কাতারে বাংলার গামছা, জামদানি, কাতান
চলতি মাসের ৬ তারিখে দোহায় হয়ে গেল বাংলাদেশি কাপড়ে তৈরি পোশাকের ফ্যাশন শো। দুবাইপ্রবাসী ডিজাইনার নীহারিকা মমতাজের করা পোশাক নিয়ে কাতার ফাউন্ডেশনে অনুষ্ঠিত হয় এই ফ্যাশন শো। কাতারের অনন্যা অ্যাসোসিয়েশন অব উইমেন এবং কাতার বাংলাদেশ দূতাবাস অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে। পুরো ফ্যাশন শোটির প্রোডিউসার এবং কিউরেটর হিসেবে ছিলেন নীহারিকা মমতাজ নিজেই ।
এই ফ্যাশন শোতে গামছা, জামদানি, কাতান, অরগাঞ্জা কাপড় দিয়ে বানানো পোশাকগুলোয় ছিল সমসাময়িক কাট। চেক ও ডোরাকাটা নকশাগুলো যেন বাংলাদেশের রঙিন ঐতিহ্যের কথাই তুলে ধরে। গামছা ও শাড়ির ওপর শিল্পী কামরুল হাসানের চিত্রশিল্প থেকে নেওয়া বিভিন্ন মোটিফ বোনা হয়েছে। ফ্যাশন শোতে আসা অতিথিদের মন জয় করে নেয় গামছার প্রাণবন্ত রং। অরগাঞ্জা কাঁচা সিল্কের সুতা থেকে তৈরি একটি নিখুঁত এবং হালকা ওজনের উপকরণ। এই সংগ্রহের নাম দিয়েছেন আশা। এই সংগ্রহের মধ্যে মূলত শাড়িই ছিল।
‘এনচান্টিং ফেব্রিকস ইউনাইটিং কালচারস’ শিরোনামের ফ্যাশন শোতে মোট ২৪টি পোশাক তুলে ধরেছিলেন নীহারিকা মমতাজ। গামছার ওপর যেসব মোটিফ তুলে ধরা হয়েছে, সেগুলো কামরুল হাসানের ছবি থেকে নেওয়া। নিজস্ব সংগ্রহে থাকা দুটি ছবি থেকে মোটিফগুলো নিয়েছেন তিনি। নীহারিকা মমতাজ বলেন, ‘গামছায় আমি কখনো জরির ব্যবহার দেখিনি। কখনো হাতে বোনা কাজও দেখিনি। এমব্রয়ডারি কিংবা ছাপা নকশার কাজ হয়েছে অনেক। নতুন কী করা যায়, সেই চিন্তা থেকেই এ নকশা করা।’ সাত মাস ধরে ক্রমাগত চেষ্টা করে কারিগরদের দিয়ে এ মোটিফ ফোটাতে পেরেছেন।
আমাদের দেশে হাতে বোনা কাতান শাড়ির কদর সব সময়ই ছিল। কাতান শাড়ি সব সময়েই সিল্ক সুতায় বোনা হয়ে আসছে। কিন্তু ধীরে ধীরে এর ঐতিহ্যও লুপ্ত হয়ে আসছে। কাতান শাড়ির প্রতি ভালোবাসা থেকেই কাপড়ের ওপর ভিন্নভাবে নকশা ফুটিয়ে তুলেছেন। শাড়িগুলোর স্টাইলিংও করেছেন ভিন্ন। একটি শাড়িকে যেন পাশ্চাত্য ধারাতেও পরা যায়, সেদিকটিও মাথায় রেখেছিলেন।
ব্লাউজ কিংবা জ্যাকেটের নকশাও নজর কেড়েছে। কোমরে পরিয়েছেন কাপড়ের তৈরি বেল্ট বা কোমরবন্ধনী। শাড়ির সঙ্গে স্কার্ফও পরিয়েছেন বেশ ঢং করে। জামদানি দিয়ে ছেলেদের জন্য বানিয়েছেন টাক্সিডো শার্ট, হাফ শেরওয়ানি ও হাফ জ্যাকেট। পোশাকের কাটছাঁটে চেষ্টা করেছেন সমসাময়িক ধারার কাট তুলে ধরতে। মাধবীলতা নামের সংগ্রহে নীহারিকা মমতাজ তুলে ধরেন জামদানির পোশাক ও শাড়ি।