ডিজাইনার কথন, পর্ব ০২: আফসানা ফেরদৌসী

ভুল করে হলেও সঠিক সিদ্ধান্তটাই নিয়েছি: আফসানা ফেরদৌসী

‘ভালোবাসা তারপর দিতে পারে কত বর্ষার সুবাস।’ ফ্যাশন ডিজাইনার আফসানা ফেরদৌসীর আদাবরের স্টুডিওতে ঢুঁ দিতেই কানে এল অর্ণবের ‘হোক কলরব’ অ্যালবামের এই গান। মেমোরি লেন ফিরিয়ে নিয়ে গেল বেশ কয়েক বছর পেছনে, কী মধুর নস্টালজিয়া! কিছুদিন আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার সামনের রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলেন আফসানা, বাঁশি দেখে হুট করে একটা কিনে ফেললেন। এখন ‘বহু কষ্টে’ সামান্য যেটুকু অবসর মেলে, সেটা মনের অগোচরেই পেরিয়ে যাচ্ছে বাঁশির সুর হয়ে। আলাপ শুরুর আগে বাঁশিতে শোনালেন সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘অপুর সংসার’ সিনেমার থিম সং। বিশাল বৈঠকখানা বই, টেপা পুতুল, প্যাঁচা, হাতি, মুরগি, ফুল, শোপিস, আর্টপিসে সাজানো। এক পাশে বাঁশের কাঠের আলনায় ঝুলছে আফসানার ডিজাইন করা কিছু পোশাক। চা–বিস্কুট নিয়ে জিনাত শারমিনের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর ছলে শুরু হলো আড্ডা

এই সেলাই মেশিন বাংলা সিনেমার এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা শাবানার মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়।
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন
প্রথম আলো:

(পা–চালিত সিঙ্গারের মেশিন দেখিয়ে) এই মেশিন পেলেন কোথায়?

অনেক দিন ধরেই খুঁজছিলাম। (হাসতে হাসতে) নায়িকা শাবানার মতো আমারও সেলাই মেশিন চালিয়ে অনেক বড় প্রতিষ্ঠান করার ইচ্ছা আছে। যেখানে অনেক মানুষকে কর্মসংস্থানের জায়গা করে দিতে পারব। আমি ‘ইকোফ্রেন্ডলি ফ্যাশন’কে উদ্‌যাপন করি। এই সেলাই মেশিন চালাতে কোনো বিদ্যুৎ খরচ হয় না। ইতিমধ্যে এখানে কয়েকটা পোশাকও বানিয়েছি।

প্রথম আলো :

আপনি নাকি জীবনে পড়াশোনাই করতে চাননি? সুখী গৃহিণী হতে চেয়েছিলেন?

হ্যাঁ। উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময় একটা প্রেমে পড়েছিলাম, মনে হলো বিয়ে করে সেটেল ডাউন করাই জীবনের লক্ষ্য।

প্রথম আলো :

আপনার জন্ম, বেড়ে ওঠা কোথায়?

আমার আব্বু সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। সেই সুবাদে নীলফামারীতে আমার জন্ম। বেড়ে ওঠা ঢাকায়। আমার যখন ৯ মাস বয়স, তখন আমরা ঢাকায় চলে আসি। শহীদ আনোয়ার গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়তাম। এসএসসি পরীক্ষার আগে দিয়ে কুমিল্লা চলে যাই। ওখানে আমরা সাড়ে তিন বছর ছিলাম। ওখানে ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দিই। উচ্চমাধ্যমিক শেষে মনে হলো, যথেষ্ট হয়েছে! আর লেখাপড়া করব না। পড়াশোনা নিয়ে কেমন উদাস হয়ে গেলাম। এখন মনে হয় যে আমার ভেতরের শিল্পীসত্তার কারণে এ রকম হয়েছিল। আমার ভেতরে যে একটা শিল্পীমন আছে, তখন তো আমি সেটা ক্ষুণাক্ষরেও জানি না।

সর্বশেষ ‘খাদি’ ফ্যাশন শো তে আলোচিত হয় আফসানার সংগ্রহ। ছবিতে ডামির গায়ে যে পোশাকটি দেখছেন সেটি ফেলে দেওয়া সুতা আপসাইকেল করে বানানো
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন
আরও পড়ুন
প্রথম আলো:

বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজিতে ভর্তি হলেন কীভাবে?

