কী হয় মেট গালায়
মেট গালা নিয়ে মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। কোন তারকা আসছেন, কী পোশাক পরছেন, তা নিয়ে যেমন আগ্রহ থাকে, তেমনই আগ্রহ থাকে অনুষ্ঠানের আয়োজন নিয়েও। মেট গালা কি সর্বসাধারণের জন্য খোলা? ঠিক কত টাকা খরচ করলে একেবারে কাছ থেকে দেখা মেলে স্বপ্নের তারকাদের? মেট গালা নিয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর থাকছে এখানে—
আগামীকাল ৭ মে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মেট্রোপোলিটন মিউজিয়াম অব আর্টে উঠবে মেট গালা ২০২৪-এর পর্দা। বাংলাদেশ সময় ভোর চারটায় শুরু হবে এর আনুষ্ঠানিকতা। প্রতিবছর এক দিন ফ্যাশনজগতের নামীদামি তারকারা হাজির হন এক ছাদের নিচে, ফ্যাশনের সবচেয়ে বড় শোতে একত্র হতে। ‘পার্টি অব দ্য ইয়ার’ কিংবা ‘ইস্ট কোস্টের অস্কার’—যে নামেই ডাকা হোক না কেন, এক রাতের জন্য পুরো দুনিয়ার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থাকে মেট গালার মঞ্চ।
প্রতিবছর মে মাসের প্রথম সোমবার, নিউইয়র্কের মিউজিয়াম অব আর্টে বসে মেট গালার আসর। ১৯৪৮ সালে মার্কিন ফ্যাশন প্রচারক এলেনর ল্যাম্বার্টের হাত ধরে শুরু হয় মেট গালার যাত্রা। শুরুতে মেট গালা ছিল ল্যাম্বার্টের বন্ধুবান্ধবদের জন্য একটি কস্টিউম পার্টি। মাত্র ৫০ ডলারে যে কেউ প্রবেশ করতে পারতেন এ অনুষ্ঠানে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে মেট গালার চিত্র। এ অনুষ্ঠানে প্রবেশমূল্য এখন ৭৫ হাজার ডলার, বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৮২ লাখ টাকা। অথচ গত বছরও এই টিকিটের মূল্য ছিল ৫০ হাজার ডলার।
মেট গালায় শুধু চেয়ার নয়, বিক্রি হয় টেবিলও। ১০ জনের একটি টেবিল এ বছর বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩ লাখ ডলারে! গত বছর শুধু টিকিট বিক্রি করেই মেট গালার আয় হয়েছিল ১ কোটি ২০ লাখ ডলার। তাই বলে ভাববেন না, সবাইকে দাম দিয়ে টিকিট কিনতে হয়। বেশির ভাগ তারকাই মেট গালায় ডাক পান বিখ্যাত কোনো ব্র্যান্ডের তরফ থেকে। বড় ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো মেট গালায় উচ্চমূল্যে টেবিল কিনে নেয়। সেই টেবিলের টিকিট দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয় নামীদামি তারকাদের। এ ছাড়া মেট গালার চেয়ারপারসন অ্যানা উইনটোর নিজে থেকে আমন্ত্রণ জানান কিছু তারকাকে। তাঁদের জন্যও মেট গালার মঞ্চ পুরোপুরি ফ্রি।
তবে টাকা থাকলেই যে মেট গালা আপানাকে দুহাতে বরণ করে নেবে, ব্যাপারটা তেমনও নয়। বরং প্রতিবছর মেট গালার প্রায় কয়েক মাস আগে চেয়ারপারসন নিজ হাতে অতিথিদের একটি তালিকা তৈরি করেন। সে তালিকা অনুযায়ী তারকারা আমন্ত্রণ পান অনুষ্ঠানে। অ্যানার অনুমতি ছাড়া কোনো তারকাকে আনার অনুমতি পায় না ব্র্যান্ডগুলোও। অর্থাৎ কোটি টাকা দিয়ে চেয়ার কেনার পরও নিজের পছন্দের অতিথিকে মেট গালার মঞ্চে নেওয়ার সুযোগ না-ও পেতে পারেন আপনি।
প্রতিবছর মেট গালার উদ্দেশে পোশাকের একটি থিম ঠিক করে দেন অনুষ্ঠানের চেয়ারপারসন। এ বছর মেট গালার থিম—‘স্লিপিং বিউটি: রিঅ্যাওয়েকেনিং ফ্যাশন’। এবার চেয়ারপারসন অ্যানা উইনটোরের সঙ্গে কো-চেয়ার হিসেবে থাকছেন হলিউড তারকা জেনিফার লোপেজ, ক্রিস হেমসওর্থ, জেনডায়া ও র্যাপার ব্যাড বানি।
মেট গালার লালগালিচা আলোকিত হয় তারকাদের আগমনে। দর্শক আর আলোকচিত্রীদের উপস্থিতি হয় দেখার মতো। কিন্তু সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশটা থাকে মূল দরজার অন্তরালে, মেট গালার ডিনার পার্টিতে। গোপনীয়তাও এ অনুষ্ঠানের আকর্ষণ বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। ২০১৫ সাল থেকে মেট গালার ভেতর মুঠোফোন নিয়ে প্রবেশ একেবারে নিষিদ্ধ। এ কারণে সেখানে ওই মুহূর্তে কী ঘটে, তা বলতে গেলে বাইরের কেউ জানতে পারে না। যদিও প্রতিবছর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কারও না কারও পোস্টে দেখা মেলে গালার ভেতরের চাকচিক্য।
তথ্যসূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস