বোহিমিয়ান ধারার ব্যাগ

বোহেমিয়ান রটেন ব্যাগ এই সময়ের স্টাইলে এনেছে নতুনত্ব। মডেল: তৃণ, ব্যাগ ও পোশাক: সিকোসো, সাজ: রেড বিউটি পারলার, ছবি: কবির হোসেন
বোহেমিয়ান রটেন ব্যাগ এই সময়ের স্টাইলে এনেছে নতুনত্ব। মডেল: তৃণ, ব্যাগ ও পোশাক: সিকোসো, সাজ: রেড বিউটি পারলার, ছবি: কবির হোসেন

ফ্যাশন একই ধারায় চলে না। সময়ের সঙ্গে বদলে যায় ক্ষণে ক্ষণে। পোশাক, জুতা থেকে শুরু করে ব্যাগ—সবকিছুতেই এখন আধুনিক ফ্যাশনের ছোঁয়া। তাই তো পরিবর্তনশীল ফ্যাশনকে মাথায় রেখে ব্যাগের বাজারেও এসেছে নতুন একটি ধারা। উপকরণ ও স্টাইলের কারণে একে ‘রটেন বোহ’ বা ‘বোহিমিয়ান রটেন’ ব্যাগ বলা হচ্ছে। বোহিমিয়ান থেকেই বোহ শব্দটি এসেছে।

পাশ্চাত্য ধাঁচের পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায় এই ব্যাগ ব্যাগ: সিকোসো
পাশ্চাত্য ধাঁচের পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায় এই ব্যাগ ব্যাগ: সিকোসো

এই ধারার ব্যাগগুলো অন্যান্য দেশে বেশ জনপ্রিয় হলেও আমাদের দেশে নতুন। বোহিমিয়ান এখন ফ্যাশনের একধরনের স্টাইল। অল্প কথায় বললে বোহিমিয়ান ফ্যাশন একটু এলোমেলো ধরনের। অর্থাৎ রংবেরঙের ঢিলেঢালা টপ, টিশার্ট, একটু ঘের দেওয়া স্কার্ট বা লেগিংস, বেল বটম প্যান্ট বা পালাজ্জো প্যান্ট বোহিমিয়ান ফ্যাশনের অংশ। তবে এর কাপড়ের স্টাইলগুলো কিন্তু একেবারেই আলাদা। ফুলেল নকশা, একটু ট্রাইবাল প্রিন্ট বোহিমিয়ান ফ্যাশনের জন্য প্রযোজ্য। এমন ধরনের ফ্যাশনের সঙ্গে এ রকম ব্যাগ ব্যবহার করা হয় বলেই এর নাম দেওয়া হয়েছে বোহ বা বোহিমিয়ান ব্যাগ।

পাশ্চাত্য ধাঁচের পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায় এই ব্যাগ ব্যাগ: সিকোসো
পাশ্চাত্য ধাঁচের পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায় এই ব্যাগ ব্যাগ: সিকোসো

এ রকমের ব্যাগের চল শুরু ইন্দোনেশিয়ার বালিতে। এ কারণে সমুদ্রতীরবর্তী যেকোনো অনুষ্ঠানে এই ব্যাগ নেওয়ার প্রচলন বেশি। যদিও পরে সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে গেছে ব্যাগের এই স্টাইলটি। ব্যাগগুলোর প্রধান উপকরণ হচ্ছে বেত বা বাঁশের বাকল। তাই বেশির ভাগ ব্যাগই প্রাকৃতিক রঙের হয়ে থাকে। বলা হয়, বিশেষ গাছের উপকরণ থেকেই তৈরি হয়ে থাকে ব্যাগটি। এর প্রধান উপকরণ বেত বা বাঁশের বাকল বলেই নামের সঙ্গে আছে রটেন শব্দটি।