আমার স্কুলের এক বন্ধু বিজিএমইএতে ভর্তি পরীক্ষা দেবে। একসঙ্গে দুটি ফরম কিনল। আমাকে অনুরোধ করল পরীক্ষা দিতে। পাশাপাশি বসলে ওর একটু ‘হেল্প’ হবে। আমি ছোটবেলা থেকেই অঙ্কে ভালো। তবে ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে ওর তো মাথায় হাত, পাশাপাশি সিট পড়েনি! এদিকে রেজাল্টের পর দেখা গেল, সম্মিলিত মেধাতালিকায় আমি পঞ্চম স্থান অধিকার করেছি। ইউনিভার্সিটি থেকে বাসায় ফোন এল ভর্তি হব কি না। এদিকে আমারও মনে হচ্ছিল, অন্তত গ্র্যাজুয়েশনটা শেষ করি। মাকে নিয়ে ভর্তি হতে চলে গেলাম। তখনো জানি না বা ঠিক করিনি যে কিসে পড়ব।
ভর্তির সময় অ্যাডমিনে ছিলেন রীতা ম্যাম। ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম কোন বিষয়ে পড়লে ভালো হয়। উনি বললেন এফডিটিতে (ফ্যাশন ডিজাইনিং অ্যান্ড টেকনোলজি) পড়তে। ২০০৮ সালের মাঝামাঝি আমি ভর্তি হয়ে গেলাম। ওই সময় উনি যদি বলতেন, অ্যাপারেল এএমটি অথবা কেএমটি—আমি ভর্তি হয়ে যেতাম হয়তো!

আফসানা ফেরদৌসী
ছবি: ফেসবুক থেকে

প্রথম আলো :

তারপর?

লাইব্রেরির বইগুলো প্রথম আমার মনোযোগ আকর্ষণ করল। ছবিপ্রধান রঙিন বিদেশি বই, কাগজের মান ভালো। সেগুলোর পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে আমার আগ্রহ জাগল। মনে হলো আমি ‘হাই ফ্যাশন’ নিয়ে কাজ করতে চাই। পার্টি ড্রেস, রেড কার্পেট লুকের কাস্টমাইজড পোশাক বানাব। এর মধ্যে তৃতীয় বর্ষের শুরুতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ‘ইউরো বাংলা ফিউশন ফ্যাশন’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিলাম। আর কী আশ্চর্য, সেখানে প্রথম হলাম।

প্রথম আলো :

এটা কি ‘রিডিউস–রিইউজ–রিসাইকেল’ প্রজেক্টটা?

হ্যাঁ। এসডিসি (সোসাইটি অব ডায়ার্স অ্যান্ড কালারিস্ট) ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট ডিজাইন কম্পিটিশন ২০১১–এর থিম ছিল টেকসই ফ্যাশন। সেখানে আমি বাংলাদেশে প্রথম হয়ে হংকংয়ে মূল প্রতিযোগিতায় অংশ নিই। যেখানে ১৪টি দেশ অংশগ্রহণ করে। আমি সেখানে দ্বিতীয় হই।

অস্ট্রেলিয়ায় আগুন লাগলে অসংখ্য কোয়ালা পুড়ে মারা যায়। সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ‘অ্যানিমেল রাইটস মুভমেন্ট’ এর অংশ হিসেবে একটা সংগ্রহ আনেন আফসানা
ছবি: সংগৃহীত

প্রথম আলো :

আপনি কী নিয়ে কাজ করেছিলেন?

সেই প্রথম থেকেই আমি কোনো কাজ নামানোর আগে দীর্ঘ সময় ধরে রিসার্চ করি। মনে করেন, ১৫ দিন বা এক মাসে একটা সংগ্রহ করে ফেললাম। তবে সেটার জন্য আমার ছয় মাসের একটা প্রস্তুতি থাকে। এই সংগ্রহটার জন্য পড়াশোনা শুরু করলাম। একটা কেস স্টাডি আমাকে ভেতর থেকে নাড়া দিল। ভারতের পাঞ্জাবের প্রত্যন্ত কয়েকটা গ্রামের কথা। সেখানে হঠাৎ করেই বিকলাঙ্গ শিশু যত্ন নেওয়া শুরু করে। স্থানীয় মানুষেরা ভাবছিল যে কোনো দেবদেবী হয়তো অসন্তুষ্ট হয়েছে। ওরা পূজা অর্চনা বা ধর্মীয় কর্মকাণ্ড বাড়িয়ে দিল। তারপরও বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম নেওয়া বন্ধ হচ্ছিল না। পরে দেখা গেল, ওখানে কটন সুতার উৎপাদন হয়। সেই প্রক্রিয়ায় মাটি আর পানি ব্যাপকভাবে দূষিত হচ্ছিল। কূপের সেই পানি পান করার ফলে গর্ভের শিশুর মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছিল।

প্রথম আলো:

তখন থেকেই কি আপনি পরিবেশবাদী ফ্যাশন ডিজাইনার?

