‘প্রতিবার বাইরে বের হওয়ার আগে আমি ৯০ মিনিট বসে থাকি, ৬ জনের দল আমার মেকআপ করে’
বলিউড তারকা সোনম কাপুরের একটা পোস্ট ভাইরাল হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। হাজারো বার শেয়ার করা হয়েছে পোস্টটি। কুড়াচ্ছে ব্যাপক প্রশংসাও। সেখানে তিনি জানিয়েছেন যে নিখুঁত (ফ্ললেস) হওয়া একটা মিথ। কেউ নিখুঁত সুন্দর নন। কেউ–ই না।
৩৮ বছর বয়সী সোনম লেখেন যে নিখুঁত হওয়া খুব ভালো ব্যাপার নয়; বরং খুবই বোরিং, কঠোর পরিশ্রমের, অত্যন্ত খরচান্ত একটা ব্যাপার। একটা মেয়ে যখন আয়নার দিকে তাকাবে, তাকে দেখতে সেলিব্রিটিদের মতো লাগবে না, আর এটাই স্বাভাবিক। ঘুম থেকে ওঠার পর কাউকে দেখতে ‘দশে দশ’ লাগে না। কোনো তারকাকেও নয়। এমনকি বিয়ন্সেকেও নয়!
সোনম লেখেন, ‘সত্যিটা জানুন। প্রতিবার আমি বাইরে বের হওয়ার আগে অন্তত ৯০ মিনিট মেকআপের চেয়ারে বসে থাকি। ছয়জনের একটা দল আমার হেয়ার আর মেকআপ করে। পেশাদার শিল্পীরা আমার নখ শেষবারের মতো পলিশ করে দেন। প্রতি সপ্তাহে আমার ভ্রু ট্যুইজ করা হয়। কাট বদলে যায়। শরীরের এমন সব জায়গায় কনসিলার লাগানো হয়, যেটা আমি কখনো ভাবিনি।’
এক বছর বয়সী এক সন্তানের এই মা আরও জানান, তিনি প্রতিদিন ভোর ছয়টায় ঘুম থেকে ওঠেন। সাড়ে সাতটা পর্যন্ত অর্থাৎ দেড় ঘণ্টা সময় জিমে কাটান। মাঝেমধ্যে আবার সন্ধ্যায়ও জিম করেন। তাঁর একটা ডায়েটিশিয়ানের দলই আছে, যারা ঠিক করে দেয় সারা দিনে কী খাবেন, কতটুকু খাবেন। আরেকটা দল আছে যারা সারা বিশ্বের ফ্যাশনের খোঁজখবর রাখে আর ঠিক করে দেয় সোনম কোথায় কী পরে যাবেন। সোনমের ফেসপ্যাকে যা থাকে, অনেকের খাদ্যতালিকায়ও এই উপাদান থাকে না। আর এত কিছুর পরও যখন ‘নিখুঁত’ লাগে না, তখন শুরু হয় ফটোশপের কারবার।
সোনম লেখেন, ‘আমি আগেও বলেছি আর বলেই যাব, নিখুঁত দেখাতে অনেক শ্রমের পাশাপাশি সময় আর টাকার প্রয়োজন। আপনি একটা সেলিব্রিটিকে যেভাবে দেখেন, সেটা অবাস্তব, অনেকের জন্যই অসম্ভব। তিনি ওভাবে ঘুম থেকে ওঠেন না!’
এই বলিউড তারকা আরও লেখেন, ‘সেলিব্রিটির মতো দেখানোর চেয়ে বরং আরাম করে আট ঘণ্টা ঘুমানো বেশি জরুরি। আত্মবিশ্বাসী আর সুখী হওয়া জরুরি। কোনো মেকআপ ছাড়াই যদি আপনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সুখে থাকেন, এর চেয়ে ভালো কিছু আর হয় না। বিশ্বাস করুন, হয় না।’
সোনম তাঁর লেখাটি শেষ করেছেন এভাবে, ‘তাই প্রতিবার আপনি যখন একটা ১৩ বছরের মেয়েকে বিলবোর্ডে কোনো সেলিব্রিটির সঙ্গে দেখেন, ওই মেয়েটাকে কখনোই ওই সেলিব্রিটির সঙ্গে তুলনা করবেন না। তার সত্যিকারের চুলের প্রশংসা করুন। হাসির প্রশংসা করুন। তার বুদ্ধিদীপ্ত কথা, হাস্যরস আর উদার মনের প্রেমে পড়ুন। কেননা, পাশে যে সেলিব্রিটিকে দেখছেন, সেটা বাস্তবসম্মত নয়। আমাকে যেভাবে দেখেন, আমি এভাবে ঘুম থেকে উঠি না। আর এটাই স্বাভাবিক। একদম স্বাভাবিক। নিজেকে সেলিব্রিটির মতো দেখানো মোটেই জরুরি কিছু নয়। বিশ্বাস করুন, জরুরি নয়!’