বিয়ের সাজপোশাক কেমন হবে, জেনে নিন স্বস্তিকার কাছ থেকে
ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা সময়ে আছেন স্বস্তিকা মুখার্জি। একের পর এক নেটফ্লিক্সের সিরিজে দেখা দিচ্ছেন ভারতের এই বাঙালি অভিনেত্রী। বলিউডের মূলধারার গণমাধ্যমে নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে তাঁর সাক্ষাৎকার। বিয়ের মৌসুমকে মাথায় রেখে সম্প্রতি ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ তাঁর একটি বিশেষ ‘ওয়েডিং ফটোশুট’ করেছে। আর স্বস্তিকা জানিয়েছেন কনের সাজে তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দ আর অপছন্দের কথা। স্বস্তিকার শাড়ির সংগ্রহ আর শাড়ি নিয়ে তাঁর কৌতুহলের কথা কে না জানে! তাই আলাপের অনেকটা জুড়েই ছিল কনের বিয়ের শাড়ি। সেই সাক্ষাৎকারের নির্বাচিত কিছু অংশ নিয়েই এই আয়োজন।
প্রশ্ন :
শীতের বিয়েতে আপনার পছন্দের ফ্যাশন কী?
শীতকালে বিয়েতে কনেরা ভারী সিল্ক যেমন কাঞ্চিপুরম, পাটোলা আর মটকা সিল্কের শাড়িগুলোর দিকে হাত বাড়াতে পারেন। কেননা, অন্য সময় এই শাড়িগুলো পরা হয় না। বিবাহোত্তর সংবর্ধনা বা রাতের পার্টিতেও এই শাড়িগুলো পরা যেতে পারে। এর সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী ব্লাউজই ভালো মানাবে। তবে ব্লাউজে চাইলে একটু নিরীক্ষা আর ফিউশনও আনা যেতে পারে। জমকালো একটা মখমলের টার্টেল নেকের টপও পরতে পারেন। সহজেই তাতে শীতকে টেক্কা দেওয়া যাবে। এর সঙ্গে জুয়েলারি যতটা সম্ভব ‘মিনিমাল’ রাখাই স্বাচ্ছন্দ্যের হবে। তবে একটা চাঙ্কি নেকপিসের কোনো বিকল্প নেই। আর এখন যদি আমাকে কোনো বিয়েতে দাওয়াত দেওয়া হয়, তাহলে আমি হাতাকাটা ব্লাউজের সঙ্গে একটা উলের শাড়ি পরব। শাড়িটা মূলত আমার মায়ের। অনেক আগে কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়ে কিনেছিলেন। এটা আমার সংগ্রহে থাকা শাড়িগুলোর ভেতর অন্যতম প্রিয়।
প্রশ্ন :
আপনার ওয়েডিং ফ্যাশন ওয়ার্ডরোবে কী কী থাকবে?
ভারী ভারী শাড়ি থাকবে। শাড়ির মোটিফগুলো যেন বড় আর জমকালো হয়। পাড়ে সুন্দর কাজ থাকতে হবে। লাল, কমলা আর ক্রিমসন রঙের। আর একটা অবশ্যই কালো। এর ওপর সোনালি জরির কাজ থাকবে। আর বিয়েতে একটু ভারী গয়না না পরলে চলে? তবে গয়নাগুলো যে সোনারই হতে হবে, তা নয়। রূপা বা অন্য কোনো ধাতুরও হতে পারে। চুড়িভর্তি হাতে থাকবে মিনিমাল ক্লচ বা বটুয়া। চুলে, বেণিতে বা খোঁপায় ফুল না গুজলে কিন্তু সাজ সম্পূর্ণ হবে না।
প্রশ্ন :
কনের সাজপোশাকে কী পরিবর্তন এসেছে?
আগে তো কনের একটাই কমন বিয়ের পোশাক ছিল। লাল বেনারসি আর লম্বা ঘোমটা। এর আড়ালেই কনে প্রায় নীরবে তাঁর বিয়ের আয়োজন উপভোগ করত। এখন বিয়ের কনেরা অনেক সাহসী হয়েছেন। বিশ্বায়নের প্রভাব সম্ভবত সবচেয়ে বেশি স্পষ্ট হয়ে ধরা পরছে বাঙালি নারীর বিয়ের পোশাকে। তাঁরা পশ্চিমা পোশাক আর বৈচিত্র্যময় ওয়েডিং আউটফিটের দিকে হাত বাড়াচ্ছে। বিয়েতে ভারী পোশাক, ভারী গয়না, সোনার গয়না—এগুলো জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। বিয়ের পোশাকে নিজের ব্যক্তিত্ব, রুচি আর স্বাচ্ছন্দ্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে চাচ্ছেন কনে। অনেকেই জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ দিনে হালকা পোশাক আর ছিমছাম সাজে দেখা দিচ্ছেন।
প্রশ্ন :
সম্প্রতি আপনার দেখা একজন ফ্যাশনেবল কনের কথা বলুন
অঙ্কিতা চক্রবর্তী। ও একেবারে একরঙা সাদা শাড়ি পরেছিল। আর ছিল টকটকে লাল ওড়না। গলায় গোলাপের লম্বা মালা। সাজ বলতে চোখভর্তি কাজল আর ছোট লাল টিপ। গলায় একটা হার। ব্যাস, এটুকুই। ও দেখিয়েছে, কত কম টাকায়, ডিজাইনারস ড্রেস ছাড়াও সুন্দর বৌ সাজা যায়।
প্রশ্ন :
আপনি যদি এখন বিয়ে করেন, কীভাবে বউ সাজবেন?
সাদামাটা কিন্তু জমকালো, সংক্ষিপ্ত আবার মার্জিত, ঐতিহ্যবাহী হয়েও আন্তর্জাতিক। ব্যক্তি আমি যেমন—ভীষণ আবেগি আবার শক্তিশালী, সাহসী হয়েও মধ্যে মধ্যে কিছুই না বলা। এই অন্তঃদ্বন্দ্বগুলো আমার সাজপোশাকের ফিউশনে ধরা দেওয়া চাই। তবে অবশ্যই টেকসই পোশাক পরব। আর শাড়িটি হবে তাঁতে বোনা। ভারী বিলাসবহুল ডিজাইনারস ড্রেস জাতীয় কিছুই নয়।