একদম। এখন তো অনেকেই টেকসই ফ্যাশন নিয়ে কাজ করে। আমি যখন শুরু করি, তখন তেমন কোনো রেফারেন্স আমি পাইনি। আমি কেবল টেকসই ফ্যাশন না, একজন অ্যাকটিভিস্ট হিসেবেও কাজ করে আসছি। এখানে আমার পোশাকই প্রতিবাদের ক্যানভাস।

আফসানা নিজেই হয়েছেন মডেল
ছবি: সংগৃহীত

প্রথম আলো :

এসডিসির ওই সংগ্রহের থিম কী ছিল?

সংগ্রহটা আমি করেছিলাম রিকশার থিমের ওপর। রিকশার চাকা থেকে শুরু করে সব জায়গায় জ্যামিতিক নকশা। সেখান থেকে আমাদের নকশা অনুপ্রাণিত। আমি দেখলাম, রিকশা বাহনটা কত রঙিন! অথচ রিকশাচালকদের জীবন কত বর্ণহীন। রিকশা বাহনটা স্বাধীনতার অনুভূতি দেয়। খোলা আকাশ দেখা যায়, বাতাস পাওয়া যায়। হাত বাড়ালেই প্রকৃতি ছোঁয়া যায়। অথচ দিন শেষে তাঁরা যে বস্তিতে গিয়ে ঘুমায়, জায়গাটা খুবই সংকীর্ণ, অস্বাস্থ্যকর, ময়লা–আবর্জনায় পূর্ণ। এই যে জীবনের ‘দোটানা’—সেটিই ছিল আমার থিম। আর আমার টার্গেট কাস্টমার ছিল রকস্টাররা। আমার মনে হয়েছিল, ওরা এই পোশাকগুলো সবচেয়ে ভালোভাবে ক্যারি করতে পারবে। ম্যাট রঙে ন্যাচারাল ডাই। যেমন নারীদের কাছ থেকে পেঁয়াজের খোসা সংগ্রহ করি। ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘অরণ্য’ থেকে সাহায্য পেয়েছিলাম কিছু সোয়াচ (টুকরো কাপড়) তৈরিতে। সংগ্রহগুলো গার্মেন্টসের ফেলে দেওয়া টুকরো কাপড়ে করি।

প্রথম আলো :

একেবারে শুরুতেই আন্তর্জাতিক পুরস্কার?

 

হ্যাঁ। আমি যখন দ্বিতীয় বর্ষে তখন দেখি এক সিনিয়র ভাইয়ের ছবি পোস্টার বানিয়ে ক্যাম্পাসে টানানো। অভিনন্দন জানিয়ে। কেননা, ওই ভাই তখন ভারতে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিল। তখন আমার মনে হয়েছিল, ইশ্‌, আমিও যদি এ রকম কিছু করতে পারতাম! সেবার ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখি আমার ছবি বিশাল ব্যানারে প্রিন্ট করে টানানো। যেন আমি পুরো ক্যাম্পাসের হিরো! সেই মুহূর্তে নিজের ছবির সামনে দাঁড়িয়ে আমার মনে হয়েছিল, আমি কারও কন্যা হিসেবে না, কারও প্রেমিকা বা স্ত্রী হিসেবে না, কারও মা হিসেবে না, একটা স্বতন্ত্র মানুষ হিসেবে আমাকে নিজের পরিচয় গড়তে হবে। আমার অনেক কিছু করার আছে। কাজের ভেতর দিয়ে আমি নিজের ছাপ ফেলতে চাই।  

একটি পোশাকে দেখা যায় অস্ট্রেলিয়ায় পুড়ে যাওয়া কোয়ালাদের জন্য প্রার্থনা করছে বাংলাদেশের মুরগি, গরু, হাস, পাখি
ছবি: সংগৃহীত
প্রথম আলো:

তারপরই কি এসডিসি ইন্টারন্যাশনাল ডিজাইন কম্পিটিশনেও অংশ নিলেন?

