দেখে নিন মাশা কী খেতে কী পরতে ভালোবাসেন
ইউটিউবে মাশা ইসলামের আট ভাষায় গাওয়া গান পাওয়া যায়। তাঁর হিন্দি ও ভারতীয় বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষার গান শুনে কেবল ভারতীয়রাই নন, অনেক বাংলাদেশিও মনে করেন, মাশা ভারতের নাগরিক। আবার তাঁর ইংরেজি গানগুলো শুনলে মনে হবে, দীর্ঘ সময় হয়তো বিদেশ-বিভুঁইয়ে ছিলেন। কেউ আবার স্প্যানিশ গান শুনে মনে করেন, মাশার বাবা অথবা মা হয়তো স্পেনের বাসিন্দা। মোটের ওপর তাঁর আট ভাষার গান শুনলেই মনে হবে, তিনি প্রতিটি ভাষায়ই সমান পারদর্শী। তাই মাশার ইনবক্সে অনেকেই প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কোন দেশের?’
‘টেকা পাখি’খ্যাত তরুণ এই বাংলাদেশি শিল্পীকে কাছ থেকে দেখলে কিন্তু আবার মনে হবে একেবারেই পাশের বাড়ির মেয়ে। ফ্যাশনে, স্টাইলে যাঁকে আরও অনেক বাঙালি শহুরে মেয়ের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা যায়। পছন্দের পোশাক বলতে লম্বা কুর্তি। আর উৎসবে, আয়োজনে শাড়ি। প্রায় ১০ বছর ছায়ানটে নজরুলগীতির তালিম নিয়েছেন। গান-ই ছিল তাঁর ধ্যানজ্ঞান, ছোটবেলা থেকেই ঈদের পোশাক নিয়ে বিশেষ মাথাব্যথা ছিল না। সেটা এখনো নেই। সারা বছর নানা উপলক্ষে উপহার পান, কেনাকাটাও চলতে থাকে। সেখান থেকেই পরে ফেলেন কোনো একটা। ঈদের দিন সন্ধ্যায় বা পরের দিন কোনো একটা আয়োজনে মাশার ওয়ার্ডরোব থেকে বের হয় নতুন শাড়ি। হালকা রঙের প্রতি একধরনের পক্ষপাতিত্ব আছে।
মেকআপ নিয়ে তেমন কোনো আদিখ্যেতা নেই। একেবারেই স্বাভাবিক লুকে দেখা দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। মুখটা ভালোভাবে ময়েশ্চারাইজড করেন, সানস্ক্রিন দিতেও ভোলেন না। মাশার বাড়াবাড়ি সাজ মানে ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক বা লিপবাম, চোখের ওপরের পাতায় কাজল, চুলগুলোকে আঁচড়ে নেওয়া—এই। দুই গালে মাঝেমধ্যে ব্লাশঅন ছোঁয়ান। সেটা একেবারেই মুডের ওপর নির্ভর করে।
লম্বা চুলের ভক্ত মাশা। লম্বা চুল খোঁপা করে রাখতে ভালোবাসেন। একসময় তাঁরও ছিল কোমরসমান চুল। লম্বা চুল তাঁর যত্নের জন্য যে সময় আর শ্রম দাবি করে, পেশাগত ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় সেটি এখন আর দিতে পারেন না। গরমও একটা বড় কারণ। তাই চুলের দৈর্ঘ্য কমেছে, যতটুকু রাখলে শাসনে রাখা যায়, এখন আছে ততটুকুই। মাশা বলেন, ‘আমি নিজেকে “গ্ল্যামারাস”দেখাতে চাই না। বরং পরিপাটি হয়ে থাকাটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কেবল পোশাকে বা লুকেই নয়, বরং জীবনাচরণে পরিপাটি ভাব বজায় রাখাটা জরুরি। স্বাস্থ্যকর ইতিবাচক জীবন যাপন করা, টাটকা খাবার খাওয়া, নিজের স্বাভাবিক সৌন্দর্যে আত্মবিশ্বাসী থাকাটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তবে হ্যাঁ, আমি প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বক আর চুলের যত্ন নিই।’
সুগন্ধির প্রতি একধরনের দুর্বলতা আছে। বিভিন্ন ধরনের সুগন্ধি, যেমন বুনো ফুলের, মসলার, কাঠের, খানিকটা মাটিঘেঁষা ঘ্রাণের সুগন্ধি আছে মাশার সংগ্রহে। তাই ঈদে যদি কেউ তাঁর প্রিয় সংগীত তারকা মাশাকে কোনো উপহার দিতে চান, জেনে গেলেন, কিসে তিনি সবচেয়ে বেশি খুশি হবেন!
মাশার জন্ম আর বেড়ে ওঠা ঢাকায়, তবে যতকাল দাদা-দাদি, নানা-নানি বেঁচে ছিলেন, দুই ঈদে ছুটে গেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। দল বেঁধে সবাই যেতেন ঈদগাহে। ফিরে এসে চলত সালামি আদায়। একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া, ঘুরে বেড়ানো। সেসব ছিল অন্য রকম আনন্দের দিন। এখন অনেকটা নীরবেই কেটে যায় মাশার ঈদ। তবে ঈদে কোমর বেঁধে রান্না করতে লেগে যান এই শিল্পী। তিনি নাকি ‘কঠিন বিরিয়ানি’ রান্না করেন। মাশার বন্ধুদের যদি জিজ্ঞেস করেন কোনটা মাশা ভালো পারে—বিরিয়ানি, নাকি গান—তাহলে তুমুল বিতর্ক লেগে যাবে। দিন শেষে সেই বিতর্কের কোনো সুরাহা হবে না। ঈদে বিরিয়ানি খাওয়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মাশা সালামিও দেন হাত খুলে। উপহার পেতে আর দিতে—দুই-ই ভালোবাসেন। ঈদে প্রিয় মানুষদের অনুরোধে গানের আসরের মধ্যমণি হয়ে যান। তখন বাঁ হাতে বাজতে থাকে গিটার, এদিকে মাশার সঙ্গে গলা মেলান অন্যরাও।