সাংসদ, আইনজীবী, অভিনয়শিল্পী ও পরিচালক। একই সঙ্গে অনেক পরিচয় তাঁর। তিনি তারানা হালিম। ভালোবাসেন ক্রেপের সিল্ক শাড়ি পরতে। সংগ্রহ করেন সিরামিকের সামগ্রী। আজ থাকছে তাঁর স্টাইল।
ঈদের ছুটির রেশ কাটেনি তখনো। এই ছুটিতে ব্যস্ততার শেষ নেই তারানা হালিমের। এরই এক ফাঁকে সময় দিলেন। ঢাকার গুলশানের বাসায় ঢোকার মুখেই বেতের তাকে সাজানো সিরামিকের সামগ্রী। ব্যক্তি তারানা হালিমের শৌখিনতার ছোঁয়া রয়েছে তাতে। ২ আগস্ট একরাশ হাসি দিয়ে দরজা খুলে দিলেন।
সব সময় ধরে রাখা মুখের হাসিটা আরেকটু বেড়ে গেল। সাজ-পোশাকে বাহুল্য নেই। এ বিষয়ে নিজের ছোটবেলার একটা গল্প শোনালেন।
বয়স তখন ১১ কি ১২ বছর। জন্মদিনে নিজেকে বেশ বড় বড় মনে হচ্ছিল। চোখে কাজল টেনে, ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়ে মায়ের সামনে গিয়ে বলেছিলেন ‘কেমন লাগছে, বলো তো?’
মা কিছু না বলে চোখের কাজল, ঠোঁটের লিপস্টিক মুছে দেন। মাথায় তেল দিয়ে চুল বেঁধে দেন। আর বলেন, ‘তুমি এখনো বড় হওনি।’
সেই থেকে কখনোই খুব একটা সাজেননি তারানা হালিম। সাজ বলতে চোখে ম্যাকের কাজল ও ঠোঁটে লিপস্টিক। বাইরে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করেন। এরপর কমপ্যাক্ট পাউডারের প্রলেপ বুলিয়ে নেন। নাকে হীরার নাকফুলটি কবে পরেছেন মনে নেই তাঁর। খুব ছোটবেলায় মা পরিয়ে দিয়েছিলেন।
হালকা রঙের ক্রেপের সিল্ক শাড়ি তাঁর পছন্দের তালিকার শীর্ষে। তবে বিশেষ কোনো অনুষ্ঠান থাকলে জমকালো কাজ করা পাড়ের উজ্জ্বল রঙের শাড়ি পরা হয় তাঁর। তারানা হালিম বলেন, ‘অনেকে বলেন সংসদে যাওয়ার সময় একটা সুতির শাড়ি পরাই ভালো। কিন্তু আমার যেমন পছন্দ, তেমনই পোশাক পরি। সব সময় পরি ক্রেপের সিল্ক শাড়ি; তাহলে অন্য সময় আলাদা পোশাক কেন পরব। আর ক্রেপ শাড়ি পরার সুবিধাও আছে। সারা দিনে শাড়ি ভাঁজ হওয়ার দুশ্চিন্তা থাকে না।’
মায়ের কাছ থেকে হীরার গয়না পেয়েছেন। হালকা হীরার গয়না পরতে ভালোবাসেন। হালকা অন্য গয়নাও পরেন। কোথাও বেড়াতে গেলে সিরামিকের সামগ্রী কেনেন। এটি যেমন সংগ্রহ করা তাঁর শখ, তেমনি শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে সব রঙের স্যান্ডেল-ব্যাগ আছে তাঁর সংগ্রহে।
যখনই সুযোগ পান, সিনেমা দেখেন। বই তো তারানার সব সময়ের সঙ্গী। একটা সময় রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র পড়লেও এখন পড়েন বিশ্ব অর্থনীতি ও রাজনীতির বই। ‘সকালবেলার পাখি’ তকমাটা তারানা হালিমের সঙ্গে মিলে যায়। কাজ না থাকলে রাত ১০টার দিকে ঘুমিয়ে পড়েন। আর সকালেও ওঠেন ছয়টার মধ্যে। দেরি হলেও তা বড়জোর আটটা।
নিজেকে কীভাবে তরুণ রেখেছেন? তখন তাঁর ‘ট্রেডমার্ক’ হাসিটা দিয়ে বলেন, ‘কেউ বিশ্বাস করে না যে আমি কোনো ডায়েট বা ব্যায়াম করি না। জিনগতভাবে আমি পাতলা গড়নের। আর নিজে রান্না করতে পারি না। আমার ছোট ছেলে প্রীয়ম ও আমি বাইরের খাবারই বেশি পছন্দ করি। বড় ছেলে প্রীতম অবশ্য বাসার খাবার খেতে পছন্দ করে। ও এখন পড়াশোনা করছে অস্ট্রেলিয়াতে।’
এভাবেই কাটে তারানা হালিমের দিন।