হ্যাঁ। ২০১১ সালে। এটা কিন্তু ফ্যাশনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রতিযোগিতা। সারা বিশ্বের ফ্যাশন ডিজাইনাররা এখানকার স্বীকৃতির জন্য মুখিয়ে থাকে। ২০১১ সালে প্রথমবার অংশ নিয়ে প্রথম রানারআপ হই। আমিই এখন পর্যন্ত একমাত্র বাংলাদেশি যে এই পুরস্কার পেয়েছে।

প্রথম আলো :

এরপর তো আপনি এসডিসির সদস্য হয়ে গেলেন?

হ্যাঁ। ২০১৬ সালে আমি বাংলাদেশের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর ও বিচারক হিসেবে অংশ নিই। এখন পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছি। ২০১৮ ও ২০২১ সালে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিচারক হিসেবে অংশ নিই।

‘নদী বাঁচাও’ সংগ্রহের একটি পোশাক
ছবি: সংগৃহীত

প্রথম আলো :

অ্যাকসিডেন্টালি ভর্তি হয়ে স্নাতক শেষে তো আপনিই প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ডটা পেলেন?  

হ্যাঁ। রেজাল্ট ভালোই ছিল। তবে এই পুরস্কার পাওয়ার মতো না। আমাকেই সেই বছরের সেরা শিক্ষার্থী হিসেবে প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। কেননা তত দিনে আমার দুইটা আন্তর্জাতিক পুরস্কার ছিল। ওই অনুষ্ঠানে আব্বা–আম্মাকে ডাকা হয়েছিল। সবাই দাঁড়িয়ে আমার বাবা–মায়ের জন্য তালি দিয়েছিল। সেটা আমার জীবনের একটা সেরা মুহূর্ত। আমি ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়ছি, আব্বার শুরুতে সেটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল। আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাওয়ার পরও। তবে ওই দিনের পর আব্বা বুঝেছিল, আমি জীবনে ভুল করে হলেও সঠিক সিদ্ধান্তটাই নিয়েছি।  

প্রথম আলো :

তারপর কোথায় জয়েন করলেন?

২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে গার্মেন্টস সেক্টরে কাজ শুরু করি। প্রায় এক যুগ শেষে কিছুদিন আগে চাকরি ছেড়েছি। নিজের কাজ এত জমে গেছে, মনে হলো, এখন নিজের কাজে মন না দেওয়াটা অন্যায় হবে। খুব অল্প বয়সে, অল্প সময়ে গার্মেন্টসের গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রমোশন হয়। এই সেক্টরে আমার কাজ চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। যেহেতু টেকসই ফ্যাশন নিয়ে গার্মেন্টস সেক্টরেও এখন অনেক কাজ হচ্ছে। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে কিছু বুলিং আর অপ্রত্যাশিত অভিজ্ঞতা হলো। সেগুলো সামনে রেখে মনো হলো, সেলফ রেসপেক্ট অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ! অনেক টাকা বেতনের চাকরি ছেড়ে সংগ্রাম করে নিজের কাজটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটাই ঠিক মনে হলো।
এখানে ‘সেলফ মেড’ খুব বেশি নারীকে পাওয়ার পজিশনে পাবেন না। যেকোনো সেক্টরেই নারীর সংখ্যা কম। তবে এই সেক্টরে অনেক বেশি কম। এটা নিয়ে গবেষণা হওয়া দরকার। আমার দেখা অনেক মেধাবী নারীকে এই সেক্টর ছেড়ে দিতে বা চাকরি বদলাতে দেখছি শুধু বুলিং এবং কর্মপরিবেশ অনুকূলে না থাকার জন্য। মালিক পক্ষ থেকে শুরু করে এইচআর—সবার এই সমস্যাগুলো নিয়ে পর্যবেক্ষণ এবং সমাধান করা উচিত।

আফসানা ফেরদৌসী
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন
প্রথম আলো:

এর ভেতরেই আপনি নিজের শোগুলো করলেন?