যদিও রটেন বোহ ব্যাগ সেই দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে মিল রেখেই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে কিন্তু এই ব্যাগটি ব্যবহার করতে হবে এ দেশের ফ্যাশন ও পরিবেশের সঙ্গে মিল রেখে। এ বিষয়ে ডিজাইনার লিপি খন্দকার বলেন, ‘আমাদের দেশে চাইলেই সব জায়গাতে বোহিমিয়ান ফ্যাশনটি নিয়ে আসতে পারব না। তাই এ দেশের সংস্কৃতি ও রুচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এই ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। তরুণীরা টি–শার্ট, প্যান্টের সঙ্গে এ ধরনের ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। বিশেষ করে লম্বা বেল্ট দেওয়া ঝোলানো ব্যাগগুলো এমন কাপড়ের সঙ্গে বেশি মানানসই।

মানিয়ে যাবে অনানুষ্ঠানিক ক্যাজুয়াল জায়গায়
মানিয়ে যাবে অনানুষ্ঠানিক ক্যাজুয়াল জায়গায়

আবার আমাদের দেশে যেহেতু শাড়ি পরার একটি প্রচলন আছে, তাই শাড়ির সঙ্গেও মানানসই করে ব্যাগটি ব্যবহার করতে হবে। শাড়ি পরলে তা অবশ্যই আমাদের দেশে উপকরণের হতে হবে। কারণ ব্যাগটির উপকরণও অনেকটা দেশি ধরনের। শাড়ি তাঁতের হলে সবচেয়ে ভালো হয়, তবে খাদি বা টাঙ্গাইলের শাড়ির সঙ্গেও মানাবে। এ ক্ষেত্রে হাতে নেওয়া যায়, এমন ব্যাগ ভালো লাগবে।

বেত বা বাঁশের বাকল ব্যবহার করে বানানো হচ্ছে ব্যাগগুলো
বেত বা বাঁশের বাকল ব্যবহার করে বানানো হচ্ছে ব্যাগগুলো

ব্যাগটির সঙ্গে মানানসই গয়না হবে পাটের বা মাটির উপকরণের। এই ব্যাগটি খুবই পরিপাটি সাজ ও কাপড়ের সঙ্গে ভালো লাগবে, নয় তো ব্যাগটি তার সৌন্দর্য হারাবে। ব্যাগগুলোর আকারে আছে বেশ ভিন্নতা। একেকটি আকারের আছে একেক নামও। যার মধ্যে রয়েছে ব্যারেল বোহ ব্যাগ, হাফ সার্কেল বোহ ব্যাগ, ওভাল বোহ ব্যাগ, রাউন্ড বোহ ব্যাগ, রেক্টাঙ্গেল বোহ ব্যাগ। এ ছাড়া লম্বা বেল্ট দেওয়া বা নক স্টাইল—দুই ধরনের ব্যাগই রয়েছে। বেল্ট দেওয়া ব্যাগগুলো তুলনামূলক একটু বেশি মজবুত হয়ে থাকে। রঙের ক্ষেত্রে সাধারণত প্রাকৃতিক রংই রাখা হয়। তবে ওভাল বা রাউন্ড বোহ ব্যাগে কিছুটা ভিন্নতা আনার জন্য অন্য রং ব্যবহার করা হচ্ছে।

উপকরণই এসব ব্যাগের সৌন্দর্য
উপকরণই এসব ব্যাগের সৌন্দর্য

কোথায় পাবেন
যেহেতু আমাদের দেশে এই স্টাইলের ব্যাগ একেবারেই নতুন, তাই কিছু নির্দিষ্ট দোকানেই পাবেন ব্যাগগুলো। যার মধ্যে রয়েছে বনানীর সিকোসো ও নয়ের।

নানা নকশা ও আকারে তৈরি হচ্ছে এই ব্যাগ। ব্যাগ: নোয়াহ্‌
নানা নকশা ও আকারে তৈরি হচ্ছে এই ব্যাগ। ব্যাগ: নোয়াহ্‌

দামদর
ব্যাগগুলোর আকার অনুযায়ী এর দাম নির্ধারণ করা হয়। এর দাম পড়বে ২০০০ টাকা থেকে ৪৫০০ টাকা পর্যন্ত।