমান এলে ওপরে লম্বা কটি চাপিয়ে নিলেই হবে।
সবেচেয় বড় বিষয়, নিজের পছন্দের রং এবং নকশার পোশাক ব্যবহার করুন। তাতে আরামের সঙ্গে সঙ্গে মনেও এক ধরনের স্বস্তি পাওয়া যাবে। ভালো পোশাক মনের ওপর থেকে চাপ দূর করতে সহায়তা করে। মা হওয়া যেহেতু একটা দীর্ঘ এবং ভিন্ন রকমের প্রক্রিয়া, তাই মানসিকভাবে অন্য রকম অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক। কাজেই মনকে উষ্ণ রাখতে পারে এমন রং এবং নকশা বেছে নিন আপনার পোশাকে।