এই ১২ বছরে আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি। গার্মেন্টস সেক্টরে চাকরি করে নিজের ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করা, শো করা সহজ নয়। ২০১৩ সালে প্রবর্তনার পরিচালক শামীম হোসেইন ফোন করে বললেন, লন্ডনে একটা ফ্যাশন শোর সুযোগ আছে। আমি পোর্টফোলিও জমা দিলাম। নির্বাচিত হলাম। জামদানি নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। সেই সময় শাড়িরে বাইরে জামদানি নিয়ে সেভাবে কাজ শুরু হয়নি। আমি জামদানি দিয়ে পুরোদস্তুর শীতের পোশাক বানাব বলে ঠিক করলাম। যেটা সচরাচর পরা যায়, আবার টেকসইও হয়। জ্যাকার্ড মেশিনেই হলো সেগুলো। ৭–১২ গেজের। মানে শীতের পোশাকের কিছু নির্দিষ্ট ওজন আছে। সেগুলো অনুসরণ করেই করা। সেটা ছিল আমার প্রথম একা ইউরোপ ট্যুর। লন্ডনের সাউথ ব্যাংক সেন্টারে আলকেমি ফেস্টিভ্যালে ১৪ দিন আমার কালেকশনগুলো ছিল। ওখানে আমার কাজ অনেক সমাদৃত হয়। কেননা নিজের দেশের ঐতিহ্য দিয়ে এভাবে গ্লোবালি (শীতপ্রধান দেশগুলোয়) পরার উপযোগী করে পোশাক বানানোটাকে সেখানকার মানুষ দারুণভাবে নিয়েছিল। এক নারী আমার একটা কালেকশন কেনার জন্য অনেক টাকা অফার করলেন। অনেক মানে অনেক। কিন্তু আমি বিক্রি করিনি। দেশের বাইরে আমার প্রথম সংগ্রহ। বিষয়টি আমার জন্য খুবই ইমোশনাল। আমার বিড়ালগুলো যেমন আমি কোনো কিছুর বিনিময়ে বিক্রি করব না, আমার ওই কাজগুলোও সে রকম। আমি রেখে দিয়েছি।

প্রথম আলো :

জামদানির সেই শীতপোশাকের সংগ্রহ নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী? মানে ভবিষ্যতে কী করবেন?

এই যে চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। এখন আমি সেগুলো বাণিজ্যিকভাবে বানানো শুরু করব। মানে বিক্রি করব। তবে সংখ্যা খুব বেশি হবে না। আশা করি, সামনের বছরেই আফসানা ফেরদৌসী লেবেলে পাওয়া যাবে।

মডেলের কানের দুল থেকে পায়ের জুতা— সবই বানান আফসানা
ছবি: সংগৃহীত

প্রথম আলো :

১২ বছর চাকরি করেও যে নিজের ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন, এটাই তো বড় কথা। আবার তো বিড়ালও পালেন। চাকরি করে, নিজের ফ্যাশন ব্র্যান্ডের কাজ করে ওদের সময় দেন কখন?

এটাও চাকরি ছাড়ার একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ। বলতে ভুলে গেছিলাম। আমার শুরুতে একটা বিড়াল ছিল। ফ্ল্যাফি। ও ৩টা বাচ্চা দিল। ইনা, মিনা, টিনা। এর ভেতর টিনা আবার একটু অদ্ভুত। আমি যত রাত করেই বাড়ি ফিরি না কেন, ওর একটা রুটিন আছে। আমার জন্য অপেক্ষা করবে। আমি এলে আমার পিছে পিছে ঘুরে বেড়াবে। তারপর আমি শুয়ে পড়লে আমার বুকের ওপর আরাম করে চুপচাপ শুয়ে থাকবে। কিছুক্ষণ এ রকম থেকে তারপর চলে যাবে। এটা ওর নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। হঠাৎ একদিন খেয়াল করলাম, টিনা আর আমার কাছে আসে না। তেমন একটা ভিড়তে চায় না। পৃথিবীর সমস্ত প্রাণ ভালোবাসা চায়, মনোযোগ চায়, যত্ন চায়। দেখলাম, আমি এত ব্যস্ত হয়ে পড়েছি আর এত ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরি যে ওকে সময় দেওয়ার সময়ও আর পাই না। এসে ওভাবেই ঘুমিয়ে পড়ি। তখন আমার মনে হলো, একটা বিড়ালের বাচ্চা যদি আমাকে ‘ত্যাগ’ করে, তাহলে আমার যখন সংসার হবে, বাচ্চা হবে, সেগুলো আমি কীভাবে সামলাব? ওই দিন, ওই মুহূর্তে আমি পাকাপাকি চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিই। চাকরি ছাড়ার অনেক কারণ ছিল। তবে এই চিন্তাটা আমাকে সেই সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছিল!  

টিনার সঙ্গে আফসানা
ছবি: ফেসবুক থেকে
প্রথম আলো:

কী ধরনের সমস্যা, একটা উদাহরণ দেবেন?  

