যখন যেমন জ্যাকেটে
‘মাঠের বাঁশি শুনে শুনে আকাশ খুশি হল
ঘরেতে আজ কে রবে গো, খোলো খোলো দুয়ার খোলো।’
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পৌষ নিয়ে লিখেছিলেন এমন বাক্য দুটি। পৌষ মাস শুরু হতেই শহরে, গ্রামে তীব্র শীত নেমেছে। যত শীতই আসুক, ঘরে যে থাকা হয় না। তাই এবার পৌষেই প্রয়োজন পড়ছে পুরু জ্যাকেট। প্রয়োজন এবং ফ্যাশন মিলেমিশে এবার তরুণদের পছন্দের তালিকায় লেদার জ্যাকেট থাকছে প্রথমে। অনেক দিন বাদে জিনস জ্যাকেটও ফিরে এসেছে বাজারে।
এ বছর জ্যাকেটের হাল ফ্যাশন নিয়ে জানতে চাইলে মেনজ ক্লাবের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হেলাল জানালেন, শীতের শুরুতে কাপড়ের তৈরি জ্যাকেটের চাহিদা বাড়লেও এখন লেদারের চল। মোটরসাইকেল আরোহীদের প্রথম পছন্দে থাকছে লেদারে তৈরি জ্যাকেটগুলো। এসব জ্যাকেটে আবার কটন অথবা উলের লাইনিং থাকছে। এটি সৌন্দর্য যেমন বাড়ায়, শরীরও উষ্ণ রাখে। কটন, জিনস এবং হুডির কাটতিও বেশ। যেসব রঙের জ্যাকেট তরুণদের বেশি টানছে তার মধ্যে নীল, কালো, ক্রিম, শেওলা ও লাল উল্লেখযোগ্য।
প্রতি শীতেই জ্যাকেটের নকশা এবং কাপড়ে আসে বৈচিত্র্য। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। বাজার ঘুরে দেখা গেল, জেন্টস লেদার জ্যাকেট, হাফ ও ফুল স্লিভ মেনজ জ্যাকেট, হাফ ও ফুল স্লিভ ক্যাজুয়াল জ্যাকেট, মেনজ কটন জ্যাকেট, মেনজ রেগুলার ফিট জ্যাকেট, ফুল এবং হাফ স্লিভ জেন্টস জুটির জ্যাকেট এবার বেশি চলছে। জ্যাকেট পরলে তার সঙ্গের অনুষঙ্গগুলোতেও পরিবর্তন আনতে হয়। র্যাভেন লেদারের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর আর কে হান্নান জানালেন, লেদার জ্যাকেটের ভেতরে একরঙা টি–শার্ট বেশি মানানসই। প্যান্টের ক্ষেত্রে জিনস ভালো। সেটি হতে পারে যেকোনো রঙের। পায়ে অ্যাঙ্কেল বুট। হাতঘড়ির বেলায় স্মার্ট ওয়াচ সবচেয়ে ভালো। জ্যাকেটের রঙের ক্ষেত্রে ভিনটেজ বাদামি কিংবা লাল রং ভালো দেখাবে। লেদার জ্যাকেটের যত্ন লাগে বেশি। কুয়াশায় ভিজে গেলে দ্রুত মুছে ফেলতে হয়। পানি না লাগালে দীর্ঘদিন ভালো থাকবে। আর ধোয়ার প্রয়োজন হলে ড্রাই ওয়াশে দিতে হবে। এ ছাড়া নিয়মিত সাইনিং করলে লেদার জ্যাকেট থাকবে নতুনের মতো। টিকবেও বহুদিন। জিনস, কটন এসব জ্যাকেট ধোয়ার পরে তীব্র রোদে না রেখে ছায়ায় শুকিয়ে নিলে রং জ্বলে যাওয়ার শঙ্কা কমে।
কোথায় পাওয়া যাবে
ইয়েলো, প্লাস পয়েন্ট, এক্সট্যাসি, ক্যাটস আই, ইনফিনিটি, মেনজ ক্লাব, লা রিভ, রিচম্যান, টপ টেনসহ রাজধানীর বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস নতুন ডিজাইন এবং বিভিন্ন রঙের জ্যাকেট এনেছে বাজারে। এ ছাড়া যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা সিটি, পলওয়েল, নিউমার্কেট, বঙ্গবাজার, ঢাকা কলেজের উল্টো দিকের বাজারগুলোতেও পাওয়া যাবে হাল ফ্যাশনের জ্যাকেট।
দরদাম
ব্র্যান্ড হাউসের জ্যাকেটের দাম যেমন একটু বেশি, তেমনি বৈচিত্র্যও বেশি। এখানে ৫ হাজার টাকার মধ্যে পছন্দের জ্যাকেট কিনতে পারবেন। লেদার জ্যাকেট কিনতে চাইলে গুনতে হবে বাড়তি কিছু টাকা। এসব জ্যাকেট মিলবে ১২ হাজারের মধ্যে। সাধারণ জ্যাকেট খোলা বাজারে দরদাম করে ৬০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে পছন্দের জ্যাকেট কিনে ফেলা সম্ভব।