সাদা পোশাকে গয়না
সাদাসিধে সাদা কিংবা একদম সাদামাটা। সাদাকে যত নিরীহ মনে হয়, বাস্তবে ঠিক উল্টো। বিজ্ঞান বলে, সব রং মিলিয়েই হয় সাদা। তাই হয়তো সব রং ছাপিয়ে যাওয়ার মতো শক্তি থাকে শুভ্রতার। আবার অন্য রংকে রাঙাতেও জুড়ি নেই সাদার। পোশাকে সাদা যেকোনো বেলা বা দিনের জন্য প্রযোজ্য। সাধারণত সাদা পোশাকের মধ্যে অন্য রং থাকলে নির্দেশিকা পাওয়া যায়, সাজ কোথায় সম্পূর্ণ হবে। গয়নাটাই–বা কেমন হবে। সাদার ওপর যদি থাকে শুধুই সাদা নকশা, গয়না বাছাই করা যাবে ইচ্ছেমতো। কথা আছে এখানেও। ভাবনায় থাকতে হবে পোশাকের উপকরণ আর কাজ।
সাদা পোশাকের সঙ্গে পাল্লা দিতে অনেক সময় রঙিন গয়না এগিয়ে আসে। কখনো সোনালি বা রুপালি গয়নাও তাক লাগিয়ে দেয়। কনক দ্য জুয়েলারি প্যালেসের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার লায়লা খায়ের জানালেন, গয়না রং, উপকরণ কিংবা পাথরের ওপর নির্ভর করে বেছে নিতে পারেন। পোশাকের গলার নকশাও গয়না বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। গলার কাট যদি বড় হয়, তাহলে চোকার পরে ফেলুন। কাট ছোট হলে লম্বাটে নকশা বেছে নিন। ‘আমি সাদা পোশাকের সঙ্গে সাদা গয়না বেছে নেব না। শেড বা রঙে থাকতে হবে ভিন্নতা।’ বললেন লায়লা খায়ের।
গয়নার রং, নকশা ঠিকঠাক থাকলে পোশাকের সঙ্গে সৃষ্টি করবে না কোনো সংঘাত। এই চিন্তা মাথায় রেখেই গয়না বাছা ভালো। এমারেল্ড বা রুবি পাথরের তৈরি গয়না সাদা শাড়িতে নিয়ে আসে আভিজাত্য। সাদা পোশাক আর মুক্তার মালা ঐতিহ্য আর বনেদিয়ানার প্রতীক যেন।
মুক্তার কয়েক ছড়া মালা, কানে ছোট টপ, হাতে মুক্তা আর সোনার চুড়ি—সাজে চলে আসে স্নিগ্ধতা। লায়লা খায়েরের ব্যক্তিগত পছন্দ সাদা পোশাক আর চাপা (ম্যাট) সোনালি গয়না। কানে বড় দুল, গলায় চিকন চোকার, হাতে চুড়ির গোছা। জামদানি ও মসলিন শাড়ির সঙ্গেই মুক্তার গয়না মানায় ভালো। মসলিনের সঙ্গে এমারেল্ডের গয়নাও চোখ না ফেরানো সাজের মতোই হয়। সুতির পোশাকের সঙ্গে রুপার গয়না প্রকাশ করে রুচি।
সাদা পোশাকে সাদা সুতার কাজ থাকলে পোশাকে চলে আসে আলাদা নান্দনিকতা। এ রকম পোশাক কোথায় পরছেন, তার ওপর ভিত্তি করে গয়না বেছে নিতে পারেন। কালচে রুপালি গয়না মানাবে সহজেই। রুপার ওপর রঙিন কাচের নকশা কিংবা শুধুই কালচে রুপালি নকশার গয়নাও মানাবে। জায়গা বুঝে হালকা বা ভারী গয়না তুলে নিন।
এবড়োখেবড়ো কাটের রঙিন পাথরের (আনকাট ন্যাচারাল স্টোন) গয়না সাজে ছড়াবে আলোর ছটা। পাথরগুলো বিভিন্ন টোনের হওয়ায় সাদা পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যাবে অনায়াসেই। এই গয়নাগুলো দিয়ে সাজে ভারিক্কি ভাব আনতে পারবেন, চাইলে চঞ্চলতাও প্রকাশ করা যায়।
ডায়মন্ড কাটের জিরকন পাথরের গয়না নিয়ে আসবে জমকালো ভাব। পোশাকের উপকরণ যদি জর্জেট কিংবা শিফন হয়, তাহলে এ ধরনের গয়নায় চলে যান। পোশাকে যদি লেসের কাজ বেশি থাকে, তাহলে কিউবিক জিরকনিয়া পাথরের গয়না ভালো লাগবে। ভালো লাগবে রঙিন বিডসের গয়নাও। অনেকগুলো রঙের রঙিন লহরি মিলিয়ে পরুন। বোহিমিয়ান বা এথনিক লুক তৈরি হয়ব মুহূর্তেই।
শুভ্র এই রং আমাদের ব্যক্তিত্বকে তুলে ধরে কোনো বাধা ছাড়াই। গয়না পরুন এমনভাবে যেন সাজে তৈরি না হয় কোনো খটমট ভাব। গয়না আর পোশাক মেলাতে পারলেই ফুটে উঠবে আপনার মুনশিয়ানা। হয়ে উঠবেন ঈর্ষণীয়।