অনেক সেক্টরের মতো এখানেও নারী পুরুষের প্রতি বৈষম্যটা আছে। নারীকে চাকরিতে নেওয়ার আগে বিয়ে, মাতৃকালীন সময় এগুলো বিবেচনা করা হয়। এছাড়া মনে করেন, একজন পুরুষ বস যদি কারও কাজকে হেয় করে, তাকে ছোট করে কথা বলে, তাতে ইগোতে লাগবে না। একজন নারী বস যত ভালো আচরণ–ই করুক না কেন, নারী বস হবে এটা মেনে নিতে অনেকের মধ্যে অনেক দোটানা কাজ করে। যে ছেলের চাকরি হয়েছে একটা নারীর অনুরোধে, মানবিক কারণে, সে–ই কিছুদিন পর (মেল ইগো থেকে) চায়ের আড্ডায় বলে, ‘আমার ডিজাইন বাদ দেয়! ও মেয়ে মানুষ, ডিজাইনের কী বোঝে!’

আর সত্যি বলতে অনেক সময় এরকম আচরণ শুধু পুরুষের মধ্যে না নারীদের মধ্যেও দেখা যায়।

প্রথম আলো :

এরপর কী হলো?

২০১৪ সালে আমি জার্মানির বার্লিনে যাই, ১৪ দিনের একটা কর্মশালায়। পরের বছর বার্লিনে আমার একটা সংগ্রহের প্রদর্শনী হয়।

প্রথম আলো :

টি-শার্ট নিয়ে?

হ্যাঁ, আমি সেগুলো ভ্যানের ওপর থেকে কিনেছিলাম। ৮০ টাকা করে অনেকগুলো কিনেছিলাম। তারপর সেগুলোর ওপর শিবুরি (জাপানি টাইডাই টেকনিক), ইন্ডিগো (রংপুরের টাইডাই) করি। যেখানে প্রতিবাদের অনেক ভাষা ছিল, যুদ্ধ বন্ধ করা থেকে শুরু করে গাছ বাঁচানো...আমার কালেকশন বার্লিনে আলোচিত, প্রশংসিত হয়।

আফসানা ফেরদৌসী
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

প্রথম আলো :

আপনার সব কালেকশনই কমবেশি মধ্যবিত্তের জন্য বিলাসিতা। মানে অনেকেই হুট করে কিনে ফেলতে পারবেন না। একটু সময় নিয়ে অর্থ জমিয়ে আপনার পোশাক কিনতে হবে। দামটা কি একটু বেশি না?

আমার কালেকশন দুই রকমের আছে। মধ্যবিত্তের হাতের নাগালেও আছে। ‘কাস্টম মেড’ সংগ্রহের রেঞ্জ একটু বেশি। আমার সেলাই যাঁরা করে, ওনাদের কিন্তু আমিই লম্বা সময় ধরে ট্রেনিং দিয়েছি। দেখুন, এগুলো তো ডিজাইনার্স কালেকশন। চার বা পাঁচ পিস হয়, কখনো একটাই করা হয়। একেকটা জ্যাকেট করতে আমার তিন থেকে চার দিন সময় লাগে, তারপর আছে সূচিশিল্প। তৈরি করতে সময় লাগে। আর এগুলো এক পিস অথবা হাতে গোনা কয়েক পিস। বেশির ভাগই কাস্টমাইজড করে দেওয়া। জিরো ওয়েস্ট, আপসাইকেলড বা রিসাইকেলড গার্মেন্টস। যেমন এই যে ওয়ান পিসটা (দেখিয়ে), ওটার দাম ৩ হাজার মতো। কেবল একটা টুকরো কাপড় দিয়ে তৈরি। আহামরি কোনো নকশা না, কাট না, কারুকাজ না। একদম প্লেইন আর সিম্পল। এগুলো অপসাইকেল্ড ইয়ার্ন (সুতা) থেকে তৈরি। এ জন্যই দেখেন, একেক সুতার একেক রং। কাপড় তৈরির পর যে সুতা বেঁচে যায়, সেই সুতাগুলো দিয়ে কাপড় বানিয়ে সেই কাপড়ে তৈরি। এই চার–পাঁচটাই আছে। আমি সাধারণত পোশাকে জিপার ব্যবহার করি না। আমাদের বোতামগুলো কাঠের বা নারকেলের মালার অথবা সি–শেলের বা ফল–ফুলের বীজ থেকে তৈরি। পরিবেশের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, এমনভাবে তৈরি। তাই ইন্ডাস্ট্রিয়ালি বা বাণিজ্যিকভাবে যেগুলো তৈরি হয়, সেসব ফাস্ট ফ্যাশনের সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। তবে আমরা চেষ্টা করছি, আমাদের রেডি ওয়্যার সেগমেন্টে পোশাকের পরিমাণ বাড়াতে। যেন সবাই নিতে পারে। তবে একদম কাস্টমাইজ পোশাকগুলো যাঁরা নেন, তাঁরা আর্ট বোঝেন, সমাদর করেন। তাঁদের একটি পোশাকের পেছনে আমরা অনেক সময় ব্যয় করি। দাম এই সবকিছু মিলিয়েই হয়।
আর একটা কথা বলতে চাই, যেহেতু আমাদের ব্র্যান্ড একটি সাসটেইনেবল ব্র্যান্ড, আমাদের কাজের পরিবেশ, কর্মীদের মজুরি, তাঁদের স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, এমনকি খাবারের মানের প্রতিও আমরা লক্ষ রাখি। আমি চাইলে খুব অল্প টাকা দিয়ে, নিম্নমানের পরিবেশে কাজ করতে পারতাম। যেখানে আমার কম খরচ হতো। পোশাকেরও কম খরচ হতো। আমাদের স্টুডিও দেখে আমাদের কাজের পরিবেশের কিছুটা ধারণা হয়তো আপনি পাবেন। একটা পণ্যের দাম সবকিছু মিলিয়েই আসে। তাই পৃথিবীর যেকোনো নিশ, কাস্টম মেড ব্র্যাডগুলোর প্রোডাক্টের দাম একটু বেশি হয়।

অবসরে বাঁশি বাজান এই শিল্পী
ছবি: ফেসবুক থেকে
প্রথম আলো:

ফ্যাশন ডিজাইন কাউন্সিল অব বাংলাদেশের সদস্য হলেন কবে?  

২০১৫ সালে।

প্রথম আলো :

আপনার ‘নদী বাঁচাও’ সংগ্রহটি কেন শুরু করলেন।

আমাদের দেশের নদীগুলোর নাম যে কী সুন্দর! নদীর নাম থেকে আমি অনেক পোশাকের নাম রেখেছি। আমরা যে সময়টুকু কুমিল্লায় ছিলাম, সেই সাড়ে তিন বছরের সবচেয়ে সুন্দর স্মৃতিগুলো গোমতী নদীর তীরে। আরও ছোটবেলায় ঢাকার বুড়িগঙ্গার তীরে আমার সুন্দর শৈশব কেটেছে। এখন নদীগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে খুব অসহায় লাগে। চিনতে পারি না। মনে হয় স্মৃতিগুলো অন্য জন্ম থেকে তাড়া করছে। নদীগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার সেই আকুতি থেকেই এই সংগ্রহ। আমার ওই পোশাকগুলোতে বিভিন্ন নদীর জলের রং...চেষ্টা করেছি প্রাকৃতিক ডাই ইন্ডিগো দিয়ে নদীর সৌন্দর্যকে তুলে ধরতে। নকশায় এসেছে মাছ আর মাছের নানা মোটিফ, নদী নিয়ে প্রিয় কবিতা, গান, ছড়া, বাক্য ইত্যাদি। আর নদী বাঁচানোর বার্তাগুলো তো ছিলই।

প্রথম আলো :

মাছের গয়নাও তো বানিয়েছিলেন?

আমি আমার প্রতিটা সংগ্রহের সঙ্গে দুল, গলার গয়না, হাতের গয়না, মাস্ক এমনকি জুতাও বানাই। গয়নাগুলো বেঁচে যাওয়া কাপড়, এটা-সেটা দিয়ে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে একই থিমে বানিয়ে ফেলি। পোশাকগুলো যখন বিক্রি হয়, অনেকে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে ওই পোশাকের গয়নাগুলোও কিনে নেন। তবে জুতাগুলো আমি বিক্রি করি না। কেননা ওগুলো খুব অল্প সময়ে তাড়াহুড়ো করে বানানো হয়। যথেষ্ট টেকসই হয় না। তাই সেগুলো বিক্রি করে মার্কেটে নিজের নাম খারাপ করতে চাই না। তবে আমার শোয়ের মডেলদের কখনো নিজের জুতা পরতে হয় না।

খাদির মঞ্চে আফসানার সংগ্রহ
ছবি: সংগৃহীত

প্রথম আলো :

সর্বশেষ ‘খাদি’তে তো আপনার সংগ্রহ নিয়ে বেশ আলাপ হলো। ফেব্রিকটাই অন্য রকম। মাশরুম, কোরালের মতো। এটাও কি কিছু চিন্তা করে করা?

ওইটা আমি আসলে করেছিলাম মেয়েদের পিরিয়ডের বিষয়টা ভেবে। এক রাতে ঘুম ভেঙে মনে হলো, পিরিয়ড হলে মেয়েদের যে ‘অশুচি’ বলে, এটা কি ঠিক? এটা করা যাবে না, সেটা করা যাবে না...অথচ পিরিয়ড থেকেই একটা মানবশিশুর জন্ম হয়। সেটাকে আমি কল্পনা করেছি মাশরুমের সঙ্গে। ছোট্ট মাশরুম দেখতে কত সুন্দর, নাদুসনুদুস হয়। মাশরুমের জন্মও স্যাঁতসেঁতে একটা পরিবেশে। আর পিরিয়ডের ব্যাপারটাও তা–ই।

প্রথম আলো:

ট্যাপা পুতুলের মুখের আদলের মাস্কগুলো কেন বানালেন?

যাতে মডেলকে দেখে কেউ বিচার না করে যে ও দেখতে এ রকম, গায়ের রং এ রকম, চোখটা এ রকম, নাকটা এ রকম, ও নারী, ও পুরুষ। আমি আসলে দিন শেষে একটা বৈষম্যহীন পৃথিবী চাই। যেখানে কেউ কাউকে লিঙ্গ, গায়ের রং, জাত কোনো কিছু দিয়ে বিচার করবে না। এ কারণে সবার চেহারা টেপা পুতুলের মুখোশে ঢেকে দেওয়া। টেপা পুতুল আফসানা ফেরদৌসী ব্র্যান্ডের এমন একটি সংগ্রহ, যা সারা বছর থাকে এবং আমরা মানুষকে সব সময় টেপা পুতুল দিয়ে তুলে আনি সূচিকর্মে। এবার মুখোশে নিয়ে আনলাম। মুখোশগুলো কিন্তু প্রথম আলো পত্রিকায় তৈরি। আপনি প্রথম আলোর বলে বলছি না, আমাদের বাসায় ছোটবেলা থেকেই প্রথম আলো রাখা হতো। অভ্যাসবশত আমি এখনো সেটা রাখি, পড়ি। বাসায় অনেক পত্রিকা জমে গিয়েছিল। সেগুলো দিয়েই তৈরি করা হয়েছে মুখোশগুলো।

নিজের কিছু সংগ্রহের সঙ্গে আফসানা
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

প্রথম আলো :

আপনি তো সম্প্রতি ভারত থেকে দুটি পুরস্কারও পেলেন, তাই না?

হ্যাঁ। একটি ইন্দো-বাংলা উইমেন্স বিজনেস কনক্লেভ ২০২৩ থেকে। অ্যাওয়ার্ডের নাম ‘মোস্ট প্রমিসিং সাসটেইনেবল ফ্যাশন ডিজাইনার’। আরেকটা হচ্ছে ওদের নবম ন্যাশনাল হ্যান্ডলুম ডেতে উত্তর প্রদেশ থেকে ‘হ্যান্ডলুম এক্সপার্ট, ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাশন ডিজাইনার’ হিসেবে।

প্রথম আলো :

ভারতের সঙ্গে কাজ করবেন?

দেখা যাক। মাত্র চাকরিটা ছাড়লাম। আগে একটু গুছিয়ে নিই। তবে শুধু ভারত নয়, আমি সারা বিশ্বের সঙ্গে কাজ করতে চাই। আর্থিকভাবে যথেষ্ট স্বাবলম্বী হলে নিজেই অনেক উদ্যোগ নিতাম অন্য দেশের সঙ্গে। এখন কোথাও ব্যাটে–বলে মিললে দেখা যাবে।

মাঝেমধ্যে থিয়েটারও করেন এই ফ্যাশন ডিজাইনার
ছবি: ওমর মুন্না

প্রথম আলো :

এরপর কী?

আমার অনেক প্রজেক্ট, যা আমি দ্বিতীয় পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারিনি, এখন ওগুলো নিয়ে কাজ শুরু করেছি, তা সামনে দেখবেন। কাজগুলোই কথা বলুক।

প্রথম আলো :

সামনে কোথায় যাচ্ছেন? কোনো ইভেন্ট আছে কি না...

বলা ঠিক হবে কি না, বুঝতে পারছি না। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ৬ থেকে ৯ মার্চ ‘কলম্বো ফ্যাশন উইক’-এ অংশ নেব।

৬ থেকে ৯ মার্চ ‘কলম্বো ফ্যাশন উইক’-এ অংশ নেবেন আফসানা
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন